Weight Loss Tips: দুর্গাপুজো শেষে উৎসবের হুল্লোড়ে খাওয়াদাওয়ার ভারে শরীর কিছুটা ভারী হয়ে পড়েছে? এখনই সময় নিজেকে ফিট রাখার উদ্যোগ নেওয়ার। ডাক্তার ও ফিটনেস বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিদিনের রুটিনে মাত্র তিনটি অভ্যাস আনলেই এক মাসে ৩ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। শুধু ডায়েট নয়, ব্যায়াম ও হাইড্রেশনও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার মূল চাবিকাঠি।
প্রোটিন-ভিত্তিক নাস্তায় দিন শুরু করুন
দিনের প্রথম খাবারেই ওজন নিয়ন্ত্রণের মূল রহস্য লুকিয়ে। প্রোটিন-সমৃদ্ধ ব্রেকফাস্ট দীর্ঘ সময় পেট ভরা রাখে, ফলে সারা দিনে অপ্রয়োজনীয় খাবার খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়।ডিম, গ্রিক দই, বাদাম দুধ বা ফলের সঙ্গে প্রোটিন পাউডার মিশিয়ে ব্রেকফাস্ট করলে বিপাকীয় হার (Metabolism) বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, সকালে প্রোটিন খেলে শরীরের চর্বি দ্রুত ভাঙে এবং রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে। এতে মিষ্টি বা ভাজাভুজির প্রতি আকর্ষণও কমে যায়।
দিনে অন্তত ৮ গ্লাস জল পান করুন
ওজন কমাতে জল এক অনন্য সহায়ক। নিয়মিত পর্যাপ্ত জলপান করলে শরীরের মেটাবলিজম বাড়ে, ফলে ক্যালোরি পোড়ার হারও বৃদ্ধি পায়। খাবারের আগে এক গ্লাস জল পান করলে ক্ষুধা কম লাগে, অতিরিক্ত খাওয়ার সম্ভাবনাও হ্রাস পায়।বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ, দিনে কমপক্ষে ৮ গ্লাস জল পান করা উচিত। চিনিযুক্ত পানীয় বাদ দিয়ে শুধুমাত্র জল পান করলে শরীরের টক্সিন বেরিয়ে যায়, হজমশক্তি বাড়ে এবং ফ্যাট কমানোর প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। জলপান অভ্যাসে রাখলে শরীর আরও সতেজ থাকে এবং ক্লান্তি কমে।
ব্যায়ামেই লুকিয়ে স্বাস্থ্য ও ফিটনেসের রহস্য
ওজন কমাতে সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হল নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ। প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিটের ব্যায়ামও যথেষ্ট ফল দিতে পারে। হাঁটা, সাইকেল চালানো, যোগব্যায়াম কিংবা ঘরে বসে জাম্পিং জ্যাক—সবই শরীরের অতিরিক্ত ফ্যাট কমাতে সাহায্য করে।বিশেষজ্ঞরা বলেন, সকালের ব্যায়াম সারা দিনের রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং ক্ষুধা কমায়। তাই দীর্ঘ সময়ের জিম সেশনের দরকার নেই—ছোট ছোট এক্সারসাইজ রুটিনও সমান কার্যকর। মূল কথা, এমন ব্যায়াম বেছে নিন যা করতে আনন্দ লাগে, তাহলেই নিয়ম মেনে চালিয়ে যাওয়া সহজ হবে।
মনোযোগ দিয়ে খান, টিভি নয়!
মনোযোগহীনভাবে খাওয়া (Mindless Eating) ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ। টিভি দেখতে দেখতে বা ফোনে স্ক্রল করতে করতে খাওয়ার সময় আমরা শরীরের ক্ষুধা ও তৃপ্তির সংকেত বুঝতে পারি না, ফলে অতিরিক্ত খাওয়া হয়।মনোযোগী খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুললে শরীরের প্রয়োজনীয় খাবার মাত্রাটুকুই খাওয়া হয়, ফলে ক্যালোরি নিয়ন্ত্রণে থাকে। ছোট প্লেটে খাবার পরিবেশন করা, ধীরে ধীরে খাওয়া এবং খাবার সময় অন্য কাজ না করা—এই ছোট অভ্যাসগুলোই ওজন কমাতে বড় ভূমিকা রাখে।
পর্যাপ্ত ঘুম—ওজন কমানোর লুকোনো অস্ত্র
ওজন কমাতে ঘুমও সমান গুরুত্বপূর্ণ। অপর্যাপ্ত ঘুম শরীরে কর্টিসল নামক হরমোনের মাত্রা বাড়ায়, যা স্ট্রেস ও ক্ষুধা দুটোই বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরি গ্রহণ হয়।বিশেষজ্ঞরা বলেন, প্রতি রাতে অন্তত ৭ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম জরুরি। যোগব্যায়াম, মেডিটেশন বা গভীর শ্বাস-প্রশ্বাসের অনুশীলন ঘুমের মান উন্নত করে, ফলে শরীরের ফ্যাট জমা কমে যায়। স্ট্রেস কমলে আবেগতাড়িত খাওয়ার প্রবণতাও হ্রাস পায়।
উৎসবের মরশুমে বেলাগাম খাওয়াদাওয়ার পর এখন চিন্তা ওজন বাড়ার! বিশেষজ্ঞদের মতে, খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় সামান্য পরিবর্তন আনলেই এক মাসে ৩ কেজি পর্যন্ত ওজন কমানো সম্ভব। প্রোটিন-ভিত্তিক জলখাবার, পর্যাপ্ত জলপান ও নিয়মিত ব্যায়াম—এই তিন অভ্যাসই হতে পারে আপনার ফিটনেসের নতুন মন্ত্র।