ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগরত আসারামকে রাজস্থান হাইকোর্ট থেকে বড় স্বস্তি মিলেছে। আদালত তাঁকে চিকিৎসার ভিত্তিতে ছয় মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে।
জয়পুর: ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগরত স্বঘোষিত সাধু আসারাম বাপুকে (Asaram Bapu) রাজস্থান হাইকোর্ট থেকে বড় স্বস্তি মিলেছে। আদালত তাঁর ক্রমশ অবনতিশীল স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে তাঁকে ৬ মাসের অন্তর্বর্তীকালীন জামিন (Interim Bail) মঞ্জুর করেছে। রাজস্থান হাইকোর্টের কার্যনির্বাহী প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব প্রকাশ শর্মার নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এই স্বস্তি প্রদান করেছে। আদালত তার আদেশে বলেছে যে আসারাম বর্তমানে গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যায় ভুগছেন এবং তাঁর সঠিক চিকিৎসার প্রয়োজন।
চিকিৎসার ভিত্তিতে অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দেওয়া হয়েছে
আসারাম সম্প্রতি আদালতে নিয়মিত জামিনের জন্য আবেদন করেছিলেন, যেখানে তিনি তাঁর খারাপ স্বাস্থ্য এবং বার্ধক্যজনিত অসুস্থতার কথা উল্লেখ করেছিলেন। জানানো হয়েছে যে বর্তমানে তিনি একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি আছেন, যেখানে তাঁর চিকিৎসা চলছে। আদালত তাঁর মেডিকেল রিপোর্ট এবং ডাক্তারদের সুপারিশ দেখার পর বলেছে যে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে তাঁকে সীমিত সময়ের জন্য এই স্বস্তি দেওয়া হচ্ছে। এই আদেশের পর এখন আসারাম আগামী ৬ মাস জেল থেকে বাইরে থেকে নিজের চিকিৎসা করাতে পারবেন।
২০১৩ সালের ধর্ষণ মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগ করছেন
২০১৮ সালে যোধপুরের সেশন আদালত ২০১৩ সালের নাবালিকা ধর্ষণ মামলায় আসারামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছিল। ঘটনাটি ছিল এক ১৬ বছর বয়সী মেয়ের যৌন শোষণের, যে আসারামের বিরুদ্ধে তাঁর যোধপুর আশ্রমে ধর্ষণের অভিযোগ এনেছিল। দীর্ঘ শুনানি এবং সাক্ষীদের বয়ানের পর আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল।
আসারাম ২০১৩ সালের আগস্ট মাস থেকে জেলে বন্দী আছেন এবং এখন পর্যন্ত ১১ বছরের বেশি সময় জেলে কাটিয়েছেন। এর আগে ২০২৪ সালের জানুয়ারিতে সুপ্রিম কোর্টও আসারামকে চিকিৎসার ভিত্তিতে মার্চ মাস পর্যন্ত অন্তর্বর্তীকালীন জামিন দিয়েছিল। তখন আদালত বলেছিল যে আসারামের বয়স বেশি এবং তাঁর দু'বার হৃদরোগ (Heart Attack) হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্ট রাজস্থান সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল যে তাঁকে সঠিক চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সুবিধা দেওয়া হোক। এখন রাজস্থান হাইকোর্ট তাঁর স্বাস্থ্যের বর্তমান অবস্থা বিবেচনা করে ৬ মাসের নতুন অন্তর্বর্তীকালীন জামিন মঞ্জুর করেছে।
সুরাট মামলাতেও ফেঁসেছেন আসারাম ও নারায়ণ সাইঁ
২০১৩ সালে যোধপুর মামলার দুই মাস পর, গুজরাটের সুরাটে দুই বোন আসারাম এবং তাঁর ছেলে নারায়ণ সাইঁয়ের বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতন ও ধর্ষণের গুরুতর অভিযোগ এনেছিল। এই মামলাটিও বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন। নারায়ণ সাইঁও একই ধরনের মামলায় জেল খেটেছেন এবং তিনি এই মুহূর্তে গুজরাটের জেলে বন্দী আছেন।
হাইকোর্ট তার আদেশে বলেছে যে, আসারামের বয়স এবং স্বাস্থ্যের অবস্থা বিবেচনা করে তাঁকে অস্থায়ী স্বস্তি দেওয়া হচ্ছে। তিনি এই সময়কালে কোনো ধরনের জনসভা বা ধর্মীয় কার্যকলাপে অংশগ্রহণ করতে পারবেন না। এই জামিন শুধুমাত্র চিকিৎসার জন্য সীমাবদ্ধ থাকবে। আদালত একই সাথে রাজ্য সরকারকে এই নির্দেশও দিয়েছে যে তারা প্রতি মাসে তাঁর স্বাস্থ্য অবস্থার রিপোর্ট আদালতে পেশ করবে।













