লাদাখে চেক রাষ্ট্রপতি পেত্র পাভেল এবং দালাই লামার সাক্ষাতে চীন ক্ষুব্ধ। বেজিং রাষ্ট্রপতি পাভেলের সঙ্গে সমস্ত কূটনৈতিক সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেছে এবং এই পদক্ষেপকে উস্কানিমূলক কাজ হিসেবে অভিহিত করেছে।
China-Czech Relation: ভারতে বসবাসকারী তিব্বতি ধর্মগুরু দালাই লামা এবং চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি পেত্র পাভেলের সাক্ষাৎ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। লাদাখে ২৭শে জুন এই সাক্ষাতের পর চীন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে এবং রাষ্ট্রপতি পাভেলের সঙ্গে তাদের সমস্ত কূটনৈতিক ও সরকারি সম্পর্ক ছিন্ন করার ঘোষণা করেছে। বেজিং এই পদক্ষেপকে "কূটনৈতিক প্রতিবাদ" এবং "উস্কানিমূলক পদক্ষেপ"-এর প্রতিক্রিয়া হিসাবে উল্লেখ করেছে।
সাক্ষাতের রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক তাৎপর্য
এই প্রথম কোনো দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি ভারতে দালাই লামার সঙ্গে আনুষ্ঠানিক সাক্ষাৎ করলেন। সাক্ষাতের সময় রাষ্ট্রপতি পাভেল দালাই লামাকে তাঁর ৯০তম জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানান এবং তিব্বতি জনগণের মানবাধিকার, ভাষা ও ধর্মীয় স্বাধীনতার প্রতি সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন। এই পদক্ষেপকে আন্তর্জাতিক স্তরে তিব্বতি সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থনের প্রতীক হিসেবে দেখা হচ্ছে।
চীনের তীব্র বিরোধিতা
মঙ্গলবার চীনের বিদেশ মন্ত্রক এক আনুষ্ঠানিক বিবৃতি জারি করে বলেছে যে তারা এই সাক্ষাৎ নিয়ে গুরুতর আপত্তি জানাচ্ছে। বেজিং রাষ্ট্রপতি পাভেল এবং চেক সরকারের সঙ্গে সমস্ত স্তরের কূটনৈতিক সংলাপ এবং সরকারি সম্পর্ক স্থগিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চীনের মতে, দালাই লামার সঙ্গে সাক্ষাৎ চীনের সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতার বিরুদ্ধে সরাসরি চ্যালেঞ্জ।
দালাই লামার ৯০তম জন্মদিনেও বিতর্ক হয়েছিল
৬ই জুলাই দালাই লামার ৯০তম জন্মদিন পালিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং অন্যান্য অনেক নেতা তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন। এই অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী কিরেন রিজিজুর উপস্থিতি নিয়েও চীন আপত্তি জানিয়েছিল। চীন তখন বলেছিল যে দালাই লামা ধর্মের নামে তিব্বতকে (চীনে যাকে শিঝাং বলা হয়) চীন থেকে আলাদা করার চেষ্টা করছেন।
বেজিংয়ের সতর্কতা
চীন ভারতকে তিব্বতের "অভ্যন্তরীণ বিষয়ে" হস্তক্ষেপ না করার জন্য সতর্ক করেছিল। বেজিংয়ের দাবি, তিব্বত ঐতিহাসিকভাবে চীনের অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং দালাই লামা এই সত্য পরিবর্তন করার চেষ্টা করছেন। চীন আরও বলেছিল যে ভারতের এই ধরনের সংবেদনশীল বিষয়ে "এক-চীন নীতি" সম্মান করা উচিত।
পুনর্জন্ম (Reincarnation) বিতর্ক কী
দালাই লামা সম্প্রতি ঘোষণা করেছিলেন যে তাঁর পুনর্জন্মের (Reincarnation) সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই নেবেন এবং এই বিষয়ে কোনো বাইরের সংস্থা বা দেশের কোনো অধিকার নেই। চীন এই বিবৃতিও খারিজ করে দিয়ে বলেছে যে দালাই লামার প্রতিষ্ঠানের ধারাবাহিকতা বা সমাপ্তি বিষয়ক সিদ্ধান্ত নেওয়ার কোনো অধিকার নেই।