রাজস্থানের উদয়পুরে ৫৫ বছর বয়সী রেখা গালবেলিয়া ১৭তম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। পরিবারটি দারিদ্র্য, ঋণ এবং গৃহহীনতার সঙ্গে লড়ছে। স্বামী পুরনো জিনিসপত্র কুড়িয়ে সংসার চালান, বাচ্চাদের শিক্ষাব্যবস্থা প্রভাবিত এবং জীবন কঠিনতায় পরিপূর্ণ।
উদয়পুর: রাজস্থানের উদয়পুর জেলায় মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) ৫৫ বছর বয়সী রেখা গালবেলিয়া তাঁর ১৭তম সন্তানের জন্ম দিয়েছেন। রেখা এ পর্যন্ত ১৬টি সন্তানের মা, যাদের মধ্যে ৪ ছেলে ও ১ মেয়ে জন্মের পরপরই মারা গেছে। পরিবারটি আগে থেকেই দারিদ্র্য, ঋণ এবং গৃহহীনতার মতো কঠিন পরিস্থিতির সঙ্গে লড়ছে। স্বামী কানওয়ারা কালবেলিয়া পুরনো জিনিসপত্র কুড়িয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করছেন।
পরিবারে বেশ কয়েকজন সন্তান জীবিত আছে, যাদের মধ্যে পাঁচজনের বিয়ে হয়ে গেছে এবং তাদেরও সন্তান রয়েছে। রেখার পরিবারের এই কঠিন পরিস্থিতি স্থানীয় লোকজন ও প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
রেখা গালবেলিয়ার পরিবারের সমস্যা
রেখার মেয়ে শীলা কালবেলিয়ার বক্তব্য, এত বড় পরিবার হওয়ার কারণে তাঁদের সবসময়ই সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে। শীলা জানান, “যখন লোকেরা জানতে পারে যে আমাদের মায়ের এতগুলো সন্তান রয়েছে, তখন সবাই অবাক হয়ে যায়। আমাদের প্রতিদিনের জীবনে পদে পদে সংগ্রাম করতে হয়।”
কানওয়ারা কালবেলিয়া জানান, সংসার চালানোর জন্য তাঁকে মহাজনদের কাছ থেকে ২০ শতাংশ সুদে ঋণ নিতে হয়েছে। তিনি বলেন, “আমরা লক্ষ লক্ষ টাকা পরিশোধ করেছি, কিন্তু এখনও সুদ পুরোপুরি মেটানো যায়নি। বাচ্চাদের পেট ভরানো কঠিন হয়ে পড়েছে।”
পরিবারের নিজস্ব বাড়ি নেই
পরিবারের নিজস্ব কোনো বাড়ি নেই। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে একটি বাড়ি মঞ্জুর হয়েছিল, কিন্তু জমি তাদের নামে না থাকার কারণে তারা এখনও গৃহহীন।
কানওয়ারা বলেন, “আমাদের কাছে পর্যাপ্ত খাবার বা পানীয়ের সংস্থান নেই, তেমনই বাচ্চাদের পড়াশোনার জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণও নেই। বিয়ে-শাদির ক্ষেত্রেও অনেক সমস্যা হয়। প্রতিদিনের সমস্যাগুলো আমাদের ক্লান্ত করে দেয়।”
অর্থের অভাবে বাচ্চাদের শিক্ষা হয়নি
আর্থিক অনটনের কারণে পরিবারটি তাদের সন্তানদের শিক্ষা দিতে পারেনি। রেখাকে হাসপাতালে ভর্তি করার সময় পরিবারটি তাঁর চিকিৎসার ইতিহাস গোপন করে এবং জানায় যে এটি তাঁর চতুর্থ সন্তান। পরে ডাক্তাররা প্রকাশ করেন যে এটি তাঁর ১৭তম সন্তান।
ঝাড়োল কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রের স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ ড. রোশন দারাঙ্গি বলেন, “প্রথম দিকে পরিবারটি সঠিক তথ্য দেয় নি। পরে জানা যায় যে এটি ১৭তম সন্তান, যা স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষা বিষয়ক দৃষ্টিকোণ থেকে একটি গুরুতর বিষয়।”