বৃন্দাবনের ধর্মপ্রচারক অনিরুদ্ধাচার্য বিতর্কের কেন্দ্রে। সম্প্রতি তাঁর সভায় আসা দুই মুসলিম বোন অভিযোগ করেছেন যে তাঁদের জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করা হয়েছে, যদিও তাঁরা শ্রীকৃষ্ণের বংশধর। এই ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।
মথুরা: বৃন্দাবনের গৌরী গোপাল আশ্রমে নিয়মিত সভা করেন ধর্মপ্রচারক অনিরুদ্ধাচার্য মহারাজ। তাঁর কথায় তিনি सनातन ধর্ম ও হিন্দু ঐতিহ্য প্রচার করেন। দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা আসেন তাঁর কথা শুনতে। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অনেক ভিডিও ভাইরাল হয়, যেখানে তিনি ভক্তদের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেন।
সম্প্রতি ইন্টারনেটে একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দুই মুসলিম বোন ধর্মকথা শুনতে এসেছিলেন। বোনেরা জানিয়েছেন যে তাঁদের জন্ম হিন্দু পরিবারে এবং পরে তাঁদের জোর করে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করানো হয়। তাঁরা বলেন যে তাঁদের পদবি 'ঘোষী' এবং তাঁদের পূর্বপুরুষেরা গরু ও ছাগলের দুধ বিক্রি করতেন।
জোরপূর্বক ধর্মান্তর নিয়ে বিতর্ক
ভিডিওতে অনিরুদ্ধাচার্য প্রশ্ন করেন যে মুসলিম হওয়ার পরেও কেন তাঁরা হিন্দু পরিবারে বিয়ে করেন। বড় বোন উত্তর দেন যে তাঁদের সব বোনের বিয়ে হিন্দু পরিবারেই হয়েছে। তিনি আরও বলেন যে তাঁদের বাবা-মা তাঁদের শ্রীকৃষ্ণের বংশধর বলতেন, তা সত্ত্বেও তাঁদের জোর করে মুসলিম বানানো হয়।
এই প্রসঙ্গে অনিরুদ্ধাচার্য বলেন যে এটা সত্যি এবং মুসলিম ভাইদের এটা মেনে নেওয়া উচিত। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে সবাই প্রথমে হিন্দু ছিল এবং জোরপূর্বক ধর্মান্তরের ঘটনা ঘটেছে। তাঁর সমর্থকরা এটিকে सनातन ধর্ম ও সাংস্কৃতিক পরিচয়ের আলোচনা হিসেবে দেখেছেন।
লিভ-ইন রিলেশনশিপ নিয়ে অনিরুদ্ধাচার্যের বিতর্কিত মন্তব্য
অনিরুদ্ধাচার্য আগেও লিভ-ইন রিলেশনশিপ এবং মেয়েদের বিয়ের বয়স নিয়ে মন্তব্যের কারণে বিতর্কে জড়িয়েছেন। মথুরায় মহিলা আইনজীবীরা তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছেন এবং মিডিয়ায় এই নিয়ে বিতর্কও হয়েছে। তা সত্ত্বেও তাঁর সমর্থকরা মনে করেন যে বাবা সমাজে শৃঙ্খলা ও मर्यादा শেখান।
তবে তাঁর মন্তব্য তরুণ-তরুণী এবং মহিলাদের মনে অনেক প্রশ্ন তুলেছে। সমালোচকদের মতে, এই ধরনের মন্তব্য আধুনিক সমাজ ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতার দৃষ্টিকোণ থেকে বিতর্কিত। এই কারণে সোশ্যাল মিডিয়া ও টিভি চ্যানেলে তাঁর মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক হয়ে আসছে।
সাধ্বী প্রজ্ঞা অনিরুদ্ধাচার্যের সমর্থন করেছেন
সম্প্রতি প্রাক্তন সাংসদ সাধ্বী প্রজ্ঞা ঠাকুর ভোপাল থেকে বৃন্দাবন স্থিত আশ্রমে এসে অনিরুদ্ধাচার্যের সঙ্গে দেখা করেন। তিনি বলেন যে অনিরুদ্ধাচার্যের মন্তব্যে সমাজের বাস্তব চিত্র ফুটে উঠেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন যে বাবা-মায়ের উচিত মেয়েদের मर्यादा এবং ছেলেদের শৃঙ্খলা শেখানো।
সাধ্বী প্রজ্ঞা বলেন যে সমাজে নিয়ম সমানভাবে প্রযোজ্য না হলে পাশ্চাত্য চিন্তা ও বিকৃতি বাড়বে। তিনি আরও বলেন যে স্কুল ও কলেজগুলিতে মেয়েদের শৃঙ্খলার অভাবের দিকেও নজর দেওয়া প্রয়োজন। তাঁর মতে, সমাজে উন্নতির জন্য ঐতিহ্য ও আধুনিকতার ভারসাম্য বজায় রাখা জরুরি।