মোদী সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘আয়কর বিল ২০২৫ প্রত্যাহার করল

মোদী সরকার আনুষ্ঠানিক ভাবে ‘আয়কর বিল ২০২৫ প্রত্যাহার করল

শুক্রবার সন্ধ্যায় সরকারি এক সিদ্ধান্তে ‘আয়কর বিল, ২০২৫’ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রত্যাহার করা হয়েছে। চলতি বছরের ১৩ ফেব্রুয়ারি লোকসভায় বিলটি প্রথম পেশ করা হয়েছিল। এই বিলের মূল লক্ষ্য ছিল ১৯৬১ সালের পুরনো আয়কর আইনটি প্রতিস্থাপন করে কর ব্যবস্থাকে আধুনিকায়ন করা। কিন্তু নানা ত্রুটি ও বিরোধিতার কারণে বিলটি আর আগের সংস্করণে থাকছে না।

নতুন সংস্করণ নিয়ে ১১ আগস্ট সংসদে বিল পেশের প্রস্তুতি

সরকারি সূত্রের খবর, সোমবার ১১ আগস্ট সংসদে ‘আয়কর বিল, ২০২৫’-এর একটি সম্পূর্ণ নতুন সংস্করণ পেশ করা হবে। আগের সংস্করণের ত্রুটি ও বিরোধিতার কথা মাথায় রেখে, এই নতুন সংস্করণে বিভিন্ন সংশোধনী ও সুপারিশ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। সরকারের পক্ষ থেকে আশা প্রকাশ করা হয়েছে যে এই নতুন বিলটি সবার জন্য গ্রহণযোগ্য হবে এবং দেশের অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসবে।

সিলেক্ট কমিটির সুপারিশের আলোকে বিলের নতুন সংস্করণ

বিলটি লোকসভায় পেশের পর অবিলম্বে এক সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানো হয়েছিল। বিজেপি সাংসদ বৈজয়ন্ত পান্ডার সভাপতিত্বে ওই কমিটি দীর্ঘ সময় বিলের খুঁটিনাটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছে। ২১ জুলাই সংসদে জমা হওয়া কমিটির রিপোর্টে বিলের ২৮৫টি সুপারিশ ছিল। সরকারি সূত্র বলছে, নতুন সংস্করণে এই সুপারিশগুলো প্রাধান্য পাবে, যাতে আগের সংস্করণের ত্রুটি দূর হয় এবং আইনটি আরও কার্যকর ও ব্যবহার উপযোগী হয়।

আগের সংস্করণের বিভ্রান্তি ও বিরোধিতার প্রেক্ষিতে প্রত্যাহার

আয়কর বিল, ২০২৫-এর আগের সংস্করণটি নিয়ে ব্যাপক বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছিল। একাধিক দফায় বিল সংশোধনের ফলে আইনজীবী, করদাতা ও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অস্পষ্টতা বাড়ছিল। এ কারণে বিরোধী দল এবং সংশ্লিষ্ট স্টেকহোল্ডারদের ব্যাপক আপত্তি ছিল। সরকারেরও মনে হয়েছিল, এমন পরিস্থিতিতে আগের বিলটি রেখে নতুন সংস্করণ আনা বেশি যুক্তিযুক্ত হবে। তাই পূর্বের বিলটি প্রত্যাহার করে নতুন সংস্করণ আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

বিরোধীদের প্রতিবাদে বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধন নিয়ে অধিবেশন মুলতবি

শুক্রবার বিকেল ৩টের দিকে লোকসভার কার্যক্রম বিরোধী দলের তীব্র প্রতিবাদের কারণে মুলতবি ঘোষণা করা হয়। বিরোধীরা বিশেষত বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনের প্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। অধিবেশন মুলতবির ঠিক আগে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন আনুষ্ঠানিকভাবে আগের ‘আয়কর বিল, ২০২৫’ প্রত্যাহার ঘোষণা করেন। এই ঘটনাটি সংসদীয় রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ মোড় এনে দিয়েছে।

নতুন ‘আয়কর বিল, ২০২৫’: প্রত্যাশা ও ভবিষ্যৎ

সরকার আশা করছে, নতুন সংস্করণটি দেশের কর ব্যবস্থাকে আরো সুগঠিত করবে এবং করদাতাদের জন্য সুবিধাজনক পরিবেশ সৃষ্টি করবে। বিশেষ করে কর প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা বৃদ্ধির জন্য নানা পদক্ষেপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। নতুন বিল পাস হলে তা দেশের আর্থিক উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করছেন অর্থনীতিবিদরা। দেশের করব্যবস্থার আধুনিকায়নের এই পদক্ষেপ দেশের অর্থনীতির জন্য বড় ধাক্কা হিসেবে বিবেচিত হবে।

 

Leave a comment