পাটনার দিদারগঞ্জ থানা এলাকায় প্রেমের সম্পর্কের জেরে এক যুবককে খুন করা হয়েছে। অভিযুক্তরা বোনের প্রেমিককে ফতেহপুর বাঁধের কাছে ডেকে নিয়ে নির্মমভাবে হত্যা করে। পুলিশ ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঘটনার কিনারা করে পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করেছে।
Patna Crime News: বিহারের রাজধানী পাটনায় একটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড উদঘাটিত হয়েছে। সোমবার (১৮ আগস্ট, ২০২৫) দিদারগঞ্জ থানা এলাকার ফতেহপুর বাঁধের কাছে ৩০ বছর বয়সী ই-রিকশা চালক মহম্মদ শাহজাদের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। তার চোখ উপড়ে ফেলা হয়েছিল এবং গলা কাটা হয়েছিল। তদন্তে জানা যায়, দুই ভাই তাদের বোনের প্রেমের সম্পর্কের কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে বন্ধুদের সঙ্গে মিলে এই ঘটনা ঘটায়। মঙ্গলবার পুলিশ পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে এবং হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র উদ্ধার করে।
জন্মদিনের পার্টির অজুহাতে ডেকে এনে খুন
পুলিশের তদন্তে জানা যায় যে, মৃত মহম্মদ শাহজাদ, যিনি পেশায় ই-রিকশা চালক ছিলেন, তার সঙ্গে হাজীগঞ্জের দুই ভাইয়ের বোনের সম্পর্ক ছিল। দুই ভাই – সুমিত কুমার এবং সুজিত কুমার – এই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি। প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের কাছ থেকে কটু কথা শুনে তারা তাদের তিন বন্ধুকে নিয়ে শাহজাদকে হত্যার পরিকল্পনা করে।
পরিকল্পনা অনুযায়ী, অভিযুক্তরা শাহজাদের ই-রিকশা একটি কথিত জন্মদিনের পার্টির জন্য ভাড়া করে। রাতে তাকে কৌশলে ফতেহপুর বাঁধের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে ধারালো অস্ত্র দিয়ে তাকে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ ছেনি, সালাই রেঞ্চ ও অন্যান্য অস্ত্র উদ্ধার করেছে।
ভালোবাসার সম্পর্কই হল খুনের কারণ
জিজ্ঞাসাবাদে অভিযুক্তরা স্বীকার করেছে যে, মৃত শাহজাদের সঙ্গে সুমিত ও সুজিতের বোনের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সে প্রায়ই ই-রিকশা নিয়ে তাদের বাড়ির পাশ দিয়ে যেত। ধীরে ধীরে এই সম্পর্ক প্রতিবেশী ও আত্মীয়দের মধ্যে আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়।
মানুষের কটু কথা ও সামাজিক চাপের মুখে পড়ে দুই ভাই এই সম্পর্ক শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। অবশেষে বন্ধুদের সহায়তায় শাহজাদকে খুন করা হয়। পুলিশের মতে, এটি স্পষ্টতই একটি অনার কিলিং-এর ঘটনা।
এলাকায় আতঙ্কের পরিবেশ
ফতেহপুর ও মাধোপুর গ্রামের লোকেরা পুকুরের কাছে যুবকের লাশ দেখে হতবাক হয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবরটি পুরো এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং মানুষ আতঙ্কিত ও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। গ্রামবাসীদের মতে, এটি "অনার কিলিং"-এর ঘটনা, যা সমাজের জন্য খুবই বিপজ্জনক এবং ভুল ধারণা।
পুলিশের পদক্ষেপ ও পরবর্তী তদন্ত
পুলিশ পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করে, পরে তাদের কারাগারে পাঠানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সবাই খুনের কথা স্বীকার করেছে। পুলিশের দাবি, অভিযুক্তরা মিলেমিশে পরিকল্পনা করে এই ঘটনা ঘটিয়েছে।
পুলিশ এখন গভীরভাবে তদন্ত করছে। হত্যার পরিকল্পনায় আর কেউ জড়িত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পাশাপাশি, অভিযুক্তদের পুরনো অপরাধের রেকর্ডও খতিয়ে দেখছে পুলিশ, যাতে তাদের অপরাধের ইতিহাস সম্পর্কে বিস্তারিত জানা যায়।