১১ মুখী রুদ্রাক্ষ ভগবান হনুমানের প্রতীক এবং এটি ধারণ করলে আত্মবিশ্বাস, বুদ্ধিমত্তা, শারীরিক শক্তি এবং নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ে। এটি প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সুরক্ষা, স্বাস্থ্য সুবিধা এবং সুখ-সমৃদ্ধি দেয়। এটি ধারণ করলে ধার্মিক আচার-অনুষ্ঠান, যোগ এবং মন্ত্র সাধনাতেও সাহায্য পাওয়া যায়।
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ ভগবান হনুমানের সঙ্গে যুক্ত এবং এটি বিশেষ শ্রদ্ধা ও নিয়ম মেনে ধারণ করতে হয়। জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে মেষ ও বৃশ্চিক রাশির জাতক এবং যাদের কুন্ডলীতে মঙ্গল দুর্বল, তারা এটি ধারণ করতে পারে। এই রুদ্রাক্ষ আত্মবিশ্বাস, বুদ্ধিমত্তা, শারীরিক শক্তি, স্বাস্থ্য সুবিধা এবং প্রতিকূল পরিস্থিতিতে সুরক্ষা প্রদান করে। এটিকে লাল সুতো বা মালায় পরে মন্ত্র জপ ও পূজার পর ধারণ করা উচিত।
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ কী
১১ মুখী রুদ্রাক্ষকে একাদশমুখীও বলা হয়। এর দানাতে ১১টি রেখা বা দাগ থাকে। এই রুদ্রাক্ষ ভগবান শিবের একাদশ অবতার হনুমানজির প্রতীক রূপে মানা হয়। শাস্ত্র অনুযায়ী, এর মধ্যে এগারোটি রুদ্রের শক্তি বিদ্যমান থাকে। রুদ্র সংহিতায় বর্ণিত আছে যে, কশ্যপ মুনি দেবতাদের রক্ষা করার জন্য ভগবান শিবের কঠোর তপস্যা করেছিলেন। শিবজি তার সামনে আবির্ভূত হয়ে এগারোটি রুদ্রের আশীর্বাদ দেন। পরে এই এগারো রুদ্র দানবদের পরাস্ত করে দেবতাদের রক্ষা করেছিলেন।
কে ধারণ করতে পারে ১১ মুখী রুদ্রাক্ষ
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করার আগে কুন্ডলী দেখা আবশ্যক বলে মনে করা হয়। জ্যোতিষাচার্য-এর মতে কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে এটি ধারণ করা উচিত নয়। সাধারণত মেষ ও বৃশ্চিক রাশির লোকেরা এটি পরতে পারে। যাদের কুন্ডলীতে মঙ্গল দুর্বল, তারাও এর থেকে লাভ পেতে পারে। এছাড়াও স্বাস্থ্য বা জীবনে আসা বিশেষ সমস্যাতেও এই রুদ্রাক্ষ উপকারী।
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ থেকে পাওয়া যায় যে লাভ
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ পরলে ব্যক্তির মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং সাহস বাড়ে। এটি বুদ্ধি ও শারীরিক শক্তিকে মজবুত করে। বাণীতে প্রভাবশীলতা আসে এবং সন্ধি-বিবাদ বা গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করে। এর সঙ্গে ইন্দ্রিয়ের উপর নিয়ন্ত্রণ পেতেও এই রুদ্রাক্ষ সহায়ক হয়।
এই রুদ্রাক্ষ ভাগ্যকে মজবুত করে এবং নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা বাড়ায়। ঘরে বা গলায় এটি রাখলে সুখ-সমৃদ্ধি আসে এবং কাজ সহজে সম্পন্ন হয়। শাস্ত্রে বলা হয়েছে যে, এটি পরিধানকারী রাজার মতো সুখ ও সম্মান লাভ করে। যাদের মাথা ব্যথা, মাথা ঘোরা, স্মৃতিশক্তি দুর্বল হওয়া বা ক্রমাগত সর্দির সমস্যা থাকে, তাদেরও ১১ মুখী রুদ্রাক্ষ লাভ দেয়।
স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সুবিধাও এর বিশেষত্ব। হৃদয়, সুগার, উচ্চ রক্তচাপ, পেট এবং লিভার সংক্রান্ত রোগ থেকে এটি সুরক্ষা প্রদান করে। যাদের খারাপ কিছু হওয়ার আশঙ্কা থাকে বা একা থাকতে ভয় লাগে, তারা এটি সুতোয় গেঁথে গলায় পরতে পারে।
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ কীভাবে ধারণ করবেন
১১ মুখী রুদ্রাক্ষ ধারণ করার জন্য লাল সুতো ব্যবহার করা হয়। এটি পরার আগে এর বিধি-पूर्वक পূজা করতে হয়। রুদ্রাক্ষকে গঙ্গাজল দিয়ে স্নান করিয়ে দীপ, ধূপ ও চন্দন দিয়ে সাজান। সাদা ফুল অর্পণ করার পর শিবলিঙ্গ বা শিব মূর্তির স্পর্শ করিয়ে রুদ্রাক্ষকে পবিত্র করুন। এরপর পঞ্চাক্ষরী মন্ত্র “ওঁ নমঃ শিবায়” ১১ বার জপ করুন।
শিব পুরাণ এবং পদ্মপুরাণে ১১ মুখী রুদ্রাক্ষের উপর মন্ত্র জপ করারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্রের জপও এটিকে সিদ্ধ করার জন্য ব্যবহার করা হয়। মন্ত্রের সাধনার পর এই রুদ্রাক্ষ তার সম্পূর্ণ ফল দিতে শুরু করে।