নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন সতর্ক করে বলেছেন যে বিশেষ নিবিড় সংশোধন (স্পেশাল ইন্টেনসিভ রিভিশন - এসআইআর) প্রক্রিয়া দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের ভোটাধিকারের জন্য হুমকি হতে পারে। তিনি বলেন, কোনো প্রশাসনিক ব্যবস্থার ত্রুটির কারণে গণতান্ত্রিক অধিকার কেড়ে নেওয়া যায় না।
বিহারের এসআইআর প্রক্রিয়া এবং ৬৫ লক্ষ ভোটারের তালিকা থেকে বাদ পড়া
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ১ আগস্ট প্রকাশিত খসড়া ভোটার তালিকা থেকে ৬৫ লক্ষ ভোটারকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর ফলে বিহারে মোট ভোটারের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৭.২৪ কোটিতে। খসড়া তালিকার ওপর দাবি ও আপত্তি ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে।
দরিদ্রদের মধ্যে নথিপত্রের অভাব সম্পর্কে সতর্কতা
অমর্ত্য সেনের মতে, অনেক দরিদ্র নাগরিকের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নেই। এই ধরনের প্রক্রিয়ায় তাদের ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত করা হতে পারে। তিনি বলেন, "উন্নতির নামে যদি অনেকের ক্ষতি হয়, তবে তা গণতন্ত্রের জন্য মারাত্মক ভুল হবে।" প্রশাসনিক প্রক্রিয়ায় দরিদ্রদের অধিকারকে উপেক্ষা করার প্রবণতার তিনি বিশেষভাবে নিন্দা করেছেন।
সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা প্রসঙ্গে
সল্ট লেকের আইবি ব্লকে নিজের নামে থাকা গবেষণা কেন্দ্রে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় অমর্ত্য সেন বলেন, সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো যেখানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হচ্ছে, সেখানে আদালত দরিদ্র ও প্রান্তিক মানুষের স্বার্থ রক্ষা করবে।
প্রশাসনিক সংশোধন বনাম মৌলিক অধিকার
অমর্ত্য সেন আরও বলেন, "সঠিক সংশোধনের নামে সাতটি নতুন ভুল করা যায় না। বিভিন্ন প্রশাসনিক কাজ সময়ে সময়ে করতে হয়, তবে দরিদ্রদের অধিকারের ওপর আঘাত করে তা কখনো করা যায় না।" তিনি সকল নাগরিকের জন্য সমান ভোটাধিকার নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন।
গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণ এবং পরবর্তী পদক্ষেপ
বিহারের এসআইআর প্রক্রিয়ার খসড়া তালিকা প্রকাশের পর, জনগণের অংশগ্রহণের জন্য সুযোগ এবং অভিযোগ জানানোর একটি প্রক্রিয়া রাখা হয়েছে। ভোটাররা ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দাবি বা আপত্তি জমা দিতে পারবেন। এটি প্রমাণ করে যে সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সকল নাগরিকের ভোটাধিকার রক্ষা করা সম্ভব।