মেডিক্যাল ভিসায় এসেই নিগ্রহের অভিযোগ বাংলাদেশি মহিলার বিস্ফোরক অভিযোগে তোলপাড় মুকুন্দপুর

মেডিক্যাল ভিসায় এসেই নিগ্রহের অভিযোগ বাংলাদেশি মহিলার বিস্ফোরক অভিযোগে তোলপাড় মুকুন্দপুর

মেডিক্যাল ভিসায় কলকাতায় প্রবেশ, অভিযোগের ঝড় বাংলাদেশি মহিলার

NRC, NPR ও SIR বিতর্ক যখন দেশজুড়ে উত্তাল, ঠিক সেই সময় মুকুন্দপুর থেকে উঠে এল এক চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। বাংলাদেশ থেকে মেডিক্যাল ভিসায় ভারতে আসা এক মহিলার দাবি, তিনি চিকিৎসার উদ্দেশ্যে মা-বাবাকে নিয়ে কলকাতায় আসেন। কিন্তু শহরে পা রাখতেই ঘটতে থাকে অপ্রত্যাশিত ঘটনা, যার কেন্দ্রে তাঁর স্বামী।

স্বামীর বিরুদ্ধে অবৈধ বসবাসের অভিযোগ, সঙ্গে শারীরিক নিগ্রহের অভিযোগও

অভিযোগকারিণীর দাবি, তাঁর স্বামী একজন বাংলাদেশি নাগরিক, যিনি ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে মুকুন্দপুরে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। শুধু বসবাস নয়, সেখানে তিনি একটি ফ্ল্যাট কিনে ফেলেছেন, যেটির অর্থও নাকি ওই মহিলা নিজে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই বাড়িতে এসেই তিনি স্বামীর ও তাঁর দলবল দ্বারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হন বলে অভিযোগ।

বাড়িতে ঢুকতেই হুমকি, মারধর, প্রাণে আঘাত— ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতা!

মহিলার বক্তব্য, ফ্ল্যাটে প্রবেশ করার পরেই স্বামী তাঁর উপর চড়াও হন, সঙ্গে ছিল কয়েকজন সঙ্গীও। চলতে থাকে মারধর ও শারীরিক হেনস্থা। শুধু তিনিই নন, তাঁর মা ও বাবার উপরেও প্রাণঘাতী হামলার চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। এমন আচরণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন তিনি ও তাঁর পরিবার।

নরেন্দ্রপুর থানায় আশ্রয়, অভিযোগ নিতে নারাজ পুলিশ?

এই নির্যাতনের হাত থেকে বাঁচতে কোনওরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়ে তিনি ছুটে যান নরেন্দ্রপুর থানায়। সেখান থেকে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে বাড়িতে পৌঁছে দেয় ঠিকই, তবে তাঁর অভিযোগ লিখিত আকারে গ্রহণ করেনি বলেই অভিযোগ। মহিলার দাবি, পুলিশ তাঁকে আশ্বাস দিলেও, অভিযোগ দায়েরের কোনও পদক্ষেপ নেয়নি।

আতঙ্কে দিন কাটছে, প্রশাসনের কাছে জীবনের নিরাপত্তার দাবি

এই ঘটনার পর থেকে চরম মানসিক চাপে রয়েছেন অভিযোগকারী মহিলা। সংবাদমাধ্যমকে জানান, তিনি এখন প্রতিটি মুহূর্তে আতঙ্কে কাটাচ্ছেন। কোনওরকম সরকারি সাহায্য না পেলে তাঁর ও পরিবারের সদস্যদের প্রাণ সংশয় রয়েছে বলেই আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তিনি। তাঁর দাবি, প্রশাসন যদি পাশে দাঁড়ায়, তবেই হয়তো জীবনে ফিরতে পারবেন।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রকের ভূমিকা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন

এক বাংলাদেশি নাগরিক কীভাবে দীর্ঘদিন ধরে ভারতের মাটিতে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন, তাও আবার ফ্ল্যাট কিনে? এই প্রশ্ন উঠছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রকের তরফেও। মেডিক্যাল ভিসা দিয়ে প্রবেশ করেও কীভাবে কেউ এইভাবে বেআইনি বসবাস চালিয়ে যেতে পারেন, তা নিয়ে কড়া তদন্ত শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সীমান্ত পারাপার, ফ্ল্যাট কেনা ও ভিসার অপব্যবহার— তদন্তের দাবি আইনজ্ঞদের

বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অভিবাসন বিশেষজ্ঞরাও। তাঁদের মতে, যদি অভিযোগকারিণীর বক্তব্য সত্যি হয়, তবে এটা শুধু এক নারীর নির্যাতনের ঘটনা নয়, বরং তা জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্নও। কিভাবে বাংলাদেশি নাগরিক ভারতে এসে ফ্ল্যাট কিনছেন, বসবাস করছেন, এবং একজন মহিলাকে নির্যাতন করছেন— তার প্রতিটি ধাপে তদন্ত জরুরি।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশে জারি হতে পারে তদন্ত নির্দেশিকা

সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসন ইতিমধ্যেই এই ঘটনার নথি সংগ্রহ করছে এবং খুব শীঘ্রই রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগকে তদন্তে নামানো হতে পারে। সীমান্তবর্তী এলাকা ও মহানগরীর বেসরকারি হাসপাতালগুলির মাধ্যমে প্রবেশ করা ভিসাধারীদের উপর নজরদারি আরও জোরদার করার কথাও ভাবা হচ্ছে।

Leave a comment