মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ পুরুষদের থেকে ভিন্ন হতে পারে। শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, পিঠ বা চোয়ালে ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে। ৪০ বছর বয়সের পর মহিলাদের স্বাস্থ্যকর খাবার, নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম এবং মানসিক চাপ কমানোর উপর মনোযোগ দেওয়া উচিত, যা হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে পারে।
হার্ট অ্যাটাক: দ্রুত পরিবর্তনশীল জীবনধারা, ক্রমবর্ধমান মানসিক চাপ এবং অনিয়মিত খাদ্যাভ্যাসের কারণে মহিলাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা দ্রুত বাড়ছে। বিশেষ করে ৪০ বছর বয়সের পর হরমোনের পরিবর্তন এবং শারীরিক পরিবর্তন ঝুঁকি বাড়ায়। মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ পুরুষদের থেকে ভিন্ন হতে পারে, যেমন শ্বাসকষ্ট, বমি বমি ভাব, পিঠ বা চোয়ালে ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং অতিরিক্ত ক্লান্তি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সময়মতো এই লক্ষণগুলো চিনে স্বাস্থ্যকর জীবনধারা গ্রহণ করা অত্যন্ত জরুরি।
মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের সাধারণ লক্ষণ
মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ পুরুষদের তুলনায় ভিন্ন হতে পারে। সাধারণত মহিলাদের মধ্যে প্রথমে শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। এর সাথে প্রায়শই বমি বমি ভাব এবং বমি হওয়ার অভিযোগ থাকে। অনেক সময় পিঠ বা চোয়ালে ব্যথা, মাথা ঘোরা এবং বুকের নীচের অংশে বা উপরের পেটে হালকা বা তীব্র ব্যথাও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ হতে পারে। অতিরিক্ত ক্লান্তিও এর প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে মহিলাদের মধ্যে এই লক্ষণগুলি প্রায়শই সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যা হিসাবে উপেক্ষা করা হয়। ফলে সময়মতো চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতি গুরুতর হতে পারে।
বার্ধক্যে ঝুঁকি
৪০ বছর বয়সের আশেপাশে মহিলাদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি দ্রুত বেড়ে যায়। হরমোনের পরিবর্তন, মেনোপজ এবং বার্ধক্যের সাথে সাথে শারীরিক পরিবর্তন মহিলাদের মধ্যে হার্ট-সম্পর্কিত রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ৩৫-৪০ বছর বয়সের পর মহিলাদের জন্য তাদের শারীরিক এবং মানসিক স্বাস্থ্যের উপর মনোযোগ দেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে।
জীবনযাত্রায় পরিবর্তন জরুরি
বিশেষজ্ঞদের মতে, হার্ট অ্যাটাক এড়াতে জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আনা অপরিহার্য। মহিলাদের সুষম এবং পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত। তাজা ফল ও সবজি, কম তেলযুক্ত খাবার এবং জাঙ্ক ফুড এড়িয়ে চলা উপকারী।
নিয়মিত ব্যায়াম এবং হালকা হাঁটাচলা হার্টের কার্যকারিতা জোরদার করে। ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকিও কমে। মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ। যোগব্যায়াম এবং ধ্যান স্ট্রেস কমায় এবং হার্টের উপর চাপ কমাতে সাহায্য করে।
পর্যাপ্ত ঘুম হার্টের স্বাস্থ্যের জন্যও অপরিহার্য। বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে কমপক্ষে ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা ঘুম হার্টের জন্য উপকারী।
খাবার এবং ব্যায়ামের গুরুত্ব
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমাতে মহিলাদের স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করা উচিত। কম লবণ এবং কম তেলযুক্ত খাবার, সবুজ শাকসবজি, ফল এবং পর্যাপ্ত জল পান করা জরুরি। নিয়মিত ব্যায়াম রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরল নিয়ন্ত্রণে রাখে।
স্ট্রেস কমাতে মহিলাদের প্রতিদিন ধ্যান এবং হালকা শারীরিক কার্যকলাপ করা উচিত। এটি হার্টকে শক্তিশালী করে এবং হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি কমায়।
প্রাথমিক লক্ষণগুলিকে উপেক্ষা করা বিপজ্জনক
মহিলাদের হার্ট অ্যাটাকের প্রাথমিক লক্ষণগুলি প্রায়শই উপেক্ষা করা হয়। শ্বাসকষ্ট, হালকা ব্যথা, ক্লান্তি এবং বমি বমি ভাবের মতো অভিযোগগুলিকে সাধারণ ভেবে লোকেরা ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে না। এর ফলে সময়মতো চিকিৎসা না পেলে পরিস্থিতি গুরুতর হতে পারে।
বিশেষজ্ঞরা বলেন যে ৪০ বছর বয়সের পর প্রত্যেক মহিলার উচিত তাদের শরীরের যেকোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তনে গুরুত্ব দেওয়া। সময়মতো হার্টের পরীক্ষা করালে গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।