উত্তরাখণ্ডে ধর্ম স্বাধীনতা সংশোধনী বিল ২০২৫: অবৈধ ধর্মান্তরে কঠোর শাস্তি

উত্তরাখণ্ডে ধর্ম স্বাধীনতা সংশোধনী বিল ২০২৫: অবৈধ ধর্মান্তরে কঠোর শাস্তি

উত্তরাখণ্ড সরকার ধর্ম স্বাধীনতা (সংশোধন) বিল ২০২৫ অনুমোদন করেছে। এই আইনে অবৈধ ধর্মান্তরের উপর কঠোর শাস্তি, ডিজিটাল প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষার ব্যবস্থা রয়েছে।

Uttarakhand Cabinet: উত্তরাখণ্ড সরকার ধর্ম স্বাধীনতা (সংশোধন) বিল ২০২৫ অনুমোদন করেছে। এই আইনের অধীনে অবৈধ ধর্মান্তরের উপর কঠোর শাস্তি, ডিজিটাল মাধ্যমে প্রচারের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং ক্ষতিগ্রস্তদের সুরক্ষার ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ধর্মান্তর বিরোধী আইনে পরিবর্তন আনল ক্যাবিনেট

উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি নেতৃত্বাধীন সরকার ক্যাবিনেট বৈঠকে ধর্ম স্বাধীনতা (সংশোধন) বিল ২০২৫ অনুমোদন করেছে। এই আইনের উদ্দেশ্য হল অবৈধ ধর্মান্তর রোধ করা এবং নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার রক্ষা করা। নতুন আইনে ধর্মান্তরের জন্য প্রলোভনের বিস্তারিত সংজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে উপহার, নগদ বা অন্য কোনো সুবিধা, চাকরির প্রলোভন, বিনামূল্যে শিক্ষা, বিবাহের প্রতিশ্রুতি, ধর্মীয় বিশ্বাসে আঘাত করা বা অন্য কোনো ধর্মের গুণকীর্তন করা। এইগুলি সবই অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে এবং আইন লঙ্ঘন করলে কঠোর শাস্তির বিধান রয়েছে।

ডিজিটাল এবং সোশ্যাল মিডিয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ

ধর্মান্তরের জন্য সোশ্যাল মিডিয়া, মেসেজিং অ্যাপ এবং অন্যান্য ডিজিটাল মাধ্যম ব্যবহার করে প্রচার বা প্ররোচনা দেওয়াও এই আইনের অধীনে অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। আইন অনুযায়ী, সাধারণ লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ৩ থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে, সংবেদনশীল শ্রেণির সঙ্গে জড়িত মামলায় ৫ থেকে ১৪ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে এবং গুরুতর ক্ষেত্রে ২০ বছর থেকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ভারী জরিমানার বিধান রয়েছে। ডিজিটাল মাধ্যমের উপর নিয়ন্ত্রণ অবৈধ ধর্মান্তর রোধে সাহায্য করবে এবং নাগরিকদের জন্য একটি সুরক্ষিত পরিবেশ তৈরি করবে।

ধর্ম গোপন করে বিবাহের ক্ষেত্রে কঠোর ব্যবস্থা

ধর্ম গোপন করে বিবাহকারীদের বিরুদ্ধেও এই আইনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার বিধান রয়েছে। যদি কোনো ব্যক্তি ধর্ম গোপন করে বিবাহ করে এবং এর সুবিধা নেয়, তবে তাকে শাস্তি দেওয়া হবে। এর ফলে সমাজে প্রতারণা এবং ছলচাতুরি রোধ করা যাবে এবং বিবাহের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা যাবে। আইনের অধীনে এটি স্পষ্ট করা হয়েছে যে কোনো প্রকার প্রতারণা বা প্রলোভন অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে।

ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার এবং সুরক্ষার উপর জোর

নতুন বিলে ক্ষতিগ্রস্তদের অধিকার এবং সুরক্ষার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। এর মধ্যে পুনর্বাসন, চিকিৎসা সুবিধা, ভ্রমণের খরচ এবং ভরণপোষণের ব্যবস্থা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। এটি নিশ্চিত করবে যে ধর্মান্তরের শিকার ব্যক্তিরা যেন সুরক্ষিত থাকে এবং তারা ন্যায়বিচার ও সহায়তা পায়। রাজ্য সরকারের বক্তব্য, সমাজে ন্যায়বিচার ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য এই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি ছিল।

রাজ্য সরকারের বিবৃতি এবং ক্যাবিনেট বৈঠক

পুষ্কর সিং ধামির সরকার বিলটি অনুমোদন করে বলেছে যে এই আইন নাগরিকদের ধর্মীয় অধিকার সুরক্ষিত রাখবে এবং প্রতারণা, প্রলোভন বা চাপের মাধ্যমে ধর্মান্তরকরণ রোধ করবে। ক্যাবিনেট বৈঠকে মোট ২৬টি প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, যার মধ্যে ধর্মান্তর বিরোধী আইন সংশোধন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ছিল। বৈঠকে মোট ১৬টি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে এই বিলটিও অন্তর্ভুক্ত।

Leave a comment