বলরামপুরে ছাঙ্গুর বাবার কোঠি ভাঙার পর প্রশাসন এবার ৮.৫৫ লক্ষ টাকা খরচ আদায় করবে। বাবার বিরুদ্ধে দেশ বিরোধী কার্যকলাপ, বিদেশি অর্থায়ন এবং ধর্মান্তকরণের গুরুতর অভিযোগ উঠেছে।
UP: বলরামপুরে সরকারি জমিতে তৈরি বিশাল কোঠি ভেঙে ফেলার পর প্রশাসন এখন জামালুদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার কাছ থেকে ৮.৫৫ লক্ষ টাকা ধ্বংসের খরচ আদায়ের নোটিশ জারি করেছে। বিষয়টি শুধু অবৈধ নির্মাণ নয়, বরং বিদেশি অর্থায়ন এবং দেশবিরোধী কার্যকলাপের জাল বিস্তারের অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।
সরকারি জমিতে তৈরি অংশ ভাঙার পর অভিযান জোরদার
উত্তরপ্রদেশের বলরামপুর জেলায় জামালুদ্দিন ওরফে ছাঙ্গুর বাবার অবৈধ কোঠিতে বুলডোজার চালানোর পর প্রশাসন এখন পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে এগিয়ে গেছে। এবার এই ধ্বংসযজ্ঞে হওয়া খরচ বাবাকে পরিশোধ করতে হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, আজ বাবার কোঠিতে আদায়ের নোটিশ সাঁটানো হবে।
ধ্বংসের সময় ব্যবহৃত সরঞ্জাম, যেমন JCB মেশিন, নিরাপত্তা ব্যবস্থায় নিযুক্ত পুলিশকর্মীদের তিন দিনের বেতন সহ অন্যান্য প্রশাসনিক খরচের হিসাব তৈরি করা হয়েছে। সব মিলিয়ে এই খরচ ৮ লক্ষ ৫৫ হাজার টাকার বেশি, যা এখন ছাঙ্গুর বাবার কাছ থেকে আদায় করা হবে।
মহল-এর মতো ছিল অবৈধ কোঠি, সম্পূর্ণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা সহ
প্রশাসন কর্তৃক ধ্বংস করা কোঠি কোনও বিশাল প্রাসাদ থেকে কম ছিল না। কোঠির চারপাশে সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো ছিল। একটি প্রাইভেট পাওয়ার প্ল্যান্ট এবং কয়েক ডজন সোলার প্যানেলও ছিল। এছাড়াও, বাউন্ডারিতে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছিল, যেগুলিতে সম্ভবত কারেন্ট প্রবাহিত হত, যাতে কেউ কোঠির কাছে যেতে না পারে।
কোঠির ভিতরে একটি গোপন কন্ট্রোল রুমও ছিল, যা থেকে পুরো এলাকার ওপর নজরদারি চালানো হত। এই কন্ট্রোল রুম সরাসরি বাবার বেডরুমের সঙ্গে যুক্ত ছিল এবং সেখানে আসা-যাওয়ার সকলের রেকর্ড রাখা হত।
পুলিশ ও তদন্তকারী সংস্থার সক্রিয়তা বৃদ্ধি
ইউপি পুলিশ ইতিমধ্যেই এই মামলায় ছাঙ্গুর বাবা, তাঁর ঘনিষ্ঠ নীতু রোহরা, তাঁর স্বামী জালালুদ্দিন এবং বাবার ছেলেকে গ্রেপ্তার করেছে। এখন বাকি অভিযুক্তদের খোঁজা হচ্ছে। এই মামলার তদন্ত করছে এटीएस (ATS) এবং এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ED)। প্রাথমিক তদন্তে কোটি কোটি টাকার বিদেশি অর্থায়নের প্রমাণ পাওয়া গেছে।
পাকিস্তান এবং তুরস্কের সঙ্গে যুক্ত বিদেশি নেটওয়ার্ক
তদন্তকারী সংস্থাগুলি এমন ইঙ্গিত পেয়েছে যে, ছাঙ্গুর বাবার নেটওয়ার্ক শুধু ধর্মান্তকরণেই সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং এটি দেশবিরোধী কার্যকলাপ এবং বিদেশি সংস্থাগুলির সঙ্গে যোগাযোগের একটি অংশ ছিল। জানা যাচ্ছে, বাবা পাকিস্তান ও তুরস্ক থেকে মোটা অঙ্কের টাকা অর্থায়ন হিসেবে পাচ্ছিলেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, এই অর্থায়নের উদ্দেশ্য ছিল ভারতকে মুসলিম রাষ্ট্রে পরিণত করার লক্ষ্যে অভিযান চালানো। তদন্তে আরও জানা গেছে যে, ছাঙ্গুর বাবা ৫০০ কোটি টাকার বিদেশি অর্থায়ন পেয়েছিলেন।
দুবাইয়ে সাক্ষাৎ এবং ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তদন্ত
বিদেশি অর্থায়নের নেটওয়ার্ক পরিচালনায় নীতু ওরফে নাসরিন এবং তাঁর স্বামী নবীন রোহরার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল। এই দুজনই দুবাইয়ের নেটওয়ার্কের সঙ্গে বাবার যোগাযোগ করিয়েছিলেন। ছাঙ্গুর বাবা ২০১৮ সালে দুবাইও গিয়েছিলেন, যেখানে বিদেশি এজেন্টদের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ হয়।
তদন্তে আরও জানা গেছে যে, নবীন রোহরা বিদেশি অর্থায়নের জন্য মোট ৮টি বিদেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলেছিলেন। এখন এই অ্যাকাউন্টগুলিরও তদন্ত চলছে।
শুধু ধর্মান্তকরণ নয়, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের অংশ
ছাঙ্গুর বাবার বিরুদ্ধে হওয়া কার্যকলাপ শুধুমাত্র অবৈধ নির্মাণ এবং ধর্মান্তকরণের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তদন্তকারী সংস্থাগুলি এটিকে একটি বৃহত্তর দেশবিরোধী নেটওয়ার্কের সঙ্গে যুক্ত করে দেখছে। বাবার বিরুদ্ধে কেবল অবৈধ সম্পত্তি অর্জনের অভিযোগই নয়, সেই সম্পত্তি রাষ্ট্রবিরোধী কার্যকলাপে ব্যবহারেরও অভিযোগ রয়েছে।
বাবার নেটওয়ার্ক উত্তরপ্রদেশের কয়েকটি জেলার বাইরে দেশের অন্যান্য অংশেও সক্রিয় ছিল। বিশেষ বিষয় হল, এই নেটওয়ার্কে মহিলা, বৃদ্ধ এবং সমাজের দুর্বল শ্রেণির মানুষদের নিশানা করা হয়েছিল।