প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণ বিলের বিরোধিতা ওয়াইসির: গণতন্ত্রের উপর আঘাতের আশঙ্কা

প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীদের অপসারণ বিলের বিরোধিতা ওয়াইসির: গণতন্ত্রের উপর আঘাতের আশঙ্কা
সর্বশেষ আপডেট: 7 ঘণ্টা আগে

আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সংসদে প্রধানমন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীকে অপসারণের বিলে প্রশ্ন তুলেছেন। তিনি এটিকে সংবিধান বিরোধী বলে অভিহিত করেছেন এবং সতর্ক করেছেন যে এর অপব্যবহার গণতন্ত্র এবং জনগণের অধিকারের উপর মারাত্মক প্রভাব ফেলতে পারে।

New Delhi: অল ইন্ডিয়া মজলিস-এ-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন (AIMIM)-এর প্রধান এবং হায়দরাবাদের সাংসদ আসাদউদ্দিন ওয়াইসি সংসদে সম্প্রতি পেশ হওয়া বিলগুলির উপর গুরুতর প্রশ্ন তুলেছেন। এই বিলগুলিতে প্রধানমন্ত্রী, মুখ্যমন্ত্রী এবং মন্ত্রীদের অপসারণের বিধান রাখা হয়েছে। ওয়াইসি বলেছেন যে এই বিল সংবিধানের পরিপন্থী এবং এর অপব্যবহার হতে পারে।

রাষ্ট্রপতি কি প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করতে পারেন?

ওয়াইসি প্রশ্ন করেছেন যে রাষ্ট্রপতি সত্যিই প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে পদত্যাগ নিতে পারেন কিনা। তিনি বলেন যে সংবিধান অনুসারে রাষ্ট্রপতি কেবল মন্ত্রী পরিষদের পরামর্শেই সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু প্রস্তাবিত বিলে লেখা হয়েছে যে রাষ্ট্রপতির প্রধানমন্ত্রীকে অপসারণ করার অধিকার রয়েছে। ওয়াইসি এটিকে গণতন্ত্র ও সংবিধানের মৌলিক নীতির পরিপন্থী বলে অভিহিত করেছেন।

বিলটির উদ্দেশ্য এবং বিধান

এই বিলটি যৌথ সংসদীয় কমিটিতে (JPC) পাঠানো হয়েছে। বিলে উল্লেখ করা হয়েছে যে যদি প্রধানমন্ত্রী বা মুখ্যমন্ত্রী কোনও গুরুতর অপরাধে জড়িয়ে পড়েন এবং একটানা ৩০ দিন ধরে আটক থাকেন, তবে তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হবে। ওয়াইসি প্রশ্ন তুলেছেন যে এই বিধান কি ক্ষমতার অপব্যবহারের পথ খুলে দিতে পারে না?

ওয়াইসির অভিযোগ

ওয়াইসি সতর্ক করে দিয়েছেন যে কেন্দ্র সরকার এই বিধানের অপব্যবহার করতে পারে। তিনি বলেন যে কেন্দ্র চাইলে কোনও রাজ্য সরকারের চার-পাঁচ জন মন্ত্রীকে গ্রেপ্তার করিয়ে দিলেই সরকার আপনা-আপনি পড়ে যাবে। এতে গণতন্ত্রের স্বাধীনতার উপর বিপদ আসবে এবং জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিকার ছিনিয়ে নেওয়া হবে।

পুলিশ রাষ্ট্র বানানোর অভিযোগ

ওয়াইসি আরও বলেন যে সরকার এই বিলের মাধ্যমে 'পুলিশ রাষ্ট্র' তৈরি করার চেষ্টা করছে। তাঁর বক্তব্য হল এই বিল জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের অধিকার ছিনিয়ে নেবে এবং গণতন্ত্রের ভিত্তি দুর্বল করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে এই পদক্ষেপ নির্বাচিত সরকারের উপর আঘাতের মতো হবে।

আইনসভা, কার্যনির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের উপর প্রভাব

ওয়াইসির যুক্তি হল এই আইন ক্ষমতার তিনটি স্তম্ভ—আইনসভা, কার্যনির্বাহী বিভাগ এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে দুর্বল করবে। যদি কেন্দ্র এই বিধানের অপব্যবহার করে তবে রাজ্য সরকারগুলির উপর নিয়ন্ত্রণ বাড়বে এবং জনগণের ভোটের গুরুত্ব কমে যাবে। তিনি বলেন যে গণতন্ত্রে জনগণের সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত হওয়া উচিত।

ওয়াইসি সংসদে বিরোধিতা জানান

গত সপ্তাহে যখন এই বিল সংসদে পেশ করা হয়েছিল, তখনও ওয়াইসি কড়া বিরোধিতা করেছিলেন। তিনি বলেন যে এই আইন গণতন্ত্রের নীতির পরিপন্থী এবং এটি প্রয়োগ করলে সমাজে রাজনৈতিক অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে। তিনি কেন্দ্র সরকারকে সতর্ক করে দেন যে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জনগণের অধিকার যেন লঙ্ঘন করা না হয়।

সম্ভাব্য অপব্যবহারের আশঙ্কা

ওয়াইসি এই বিলের সম্ভাব্য অপব্যবহারের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন যে কেন্দ্র সরকার এটিকে তাদের রাজনৈতিক স্বার্থের জন্য ব্যবহার করতে পারে। এতে রাজ্য সরকারগুলির স্থিতিশীলতার উপর বিপদ আসবে এবং গণতন্ত্র দুর্বল হবে। আইনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত জনগণের সুরক্ষা এবং শাসন ​​সংস্কার, রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ নয়।

Leave a comment