বৃদ্ধবয়সে নির্ভরতা নয়, নির্দিষ্ট পেনশন!

বৃদ্ধবয়সে নির্ভরতা নয়, নির্দিষ্ট পেনশন!
সর্বশেষ আপডেট: 30-11--0001

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক নিরাপত্তার প্রয়োজন বাড়ে। অনেকেই চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় থাকেন। সেই দুশ্চিন্তা কাটাতে কেন্দ্রীয় সরকার এনেছে ‘অটল পেনশন যোজনা’। ৬০ বছর বয়সের পর থেকে এই প্রকল্পে মাসে নির্দিষ্ট পরিমাণে পেনশন পাওয়া যাবে, যাতে কারও উপর নির্ভর করতে না হয়। এটি আত্মনির্ভরতা অর্জনের একটি বাস্তব উদাহরণ।

হাজারে শুরু, পাবে ৫ হাজার পর্যন্ত পেনশন!

মাত্র ১,০০০ টাকার মাসিক বিনিয়োগ থেকেই শুরু করা যায় এই প্রকল্পে যাত্রা। ভবিষ্যতে পেনশনের অঙ্ক নির্ভর করে বিনিয়োগের পরিমাণ ও বয়সের উপর। সর্বোচ্চ পেনশন ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। কম আয়ের মানুষদের জন্য এটি এক দারুণ সুযোগ, যেখানে ছোট সঞ্চয়েই গড়ে উঠবে বড় নিরাপত্তা।

একটু পরিকল্পনা করলেই নিরাপদ বার্ধক্য

 তরুণ বয়সে সামান্য পরিকল্পনা ও নিয়মিত সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুললেই বার্ধক্য হয়ে উঠবে নিশ্চিন্ত। বার্ধক্যে কোনও রকম আর্থিক টানাপোড়েন থাকবে না। প্রতি মাসে নিশ্চিত আয় থাকার ফলে নিজের প্রয়োজন নিজেই মেটানো যাবে।

অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য আশীর্বাদ!

রাজমিস্ত্রি, রিকশাচালক, গৃহপরিচারিকা কিংবা দিনমজুর—যাঁরা সংগঠিত শ্রমের আওতায় পড়েন না, তাঁদের জন্য এই স্কিম যেন জীবনের আশ্রয়। কোনও পিএফ বা ইপিএফ নেই? সমস্যা নয়। এখানে নিজের কাঁধেই গড়ে তুলুন আপনার বার্ধক্যকালীন নিরাপত্তা।

বয়সসীমা ১৮ থেকে ৪০, সুযোগ সবার!

এই স্কিমে যোগ দেওয়ার জন্য বয়সের সীমা রাখা হয়েছে ১৮ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এই সময়ের মধ্যেই নাম নথিভুক্ত করলে ৬০ বছর বয়সে শুরু হবে মাসিক পেনশন। অর্থাৎ যত আগে নাম লেখাবেন, তত কম টাকা দিয়েই পেতে পারেন বড় পেনশন।

সারাদেশে প্রযোজ্য ও সম্পূর্ণ সুরক্ষিত স্কিম

 দেশের যেকোনও প্রান্তের নাগরিক এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারবেন। এটি পেনশন রেগুলেটরি অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (PFRDA)-র আওতাধীন এবং কেন্দ্রীয় সরকারের গ্যারেন্টি যুক্ত। কোনও প্রতারণার ভয় নেই—সম্পূর্ণ নিরাপদ আর নির্ভরযোগ্য।

কম বিনিয়োগে পছন্দমতো পেনশন অপশন

পেনশন অঙ্ক বেছে নেওয়ার সুবিধা রয়েছে। আপনি চাইলে প্রতি মাসে ১,০০০, ২,০০০, ৩,০০০, ৪,০০০ কিংবা ৫,০০০ টাকার পেনশন পেতে পারেন। আপনার বয়স ও মাসিক অবদান অনুযায়ী হিসেব করা হয় প্রিমিয়াম।

আয়করে ছাড়ও মিলবে ₹৫০,০০০ পর্যন্ত!

শুধু ভবিষ্যতের নিরাপত্তা নয়, এই স্কিমে এখন বিনিয়োগ করলেই আয়করেও মিলবে বিশেষ ছাড়। আয়কর আইনের 80CCD(1B)-এর অধীনে বছরে ₹৫০,০০০ অতিরিক্ত ছাড় পাওয়া যায়—যা মধ্যবিত্তদের জন্য বড় স্বস্তি।

মৃত্যুর পরও নমিনির সুবিধা নিশ্চিত

স্কিমধারীর মৃত্যু হলেও তাঁর স্ত্রী/স্বামী অথবা মনোনীত ব্যক্তি পাবেন সমস্ত অর্থ ও সুবিধা। এমনকি, উভয়ের মৃত্যু হলেও পুরো টাকাটি পাবেন নমিনি। অর্থাৎ ভবিষ্যৎ শুধু আপনার নয়, আপনার পরিবারেরও নিরাপত্তা নিশ্চিত।

অনলাইন বা অফলাইনে সহজ রেজিস্ট্রেশন

এই প্রকল্পে নাম নথিভুক্ত করা একেবারেই সহজ। আপনি চাইলে নিজের ব্যাঙ্ক ব্রাঞ্চে গিয়ে অফলাইনে, অথবা অনলাইনে নেট ব্যাঙ্কিং-এর মাধ্যমে আবেদন করতে পারেন। নেই কোনও অতিরিক্ত ঝামেলা।

আবেদনপত্রে দিতে হবে প্রয়োজনীয় তথ্য

আবেদন করতে গেলে পূরণ করতে হবে নির্ধারিত ফর্ম—যেখানে দিতে হবে নাম, ঠিকানা, ফোন নম্বর, আধার নম্বর ও নমিনির বিবরণ। সঙ্গে জমা দিতে হবে KYC নথি।

নির্ধারিত তারিখে স্বয়ংক্রিয় টাকা কাটা হবে

একবার রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেলে প্রতি মাসে নির্ধারিত দিনে নির্ধারিত পরিমাণ টাকা আপনার সেভিংস অ্যাকাউন্ট থেকে অটো ডেবিট হয়ে যাবে। এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয়, ঝামেলা নেই।

নেট ব্যাঙ্কিং বা মোবাইল অ্যাপ থেকেও রেজিস্টার করা যাবে

কোনও ব্যাঙ্ক অ্যাপ বা ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং-এ লগইন করে “Social Security Schemes” বা “APY” বিভাগে গিয়ে আবেদন করা যায়। প্রযুক্তির সাহায্যে প্রক্রিয়াটি হয়েছে আরও সহজ।

একবার নাম নথিভুক্ত হলে মিলবে PRAN নম্বর

রেজিস্ট্রেশনের পরে আপনি পাবেন একটি স্থায়ী রিটায়ারমেন্ট অ্যাকাউন্ট নম্বর (PRAN)। এরপর আপনার প্রতিটি লেনদেন এই নম্বরের অধীনেই সংরক্ষিত থাকবে এবং ভবিষ্যতে পেনশন পাওয়ার জন্য সেটিই হবে আপনার পরিচয়।

Leave a comment