উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচন হবে। এনডিএ-র সংখ্যাগরিষ্ঠতার সুবিধা রয়েছে, वहीं বিরোধী দলগুলি একটি শক্তিশালী প্রার্থী খোঁজার চেষ্টায় রয়েছে। ২১ অগাস্ট পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়া যাবে।
ভাইস প্রেসিডেন্ট ইলেকশন: দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়ে গিয়েছে। নির্বাচন কমিশন ৯ সেপ্টেম্বর নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করার পর বৃহস্পতিবার নোটিফিকেশন জারি করা হয়েছে, যার ফলে মনোনয়নের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।
মনোনয়ন এবং নির্বাচনের তারিখ
নির্বাচন কমিশন অনুসারে, মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২১ অগাস্ট। মনোনয়ন পত্রগুলি ২২ অগাস্ট তারিখে পরীক্ষা করা হবে, যেখানে ২৫ অগাস্ট পর্যন্ত যে কোনও প্রার্থী নিজের নাম প্রত্যাহার করতে পারবেন। এরপর ৯ সেপ্টেম্বর উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য ভোটগ্রহণ করা হবে।
ধনখড়ের ইস্তফায় পদটি খালি হয়েছে
২১ জুলাই তৎকালীন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কারণ দেখিয়ে হঠাৎ ইস্তফা দিয়েছিলেন। তাঁর কার্যকাল অগাস্ট ২০২৭ পর্যন্ত ছিল, কিন্তু ইস্তফার কারণে এই পদ সময়ের আগে খালি হয়ে যায়। ভারতের সংবিধান অনুসারে, যদি কোনও কারণে কার্যকালের মাঝে পদ খালি হয়, তাহলে নতুন উপরাষ্ট্রপতি পুরো পাঁচ বছরের কার্যকাল পান।
প্রার্থী হওয়ার জন্য কী যোগ্যতা প্রয়োজন
উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য প্রার্থীকে ভারতের নাগরিক হতে হবে এবং তাঁর বয়স কমপক্ষে ৩৫ বছর হতে হবে। এছাড়াও সেই ব্যক্তিকে রাজ্যসভার সদস্য হওয়ার যোগ্য হতে হবে। সরকার বা রাজ্য সরকারের অধীনে কোনো লাভজনক পদে থাকা ব্যক্তি এই পদের প্রার্থী হতে পারবেন না।
এনডিএ-র স্থিতিশীল অবস্থা
লোকসভা ও রাজ্যসভায় এনডিএ-র স্থিতিশীল অবস্থা বিবেচনা করে এটা স্পষ্ট যে, এবার এনডিএ-র প্রার্থী সহজেই নির্বাচনে জিততে পারবেন। লোকসভায় এনডিএ ৫৪২টির মধ্যে ২৯৩ জন সাংসদের সমর্থন পেয়েছে। রাজ্যসভাতেও ২৪০ জন কার্যকরী সদস্যের মধ্যে ১২৯ জনের সমর্থন এনডিএ-র কাছে রয়েছে। যদি মনোনীত সদস্যরাও এনডিএ-র পক্ষে ভোট দেন, তাহলে এনডিএ-র কাছে মোট ৪২২ জন ভোটারের সমর্থন রয়েছে।
জয়ের জন্য মোট ৩৯৪টি ভোটের প্রয়োজন। এমন পরিস্থিতিতে এটা স্পষ্ট যে এনডিএ-র জয় প্রায় নিশ্চিত বলেই মনে করা হচ্ছে।
ইন্ডিয়া ব্লকের রণনীতি
তবে, বিরোধী দলও পিছিয়ে নেই। বিরোধী দলগুলির জোট ইন্ডিয়া ব্লক এই নির্বাচনকে সম্মানের প্রশ্ন হিসেবে বিবেচনা করে একটি যৌথ প্রার্থী দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। বিরোধীদের কাছে পর্যাপ্ত সংখ্যা না থাকলেও, তারা একটি রাজনৈতিক বার্তা দেওয়ার চেষ্টা করছে।
বিরোধীরা এও অভিযোগ করছে যে, ধনখড় সরকারের চাপে ইস্তফা দিয়েছেন। এই ইস্যুকে রাজনৈতিক রং দিতে বিরোধী দল উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য একটি শক্তিশালী মুখ খুঁজছে। রাহুল গান্ধী আয়োজিত বৃহস্পতিবারের ডিনার বৈঠকে এই নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে।
এনডিএ-তে ঐক্যবদ্ধতার প্রদর্শন
এনডিএ-র পক্ষ থেকে শিবসেনা (শিন্ডে গোষ্ঠী) সর্বপ্রথম উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিঃশর্ত সমর্থনের ঘোষণা করেছে। একনাথ শিন্ডে বলেছেন যে, বিজেপি ও শিবসেনার অংশীদারিত্ব ঐতিহাসিক এবং মজবুত। এছাড়াও জেডিইউ ও টিডিপি-র মতো সহযোগী দলগুলিও নির্বাচন নিয়ে সক্রিয় এবং সমর্থন নিশ্চিত করেছে।
সম্প্রতি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, বিজেপি সভাপতি জেপি নাড্ডা এবং অন্যান্য প্রধান নেতাদের মধ্যে একটি বৈঠক হয়েছে, যেখানে উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন সহ আসন্ন রাজ্যগুলির বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। এনডিএ শীঘ্রই তাদের প্রার্থীর নাম ঘোষণা করতে পারে।
নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং ভোটিংয়ের বিবরণ
উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন লোকসভা ও রাজ্যসভার সদস্যরা করে থাকেন। এইবার মোট কার্যকরী সংখ্যা ৭৮৬, যার মধ্যে ৩৯৪টি ভোটের প্রয়োজন হবে। লোকসভার শুধুমাত্র বসিরহাট আসনটি খালি রয়েছে এবং রাজ্যসভার পাঁচটি আসন শূন্য রয়েছে, যার মধ্যে চারটি জম্মু-কাশ্মীর এবং একটি পাঞ্জাবের। যদি সকল যোগ্য সদস্য ভোট দেন, তাহলে সংখ্যাগরিষ্ঠের সংখ্যা হবে ৩৯৪।
রাজ্যসভার পাঞ্জাবের আসনটি আম আদমি পার্টির সঞ্জীব অরোরা-র ইস্তফার কারণে খালি হয়েছে, যিনি রাজ্য বিধানসভার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পরে এই পদ ছেড়েছিলেন।
উপরাষ্ট্রপতির ভূমিকা এবং কার্যকাল
উপরাষ্ট্রপতি হলেন দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদ। তিনি রাজ্যসভার পদাধিকারবলে সভাপতিও হন। কার্যকাল পাঁচ বছর, তবে কার্যকাল শেষ হওয়ার পরেও নতুন উপরাষ্ট্রপতি শপথ না নেওয়া পর্যন্ত তিনি পদে বহাল থাকেন। উপরাষ্ট্রপতির পদ অনেক সময় জাতীয় রাজনীতিতে ভারসাম্য বজায় রাখার কাজ করে।