আরজি কর হাসপাতালে ঘটে যাওয়া তরুণী চিকিৎসকের ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় প্রতিবাদের জোয়ার ফের রাজপথে। শুক্রবার রাত ৯টায় কলেজ স্ট্রিট থেকে শুরু হয় মশাল মিছিল, যার নেতৃত্ব দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। এই মিছিলের উদ্দেশ্য একটাই — বিচার অধরা ওই ঘটনার প্রকৃত দোষীদের দ্রুত বিচারের আওতায় আনা। ডাক্তাররা দাবি জানাচ্ছেন, যতদিন না দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হবে, ততদিন এই প্রতিবাদ থামবে না।
ছাত্র-যুব সংগঠনের মিছিল: কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার
সেদিনই সন্ধ্যা ৬টায় কলেজ স্ট্রিট থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই এবং যুব সংগঠন ডিওয়াইএফআই যৌথভাবে একটি বিক্ষোভ মিছিল করেছে। তারা ‘আরজি কর’-এর ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করার দাবি তুলেছে। পথ চলার মাঝেই পথসভা ও প্রতিবাদ বক্তৃতা করা হয়, যা পথচারীদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিধ্বনি ফেলেছে।
বারাসাতে নাগরিক সমাজের প্রতিবাদ মিছিল
রাজ্যের অন্য প্রান্ত বারাসাতেও একই দিনে নাগরিক সমাজ এবং স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলো ‘আরজি কর’ ঘটনার বিচার দাবি নিয়ে মিছিল করেছে। ৫ নম্বর স্টেশন সংলগ্ন এলাকা থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল শহরের বিভিন্ন প্রধান সড়ক অতিক্রম করে এবং স্লোগান দেন, “বিচার চাই, অন্যায় বন্ধ কর।” আন্দোলনকারীরা জোর দিয়ে বলেছেন, প্রকৃত দোষীদের ধরা না পড়া পর্যন্ত আন্দোলন চলতে থাকবে।
এক বছর অতিক্রান্ত, কিন্তু বিচার অধরা—বিচারের দাবিতে প্রতিবাদের ঢেউ
গেল এক বছর ধরে ‘আরজি কর’ হাসপাতালের তরুণী চিকিৎসকের নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার এখনো মেলেনি। দীর্ঘ সময় পার হলেও কোনো স্থায়ী প্রগতি না হওয়ায় রোগী, চিকিৎসক ও সাধারণ জনগণের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র হয়েছে। তাদের বিশ্বাস, আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত এ ধরনের সন্ত্রাসের ইতি ঘটবে না। এই কারণেই প্রতিবাদের মিছিল বিভিন্ন শহর ও গ্রামাঞ্চলে জোরালো আকার ধারণ করেছে।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে প্রতিবাদের ছড়াছড়ি, জনমানসে উত্তেজনা
কলকাতা শহরের কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হওয়া মিছিল বিবেকানন্দ রোড ক্রসিং, বিধান সরণি হয়ে হাতিবাগান ক্রসিং পর্যন্ত পৌঁছেছে। প্রতিবাদকারীরা পুলিশের প্রতি দাবি জানিয়েছেন, যেন তারা দ্রুত তদন্ত ও দোষীদের গ্রেপ্তারে মনোযোগ দেয়। পাশাপাশি সামাজিক ও মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়ে বিচার প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও দ্রুততা নিশ্চিত করার জন্য কাজ করছে।
বিচার ও ন্যায়বিচারের দাবিতে জনসাধারণের একসূত্রে প্রতিবাদ
এই আন্দোলনের পেছনে শুধুমাত্র তরুণ চিকিৎসক বা ছাত্ররা নয়, সাধারণ মানুষ, কর্মজীবী ও নাগরিক সমাজের সব শ্রেণির মানুষ রয়েছে। তারা সবাই ‘সুভাষ বোসের বাংলায়’ ন্যায় ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষায় একসূত্রে আবদ্ধ হয়েছেন। বিচার প্রক্রিয়ায় দীর্ঘ বিলম্ব এবং প্রশাসনিক গাফিলতির বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ মিছিলগুলো সামাজিক ন্যায়ের প্রতীক হয়ে উঠেছে।