অর্শ রোগের কারণে মানুষের দৈনন্দিন জীবন জটিল হয়ে যায়। এটি রক্তপাত, জ্বালা ও চুলকানি সৃষ্টি করে। তবে সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং কিছু আয়ুর্বেদিক প্রতিকার অনুসরণ করলে সমস্যা অনেকটাই কমানো সম্ভব। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সকালে একটি নির্দিষ্ট ফল এবং রাতে এক চামচ ত্রিফলা খেলে অর্শের জ্বালা এবং কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করা সম্ভব।
পাইলসের ধরণ ও কারণ
পাইলস মূলত দুই ধরনের হয়: অভ্যন্তরীণ অর্শ (রক্তাক্ত) এবং বহিরাগত অর্শ। কখনও বড় পাইলসের উপর আঁচিলও হতে পারে, যা ওয়ার্টি পাইলস নামে পরিচিত। দীর্ঘক্ষণ টয়লেটে বসা, ক্রমাগত কোষ্ঠকাঠিন্য, মশলাদার খাবার, অপর্যাপ্ত জল গ্রহণ, গর্ভাবস্থা এবং ভারী জিনিস তোলা অর্শের প্রধান কারণ।
ঘরোয়া প্রতিকার ও জীবনধারা পরিবর্তন
ফাইবার সমৃদ্ধ খাদ্য: প্রতিদিন সবুজ শাকসবজি, স্যালাড, মরশুমি ফল, ওটমিল ও সাইলিয়াম ভুসি খাওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য কমায়।
প্রচুর জল পান করা: শরীর থেকে বিষাক্ত পদার্থ বের করে এবং মল নরম রাখে।
সিটজ বাথ: দিনে ২–৩ বার হালকা গরম জলে ১০–১৫ মিনিট বসা। আঁচিলের ফোলাভাব ও ব্যথা কমায়।
নারকেল তেল ও অ্যালোভেরা জেল: আঁচিলের উপর লাগালে ফোলাভাব, জ্বালা ও চুলকানি কমে।
ত্রিফলা গুঁড়ো: রাতে খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়।
বটগাছের দুধ ও অর্জুনের ছাল: রক্তপাত বন্ধ ও রক্তনালীগুলিকে শক্তিশালী করতে সাহায্য করে।
নিম ও হলুদের পেস্ট: আঁচিল সঙ্কুচিত করে।
ডুমুর: রাতারাতি ভিজিয়ে সকালে খেলে মলত্যাগ সহজ হয়।
দই ও বাটারমিল্ক: হজমশক্তি উন্নত করে।
জরুরি সতর্কতা ও জীবনধারা
দীর্ঘসময় বসে থাকা এবং মোবাইলে ব্যস্ত থাকা এড়িয়ে চলুন। নিয়মিত যোগব্যায়াম করুন। ভারতীয় টয়লেটে স্কোয়াটিং পজিশন মলদ্বারের উপর চাপ কমায়।
পাইলস বা অর্শ খুবই বেদনাদায়ক। মলত্যাগ, বসা বা হাঁটাচলায় অসুবিধা সৃষ্টি করে। আয়ুর্বেদিক ঘরোয়া প্রতিকার যেমন ত্রিফলা গুঁড়ো, নারকেল তেল, সিটজ বাথ এবং ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার সমস্যা উল্লেখযোগ্যভাবে কমাতে সাহায্য করে।