আমেরিকার অতিরিক্ত শুল্ক: বিহারের কৃষিপণ্য ও হস্তশিল্প রপ্তানিতে প্রভাব

আমেরিকার অতিরিক্ত শুল্ক: বিহারের কৃষিপণ্য ও হস্তশিল্প রপ্তানিতে প্রভাব

আমেরিকা ভারতের উপর ২৫% অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক আরোপ করেছে, যার ফলে বিহারের কৃষি পণ্য এবং হস্তশিল্প রপ্তানির উপর প্রভাব পড়তে পারে। মখানা, লিচু, ভাগলপুরী সিল্ক এবং মধুবনী পেন্টিং-এর মতো পণ্যের চাহিদা আমেরিকাতে কমতে পারে, তবে বিহারের রপ্তানিকারকরা নতুন বাজার খুঁজে ক্ষতি কমানোর পরিকল্পনা করছেন।

পাটনা: আমেরিকা ভারতের উপর ২৫% অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক বুধবার (২৭শে আগস্ট) রাত ১২টা থেকে কার্যকর করেছে। মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক এর আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তিও জারি করেছে। পূর্বে ভারতের উপর ২৫% আমদানি শুল্ক ছিল, এখন এতে আরও ২৫% বৃদ্ধির পরে মোট শুল্ক ৫০% হয়েছে। এতে ভারত থেকে আমেরিকাতে প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

বিহার রাজ্য ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশন (বিআইএ)-এর সভাপতি কেপিএস কেশরী এবিপি নিউজকে জানিয়েছেন যে বিহারের রপ্তানিকারকরা এই নতুন শুল্কে বেশি প্রভাবিত হবেন না। যদিও বিশেষজ্ঞদের ধারণা, এই অতিরিক্ত শুল্কের কারণে বিহারের পণ্য রপ্তানি বছরে প্রায় আড়াইশো কোটি টাকা কম হতে পারে।

শুল্ক আরোপের ফলে বিহারের রপ্তানিতে পতন

বিহার থেকে আমেরিকাতে রপ্তানি হওয়া প্রধান পণ্যগুলির মধ্যে মখানা, লিচু, আম, জারদালু, মধুবনী পেন্টিং, মঞ্জুষা আর্ট, ভাগলপুরী সিল্ক এবং কাটারনি চাল অন্তর্ভুক্ত। শুল্ক আরোপের পরে এই পণ্যগুলির দাম বাড়তে পারে, যার ফলে রপ্তানি প্রভাবিত হতে পারে এবং আমেরিকান বাজারে প্রতিযোগিতা কঠিন হতে পারে।

বিশেষ করে মখানার উপর এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি দেখা যাচ্ছে। দেশের মোট মখানা উৎপাদনের ৮০% এর বেশি বিহারে হয়। আমেরিকা-তে রপ্তানি হওয়া মখানার পরিমাণ প্রায় ৬০০ টন, যার ২৫% আমেরিকা-তে যায়। এই শুল্ক আরোপের ফলে রপ্তানি কমতে পারে এবং কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সমস্যা হতে পারে।

বিহারের ব্যবসায়ীরা এখন নতুন দেশে রপ্তানি করবেন 

বিহারের রপ্তানিকারকরা এখন আমেরিকা ছাড়াও অন্যান্য দেশে তাদের পণ্যের সরবরাহ বাড়ানোর কৌশল তৈরি করছেন। মখানা ব্যবসায়ী সত্যজিৎ সিং বলেছেন, "যদি আমেরিকা থেকে অর্ডার কমে যায়, তবে আমরা অন্যান্য দেশে সরবরাহ বাড়াবো। শুরুতে একটু সমস্যা হবে, তবে দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব সীমিত থাকবে।"

কেপিএস কেশরী আরও স্পষ্ট করে জানিয়েছেন যে বিহার থেকে হওয়া রপ্তানির মধ্যে আমেরিকার অংশ সীমিত। কৃষি এবং হস্তশিল্প পণ্যের চাহিদা অন্যান্য দেশেও ভালো, তাই বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাবের সম্ভাবনা কম। এর পাশাপাশি, রপ্তানিকারকরা এখন নতুন ব্যবসায়িক অংশীদার এবং বিকল্প বাজার খুঁজতে শুরু করেছেন।

আমেরিকার ট্যাক্সের কারণে ভারতীয় জিনিসপত্র দামি হবে

মার্কিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক অতিরিক্ত শুল্ক আরোপের কারণ হিসেবে রাশিয়া থেকে অপরিশোধিত তেল ও সামরিক সরঞ্জাম কেনার কথা উল্লেখ করেছে। এর ফলে ভারতীয় পণ্যের উপর মোট আমদানি শুল্ক ৫০% হয়েছে। এতে আমেরিকান বাজারে ভারতীয় পণ্যের দাম বাড়বে এবং এটি আমেরিকান ক্রেতাদের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। বিহারের পণ্য রপ্তানিকারকদের জন্য এটি একটি চ্যালেঞ্জ যে তারা তাদের দাম এবং গুণমানের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখে।

Leave a comment