বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর রাহুল গান্ধী এবং অখিলেশ যাদবের ভোট চুরির অভিযোগের পাল্টা জবাব দিয়েছেন। তিনি রায়বেরিলি থেকে কনৌজ পর্যন্ত ভুয়া ভোটারদের উল্লেখ করে বলেন, কংগ্রেস নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর অভিযোগ করে জনগণকে বিভ্রান্ত করে।
নয়া দিল্লি: কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর ভোট চুরি এবং নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগের কড়া জবাব দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। বিজেপি নেতা অনুরাগ ঠাকুর রায়বেরিলি থেকে শুরু করে কনৌজ পর্যন্ত ভুয়া ভোটার গণনার দাবি করেছেন এবং কংগ্রেসের বিরুদ্ধে নির্বাচন প্রক্রিয়াকে কলঙ্কিত করার অভিযোগ তুলেছেন। তিনি বলেন, রায়বেরিলির একটি বাড়িতে ৪৫টি নাম নথিভুক্ত রয়েছে, যেখানে কনৌজে ২,৯১,০০০-এর বেশি ডুপ্লিকেট ভোট রয়েছে।
অনুরাগ ঠাকুর বলেন, রাহুল গান্ধী ক্রমাগত নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর নতুন অজুহাত খোঁজেন এবং কখনও আত্মবিশ্লেষণ বা নিরীক্ষণ করেন না। তিনি কংগ্রেসকে নিশানা করে বলেন, বিহার বিধানসভা নির্বাচন নিয়েও বিরোধীরা আগে থেকেই অপপ্রচার শুরু করছে। ঠাকুর বলেন, 'গতকাল কিছু কংগ্রেস নেতা বলছিলেন যে রাহুল গান্ধী এবং বিরোধীরা ঝড় তুলেছেন। আসলে এটি একটি ‘ব্লান্ডার’। রাহুলজির নির্বাচন হারার ভয় আছে, তাই তিনি অভিযোগ করছেন।'
কংগ্রেসের উপর বিজেপির অভিযোগ
অনুরাগ ঠাকুর বলেন, কংগ্রেস সবসময় নির্বাচনে হেরে যাওয়ার পর গণতন্ত্র এবং নির্বাচন কমিশনের উপর অভিযোগ করে। তিনি বলেন, 'কংগ্রেস কখনও ইভিএম হ্যাক হওয়ার কথা বলে, তো কখনও ভিভিপ্যাট নিয়ে প্রশ্ন তোলে। বিহারে হারের পরেও আবার অভিযোগ করা হচ্ছে। নির্বাচনী দুর্নীতির ভিত্তি কংগ্রেসই স্থাপন করেছিল। ১৯৭৫ সালে জরুরি অবস্থার সময় ইন্দিরা গান্ধী ভোটারদের বোকাদের দল বলেছিলেন। রাহুল গান্ধী গণতন্ত্রকে খাটো করার চেষ্টা করছেন।'
বিজেপি নেতা মহারাষ্ট্র এবং কর্ণাটক নির্বাচনের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, রাহুল গান্ধী মহারাষ্ট্রে ভোটার বৃদ্ধির উপর প্রশ্ন তুলেছিলেন, অথচ তাদেরই দলের শাসনে এটা হয়েছিল। তিনি আরও দাবি করেন যে কর্ণাটকে একজন দলিত মন্ত্রীর ক্ষেত্রে কংগ্রেস তাকে বরখাস্ত করেছিল, যা দলে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের অভাব দেখায়।
ভুয়া ভোটারদের নিয়ে পাল্টা জবাব
রাহুল গান্ধীর কর্ণাটকের মহাদেবপুরা আসনের উদাহরণ দেওয়ার পাল্টা জবাবে অনুরাগ ঠাকুর বলেন, রায়বেরিলিতে একটি বাড়িতে ৪৫ জন ভোটার তালিকায় রয়েছেন, কিন্তু রাহুল গান্ধী তা দেখতে পান না। ডায়মন্ড হারবারে একটি বাড়িতে ৫৪,৭৮ ভোট নথিভুক্ত রয়েছে, এই প্রশ্নও কংগ্রেসের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ। তিনি আরও অভিযোগ করেন যে কংগ্রেস কেবল অনুপ্রবেশকারীদের ভোটব্যাঙ্কের উপর রাজনীতি করছে।
অনুরাগ ঠাকুর বলেন, রায়বেরিলিতে মহম্মদ ইসলাম, মহম্মদ কাসিম, শাকিল আনসারি এবং শবনমের মতো ৪৭ জন ভোটার কীভাবে একই বাড়ির বাসিন্দা হলেন, এটা রাহুল গান্ধীর কাছে কোনো প্রশ্ন নয়। ওয়েনাড়েও একটি বাড়িতে ৫৪টি ভোট নথিভুক্ত রয়েছে, যেখানে রায়বেরিলিতে ২,৯৯,০০০-এর বেশি ভুয়া ভোটার পাওয়া গেছে।
কনৌজে ডুপ্লিকেট ভোটার
কনৌজে ২,৯১,৭৯৮টি ডুপ্লিকেট ভোট পাওয়া গেছে, যেখানে এই অঞ্চলটি মাত্র ১,৭০,৯২২ ভোটের ব্যবধানে জেতা হয়েছিল। অনুরাগ ঠাকুর বলেন, বিরোধী নেতারা নির্বাচনের আগে মিথ্যা প্রচারের মাধ্যমে জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করেন। তিনি রাহুল গান্ধীকে বলেন, বিহার নির্বাচনের আগে তার আত্মনিরীক্ষণ করা উচিত এবং নিজের নির্বাচনী এজেন্ডা স্পষ্ট করা উচিত।
অনুরাগ ঠাকুর উপসংহারে বলেন, 'ভোট চুরির দাবি এবং ভুয়া অভিযোগ সত্ত্বেও জনগণ মোদী সরকারকে বেছে নিয়েছে। বিরোধীরা কেবল হইচই করছে, কিন্তু দেশের জনগণ এর সত্যতা উপলব্ধি করেছে।'