পতঞ্জলি আগামী চার বছরে খাদ্য ও FMCG রাজস্বে ৫০% বৃদ্ধি এবং ১০,০০০ সুস্থতা কেন্দ্র খোলার লক্ষ্য রাখছে। প্রিমিয়াম পণ্য, নিউট্রাসিউটিক্যালস এবং স্বাস্থ্য পরিপূরকগুলির উপর মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করে সংস্থাটি বিশ্বব্যাপী প্রসারের পরিকল্পনা করছে। বাবা রামদেবের মতে এই পদক্ষেপটি আত্মনির্ভর ভারত এবং স্বাস্থ্য বিপ্লবের দিকে একটি বড় প্রচেষ্টা।
পতঞ্জলি ফুডস: পতঞ্জলি তার ব্যবসার পরবর্তী ধাপে প্রবেশ করে আগামী চার বছরে খাদ্য ও FMCG রাজস্ব ৫০% বৃদ্ধি করতে এবং ১০,০০০ সুস্থতা কেন্দ্র খোলার লক্ষ্য রাখছে। সংস্থাটি প্রিমিয়াম বিস্কুট, ড্রাই ফ্রুট, মশলা, নিউট্রাসিউটিক্যালস এবং স্বাস্থ্য পরিপূরক চালু করে বিশ্বব্যাপী প্রসারের পরিকল্পনা করছে। বাবা রামদেবের মতে এই প্রচেষ্টা ভারতে আত্মনির্ভরতা এবং স্বাস্থ্য বিপ্লবকে উৎসাহিত করবে।
সুস্থতা কেন্দ্র এবং নতুন পণ্য
পতঞ্জলি ঘোষণা করেছে যে তার সুস্থতা কেন্দ্রগুলিতে যোগা, আয়ুর্বেদিক থেরাপি এবং দেশীয় পণ্যগুলিকে প্রচার করা হবে। সংস্থার মতে, এই প্রচেষ্টা মানুষকে সুস্থ জীবনধারা গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করবে এবং একই সাথে ভারতে আয়ুর্বেদিক পণ্যগুলির নাগাল বাড়াবে। পতঞ্জলি ফুডস জানিয়েছে যে আগামী চার বছরে খাদ্য ও FMCG বিভাগের রাজস্ব ৩০% থেকে বাড়িয়ে ৫০% করার লক্ষ্য রয়েছে। এর অধীনে প্রিমিয়াম বিস্কুট, কুকিজ, ড্রাই ফ্রুট এবং মশলা-এর মতো নতুন পণ্য সিরিজ চালু করা হবে। এই পণ্যগুলির মার্জিন ১১.৫% পর্যন্ত থাকার অনুমান করা হচ্ছে।
নিউট্রাসিউটিক্যালস এবং স্বাস্থ্য পরিপূরক
পতঞ্জলির মনোযোগ এখন নিউট্রাসিউটিক্যালস এবং স্বাস্থ্য পরিপূরকগুলির উপরও বেড়েছে। সংস্থাটি অর্গানিক ফুডস এবং সুস্থতা পরিষেবাগুলির মাধ্যমে স্বাস্থ্যের উপর জোর দিচ্ছে। বাবা রামদেব বলেছেন যে আগামী ৫-১০ বছরের মধ্যে পতঞ্জলির পণ্যগুলি সারা বিশ্বে উপলব্ধ হবে। এই বিশ্বব্যাপী প্রসারের মাধ্যমে আয়ুর্বেদকে আন্তর্জাতিক বাজারে উপস্থাপনের সুযোগ পাওয়া যাবে। অনুমান করা হচ্ছে যে ২০৩৫ সালের মধ্যে বিশ্বব্যাপী আয়ুর্বেদিক বাজার ৭৭ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছাবে।
হোম অ্যান্ড পার্সোনাল কেয়ার এবং নন-ফুড ব্যবসা
পতঞ্জলি হোম অ্যান্ড পার্সোনাল কেয়ার বিভাগেও দ্রুত বৃদ্ধির পরিকল্পনা করেছে। সম্পূর্ণ একত্রীকরণের পর এটি বার্ষিক ১০-১২% বৃদ্ধি পাবে। সংস্থাটি সম্প্রতি তার গ্রুপের নন-ফুড ব্যবসা ১১০০ কোটি টাকায় কিনেছে, যা পণ্যের মিশ্রণকে আরও শক্তিশালী করবে।
ডিজিটাল এবং অমনি-চ্যানেল কৌশল
পতঞ্জলির অমনি-চ্যানেল খুচরা কৌশলে ডিজিটাল এবং ঐতিহ্যবাহী উভয় মাধ্যমই অন্তর্ভুক্ত। এতে পারফরম্যান্স মার্কেটিং, SEO এবং ইনফ্লুয়েন্সার ক্যাম্পেইন অন্তর্ভুক্ত। এর ফলে গ্রাহকদের কাছে পৌঁছানো সহজ হবে এবং বিক্রি বাড়বে।
স্থায়িত্ব এবং উৎপাদন সম্প্রসারণ
সংস্থাটি স্থায়িত্বের উপরও জোর দিচ্ছে। পতঞ্জলি তেল পাম বাগানকে ৮৭,০০০ হেক্টর থেকে বাড়িয়ে ৫ লক্ষ হেক্টর করার লক্ষ্য রাখছে। এর উদ্দেশ্য হল ভোজ্য তেলের মার্জিনকে ৪% এ স্থিতিশীল রাখা। ইবিটিডিএ মার্জিন ৫.৯% এ স্থির হবে এবং রাজস্বে ৭% থেকে ১০% এর সিএজিআর বৃদ্ধি থাকার অনুমান করা হচ্ছে।
পতঞ্জলির ভবিষ্যৎ এবং স্বাস্থ্য বিপ্লব
বাবা রামদেব বলেছেন যে নৈতিক ব্যবসা এবং টেকসই বৃদ্ধির মাধ্যমে পতঞ্জলির বাজার মূলধন ১,০০,০০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৫,০০,০০০ কোটি টাকায় পৌঁছাতে পারে। এই নতুন অধ্যায় কেবল ব্যবসার প্রসারে সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং আয়ুর্বেদ এবং স্বাস্থ্য সুস্থতাকে সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। বাবা রামদেব বিশ্বাস করেন যে পতঞ্জলির এই যাত্রা ভারতের স্বাস্থ্য বিপ্লবের প্রতীক হয়ে উঠবে।