অপরিশোধিত তেলের দামে পতন: কারণ ও প্রভাব

অপরিশোধিত তেলের দামে পতন: কারণ ও প্রভাব

গত সপ্তাহে ৪.৪% পতনের পর সোমবার অপরিশোধিত তেলের দামে আবারও পতন দেখা যায়। এশিয়ার বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ০.৭৮% কমে ৬৬.০৭ ডলার এবং ডব্লিউটিআই ক্রুড ৬৩.৩০ ডলার প্রতি ব্যারেল এ নেমে আসে। আমেরিকা-রাশিয়া আলোচনা, ওপেক উৎপাদন বৃদ্ধি এবং বিশ্ব অর্থনীতির চাপের কারণে এই পতন আরও গভীর হয়েছে।

Crude Oil: সোমবার এশিয়ার বাজারে লেনদেনের শুরুতে অপরিশোধিত তেলের দামের পতন অব্যাহত থাকে, যা গত সপ্তাহের ৪% এর বেশি দুর্বলতাকে আরও বাড়িয়ে তোলে। আন্তর্জাতিক বাজারে ব্রেন্ট ক্রুড ০.৭৮% কমে ৬৬.০৭ ডলার প্রতি ব্যারেল এবং মার্কিন ডব্লিউটিআই ক্রুড ৬৩.৩০ ডলার প্রতি ব্যারেল এ নেমে আসে। ওপেক-এর উৎপাদন বৃদ্ধি, আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে ইউক্রেন যুদ্ধবিরতি আলোচনার প্রত্যাশা এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কার কারণে তেলের দামের উপর চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

গত সপ্তাহের পতনের পর নতুন চাপ

গত সপ্তাহে আন্তর্জাতিক তেল বাজারে ব্রেন্ট ক্রুডের ৪.৪% এবং মার্কিন ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েট (WTI) ক্রুডের ৫.১% এর দ্রুত পতন নথিভুক্ত করা হয়েছিল। এই সপ্তাহের শুরুতে এই প্রবণতা অব্যাহত ছিল এবং সোমবার শুরুর দিকে উভয় বেঞ্চমার্ক তেলের দামেই আরও পতন দেখা যায়।

আমেরিকা-রাশিয়া আলোচনা

তেল বাজারে চাপের একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল আমেরিকা ও রাশিয়ার মধ্যে সম্ভাব্য শান্তি আলোচনা। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন যে তিনি ১৫ই আগস্ট আলাস্কায় রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সাথে দেখা করবেন। এই সাক্ষাৎ ইউক্রেনে যুদ্ধবিরতির বিষয় নিয়ে হবে। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন যে আলোচনা সফল হলে রাশিয়ার উপর আরোপিত তেল রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা শিথিল করা হতে পারে, যা বিশ্বব্যাপী সরবরাহ বাড়িয়ে দেবে এবং দাম আরও কমিয়ে আনবে।

রাশিয়ান তেলের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং ভারতের অবস্থান

আমেরিকা রাশিয়ার উপর চাপ বাড়িয়ে শান্তি চুক্তির জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করেছে। যদি এই আলোচনা ব্যর্থ হয়, তাহলে রাশিয়ার তেল ক্রেতা দেশগুলোর উপর অতিরিক্ত নিষেধাজ্ঞা জারি করা হতে পারে। এই তালিকায় ভারত এর মতো বড় আমদানিকারক দেশও রয়েছে, যাদের উপর রাশিয়ান তেল কেনা কমানোর জন্য চাপ বাড়ানো হতে পারে।

আমেরিকার অর্থনৈতিক ডেটার ভূমিকা

আইজি মার্কেটস-এর বিশ্লেষক টনি সাইকামোর জানান, আমেরিকা ও রাশিয়ার আলোচনার পাশাপাশি, এই সপ্তাহে মঙ্গলবার প্রকাশিত হতে চলা মার্কিন সিপিআই (মুদ্রাস্ফীতি) ডেটাও দামকে প্রভাবিত করবে। যদি মুদ্রাস্ফীতির হার প্রত্যাশার চেয়ে কম হয়, তাহলে ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার আগে এবং আরও বেশি কমাতে পারে, যা অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডকে বাড়িয়ে তুলবে এবং তেলের চাহিদা উন্নত হতে পারে।

বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার উদ্বেগ

যদিও চাহিদার সম্ভাব্য বৃদ্ধির আশা করা হচ্ছে, তবুও বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দার ঝুঁকি এখনও রয়ে গেছে। অনেক দেশে শিল্প উৎপাদনে স্থবিরতা, বাণিজ্যিক লেনদেনে হ্রাস এবং গ্রাহক চাহিদা দুর্বল থাকার কারণে শক্তি বাজারের উপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। এই কারণেই বিনিয়োগকারীরা বর্তমানে সতর্ক অবস্থান বজায় রেখেছেন।

Leave a comment