আজমগড়ে সাত বছর বয়সী সাহেব আলমকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়েছে এবং তার মৃতদেহ বস্তাবন্দী করে বাড়ির কাছে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। পরিবার পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে, যেখানে জনতা বিক্ষোভ করেছে এবং পুলিশ তদন্ত ত্বরান্বিত করেছে।
উত্তর প্রদেশের আজমগড়ে বৃহস্পতিবার একটি মর্মান্তিক ঘটনায় পুরো এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়েছে। সিধারী থানা এলাকার পাঠান টোলার বাসিন্দা মুকাররম আলীর সাত বছর বয়সী পুত্র সাহেব আলমের মৃতদেহ বস্তাবন্দী অবস্থায় তার বাড়ির পাশের তারে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। ঘটনার পর স্থানীয়রা পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলে তীব্র বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পুলিশ মৃত শিশুর অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় তদন্ত শুরু করেছে।
শিশুর অপহরণ ও হত্যার ঘটনা
তথ্য অনুযায়ী, সাহেব আলম বুধবার সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে বের হয় এবং আর ফিরে আসেনি। পরিবার রাতে পুলিশকে খবর দেয়, কিন্তু সকাল পর্যন্ত কোনো সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার দিনের বেলায় সাহেবের মৃতদেহ পাশের বাড়ির কাছে তারে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়, যা এলাকায় ভয় ও চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে।
ঘটনাস্থলে পৌঁছানো পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে ফরেনসিক দল, ডগ স্কোয়াড এবং সার্ভিল্যান্স টিমকে ডেকে তদন্ত শুরু করে। মৃতদেহ পাওয়ার সামনের বাড়িতে রক্তের দাগ পাওয়া যায়, যা থেকে অনুমান করা হয় যে শিশুটিকে সেখানেই হত্যা করা হয়েছিল এবং তারপর মৃতদেহ বস্তায় ভরে বাড়ির কাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল।
মুক্তিপণের ফোন সত্ত্বেও সাহায্য মেলেনি
পুলিশ জানতে পেরেছিল যে শিশুটিকে অপহরণের পর পরিবারের কাছে মুক্তিপণের জন্য ফোন এসেছিল। পরিবার এ বিষয়ে পুলিশকে জানায়, কিন্তু অভিযোগ রয়েছে যে পুলিশ সময়মতো কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারেনি। এই কারণেই সাহেব আলমের প্রাণ বাঁচানো যায়নি।
প্রতিবেশী এবং এলাকার লোকেরা বলছেন যে যদি সময়মতো পুলিশ পদক্ষেপ নিত, তাহলে শিশুটি বেঁচে যেতে পারত। এই ঘটনা পুলিশ প্রশাসনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে এবং জনগণের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সৃষ্টি করেছে।
জনতার তীব্র বিক্ষোভ এবং প্রতিবেশীর ওপর অভিযোগ
মৃতদেহ উদ্ধারের খবর ছড়িয়ে পড়তেই আশেপাশের লোকজন ঘটনাস্থলে জড়ো হয়। বিপুল জনতা পুলিশের গাফিলতির অভিযোগ তুলে বিক্ষোভ শুরু করে। বিক্ষোভ চলাকালীন অনেকে অন্য সম্প্রদায়ের এক প্রতিবেশীর বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ তুলে তার বাড়িতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করে, কিন্তু পুলিশ দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
জনতাকে শান্ত করতে ঘটনাস্থলে ১৬টি থানার বাহিনী এবং পিএসি (প্রাদেশিক আর্মড কনস্ট্যাবুলারি) মোতায়েন করা হয়। এসপি সিটি মধুমন কুমার সিং এবং এএসপি চিরাগ জৈনও ঘটনাস্থলে পৌঁছে জনসাধারণকে আশ্বাস দেন যে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।
পুলিশের কঠোর ব্যবস্থা
ঘটনাস্থলে উপস্থিত পুলিশ সুপার ড. অনিল কুমার জানান যে পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং অভিযুক্তদের খোঁজে একাধিক পুলিশ দল নিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তরা বর্তমানে পলাতক এবং তাদের পরিবারের সাথে কোনো নিরাপদ স্থানে লুকিয়ে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন যে তদন্তে যদি কোনো পুলিশ সদস্যের গাফিলতি প্রমাণিত হয়, তাহলে তার বিরুদ্ধেও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া, পুরো এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে যাতে এ ধরনের ঘটনার পুনরাবৃত্তি না হয়। কর্মকর্তারা বলছেন যে অভিযুক্তদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনা হবে।