রাজনৈতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা
১০০ দিনের কাজ ও আবাস যোজনার বরাদ্দ নিয়ে ফের তীব্র তরজা শুরু হয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে। তৃণমূল সাংসদ রচনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের জবাবে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক সাফ জানিয়ে দিল, চলতি অর্থবর্ষে এখনও পর্যন্ত এক টাকাও রিলিজ করা হয়নি। এর ফলে রাজ্যের উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে স্থবিরতা দেখা দিয়েছে, যা নিয়ে নবান্ন ও দিল্লির সম্পর্ক আরও তিক্ত হচ্ছে।
মনিটরিং টিমের অসন্তোষ
গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের জাতীয় পর্যায়ের মনিটরিং টিমের সিনিয়র অফিসাররা রাজ্যের পদক্ষেপে সন্তুষ্ট নন বলেই খবর। তাঁদের রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, প্রকল্প বাস্তবায়ন ও হিসাবনিকাশে একাধিক অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। এর জেরেই অর্থমন্ত্রক বরাদ্দ রিলিজে বিরতি দিয়েছে। তৃণমূল শিবিরে অবশ্য অভিযোগ, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কেন্দ্র রাজ্যের প্রাপ্য আটকে রাখছে।
দীর্ঘদিনের টাকা বন্ধ, কেন্দ্রের যুক্তি স্পষ্ট
২০২২ সালের ৯ মার্চ থেকেই মনরেগার টাকা বন্ধ রেখেছে কেন্দ্র। আবাস যোজনার বরাদ্দও ২০২২-২৩ অর্থবর্ষ থেকে আর দেওয়া হয়নি। অর্থমন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরি সংসদে জানিয়েছেন, রাজ্যের পাঠানো অ্যাকশন টেকেন রিপোর্ট (ATR) যাচাই চলছে। এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই টাকা মঞ্জুর করা হবে, তাই বিলম্ব স্বাভাবিক।
শীতকালীন অধিবেশনের প্রতিশ্রুতি এখনো অপূর্ণ
গত শীতকালীন অধিবেশনে নির্মলা সীতারমন জানিয়েছিলেন, রাজ্যের পাঠানো রিপোর্ট যথাযথ যাচাই না হওয়া পর্যন্ত বরাদ্দের টাকা রিলিজ হবে না। নবান্ন তখন আশা করেছিল, কয়েক মাসের মধ্যেই সমস্যার সমাধান হবে। কিন্তু এখনো সেই প্রতিশ্রুতি কার্যকর হয়নি, যা নিয়ে রাজ্য সরকারের ক্ষোভ চরমে উঠেছে।
হাইকোর্ট নির্দেশের পরও অনিশ্চয়তা
হাইকোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী ১০০ দিনের কাজ ফের শুরু করতে হবে। তবে কেন্দ্রের তরফে এখনো জানানো হয়েছে, আদালতকে বিস্তারিত রিপোর্ট দেওয়া হবে। এর ফলে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে অনিশ্চয়তা আরও বেড়েছে। গ্রামীণ কর্মীরা আশঙ্কায়, বরাদ্দ বন্ধ থাকলে কর্মসংস্থানের সংকট বাড়বে।
রাজনৈতিক বারুদে ঘি ঢালল নতুন সংঘাত
রাজনৈতিক মহলে বিশ্লেষণ—এই বিরোধ ২০২৬ বিধানসভা নির্বাচনের আগে কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ককে আরও জটিল করে তুলবে। তৃণমূল এটিকে জনবিরোধী সিদ্ধান্ত বলে প্রচার করবে, আর বিজেপি রাজ্যের ‘দুর্নীতি’ ও ‘অপচয়’কে ইস্যু করবে। এর মধ্যেই প্রকল্পের জন্য অপেক্ষায় দিন গুনছেন রাজ্যের হাজারো শ্রমিক ও গৃহহীন পরিবার।