ভিয়ান মুন্ডারের ঐতিহাসিক ট্রিপল সেঞ্চুরি: ভাঙলেন আমলার রেকর্ড

ভিয়ান মুন্ডারের ঐতিহাসিক ট্রিপল সেঞ্চুরি: ভাঙলেন আমলার রেকর্ড

জিম্বাবোয়ে এবং সাউথ আফ্রিকার মধ্যে চলমান দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে ভিয়ান মুल्डर এক ঐতিহাসিক ইনিংস খেলে সকলকে চমকে দিয়েছেন। মুন্ডার সোমবার ম্যাচের দ্বিতীয় দিনে মাত্র ২৯৭ বলে তার ট্রিপল সেঞ্চুরি (তিন শতরান) পূর্ণ করেন, যা টেস্ট ক্রিকেট ইতিহাসের দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরি।

ভিয়ান মুন্ডার ট্রিপল সেঞ্চুরি: সাউথ আফ্রিকার অলরাউন্ডার ভিয়ান মুন্ডার জিম্বাবোয়ের বিরুদ্ধে চলমান দ্বিতীয় টেস্ট ম্যাচে এমন ঐতিহাসিক কীর্তি গড়েছেন, যা বহু বছর ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। মুন্ডার অধিনায়ক হিসেবে তার প্রথম টেস্টেই ২৯৭ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়ে ক্রিকেট ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায় যোগ করেছেন। এই কৃতিত্ব অর্জনকারী তিনি বিশ্বের প্রথম অধিনায়ক।

আসলে, নিয়মিত অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা আহত হয়ে সিরিজ থেকে বাদ পড়েছিলেন, এরপর প্রথমে কেশব মহারাজকে দলের দায়িত্ব দেওয়া হয়। কিন্তু মহারাজও দ্বিতীয় টেস্টের আগে ফিটনেস সমস্যার কারণে সরে দাঁড়ান এবং তারপর মুন্ডারকে আকস্মিকভাবে অধিনায়কত্বের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তবে এই তরুণ খেলোয়াড় অধিনায়কত্বের চাপকে শক্তিতে পরিণত করে জিম্বাবোয়ের বোলারদের উপর রীতিমতো ঝড় তোলেন।

বীরেন্দ্র শেওয়াগের রেকর্ডের কাছাকাছি মুন্ডার

মুন্ডারের ট্রিপল সেঞ্চুরি টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরি। তিনি ২৯৭ বলে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন, যেখানে এখনো পর্যন্ত দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরির রেকর্ড ভারতের বীরেন্দ্র শেওয়াগের দখলে, যিনি ২০০৮ সালে সাউথ আফ্রিকার বিরুদ্ধেই ২৭৮ বলে এই কীর্তি গড়েছিলেন। মুন্ডার হ্যারি ব্রুককে পিছনে ফেলেছেন, যিনি গত বছর পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৩১০ বলে ট্রিপল সেঞ্চুরি হাঁকিয়েছিলেন। শেওয়াগের রেকর্ড মুন্ডারের থেকে খুব বেশি দূরে ছিল না, কিন্তু তবুও তিনি দ্বিতীয় দ্রুততম ট্রিপল সেঞ্চুরি হিসেবে নতুন ইতিহাস তৈরি করেছেন।

হাশিম আমলার রেকর্ড ভাঙলেন

ভিয়ান মুন্ডার এই ইনিংসে আরও একটি ঐতিহাসিক রেকর্ড নিজের নামে করেছেন। সাউথ আফ্রিকার হয়ে টেস্টে সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত ইনিংস খেলার রেকর্ডটি আগে হাশিম আমলার দখলে ছিল, যিনি ২০১২ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৩১১ রান করেছিলেন। মুন্ডার আমলার এই রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন এবং খবর লেখা পর্যন্ত তিনি ৩৬২ রানে অপরাজিত ছিলেন।

এখন ক্রিকেটপ্রেমীদের দৃষ্টি এই দিকে যে মুন্ডার ব্রায়ান লারার অপরাজিত ৪০০ রানের বিশ্ব রেকর্ডও ভাঙতে পারবেন কিনা। লারা ২০০৪ সালে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ৪০০ রান করে ইতিহাস গড়েছিলেন এবং মুন্ডারের খেলা দেখে মনে হচ্ছে, সুযোগ পেলে তিনি এই রেকর্ডকেও চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেন।

কীভাবে খেললেন ঐতিহাসিক ইনিংস?

মুন্ডারের এই शानदार ইনিংসের সবচেয়ে বড় বৈশিষ্ট্য ছিল তার ধৈর্য্য এবং স্ট্রাইক রোটেশন। তিনি শুরুতে নতুন বলকে সম্মান জানিয়েছিলেন, কিন্তু যখন বোলারদের ক্লান্ত দেখা যায়, তখন আক্রমণাত্মক রূপ ধারণ করেন। তার ইনিংসে ৩৮টি চার এবং ৫টি ছয় ছিল। মুন্ডার বিশেষভাবে জিম্বাবোয়ের স্পিনারদের নিশানা করেন, যাদের তিনি অনেকবার পায়ের ব্যবহার করে বাউন্ডারিতে পাঠিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে ব্যাটিং করা রাসি ভ্যান ডার ডুসেনও দারুণ সহযোগিতা করেন, যার ফলে সাউথ আফ্রিকার দল শক্তিশালী অবস্থানে পৌঁছেছে।

মুন্ডারের এই কীর্তির পর সাউথ আফ্রিকার ড্রেসিংরুমে উৎসবের আবহ তৈরি হয়েছে। কোচিং স্টাফও মুন্ডারের প্রশংসা করে বলেছেন যে, অধিনায়কত্বের চাপ সহ্য করে এত ঐতিহাসিক ইনিংস খেলা একজন চ্যাম্পিয়ন প্লেয়ারেরই পরিচয়। সাউথ আফ্রিকার দল এখন জিম্বাবোয়ের উপর আরও চাপ সৃষ্টি করবে, যাতে জয় নিশ্চিত করা যায়।

Leave a comment