পুজোকে ঘিরে রাজনৈতিক কূটচাল, ভোটের আগে শাসক-বিরোধীর সমান প্রস্তুতি

পুজোকে ঘিরে রাজনৈতিক কূটচাল, ভোটের আগে শাসক-বিরোধীর সমান প্রস্তুতি

কলকাতা: বিধানসভা ভোটের আগে দুর্গাপুজোকে ঘিরে শুরু হয়েছে জনসংযোগের রাজনীতি। শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস স্পষ্ট নির্দেশ দিয়েছে, সাংসদ থেকে বিধায়ক—সবাইকে তাদের এলাকার প্রতিটি পুজো মণ্ডপে উপস্থিত থাকতে হবে। একাধিকবার মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে এলাকার সমস্যার খোঁজখবর নেওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, বিজেপিও পিছিয়ে নেই। তারাও ‘বাঙালি অস্মিতা’র প্রশ্নে জনসংযোগ জোরদার করতে নতুন কর্মসূচি নিয়েছে। সব মিলিয়ে, পুজোর আবহে রাজনৈতিক সমীকরণ আরও ঘনীভূত হচ্ছে।

শাসক দলের তৎপরতা

শাসক দল জানিয়েছে, প্রতিটি বুথ স্তর পর্যন্ত নেতা-কর্মীদের পুজো মণ্ডপে যেতে হবে। ‘আমাদের পাড়া, আমাদের সমাধান’ প্রকল্পের মাধ্যমে এলাকার সমস্যা ও সমাধান সরাসরি জানতে চাওয়া হয়েছে। পুজো শেষে বিজয়া সম্মিলনীর আয়োজনও হবে, যেখানে সাধারণ মানুষের সঙ্গে আবারও নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন করবেন নেতারা।

বিজেপির পাল্টা কর্মসূচি

অন্যদিকে বিজেপি পুজোর আবেগকে সামনে রেখে ‘বাঙালি মিলন সমারোহ’ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। এটি ‘দুর্গা সহায়’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজ্য জুড়ে সংগঠিত হবে। বাঙালি সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য রক্ষার দাবি তুলে জনসংযোগ বাড়ানোর চেষ্টা করছে বিজেপি।

বাঙালি অস্মিতা ঘিরে লড়াই

চলতি বছরে একাধিক পুজো বাঙালি ঐতিহ্যের বার্তা দিচ্ছে। শাসক দলের দাবি, বাঙালি সংস্কৃতি রক্ষার বিষয়টি তৃণমূল বহুদিন ধরেই গুরুত্ব দিয়ে আসছে। কিন্তু বিজেপির নতুন কর্মসূচি সরাসরি এই আবেগকে হাতিয়ার করেই ভোটের আগে জনসংযোগের কৌশল হিসেবে তৈরি হয়েছে।

সর্বভারতীয় নেতৃত্বের নজর

বিজেপি সূত্রে খবর, এই কর্মসূচি শুধুমাত্র রাজ্য নয়, দেশের অন্যান্য প্রান্তে এবং বিদেশে অনুষ্ঠিত দুর্গাপুজোতেও কার্যকর হবে। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক দুষ্মন্ত কুমার গৌতম ও তরুণ চুঘকে এই কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যে একজন করে নেতাকে বিশেষ দায়িত্বে রাখা হচ্ছে।

ভোটের আগে সাংস্কৃতিক লড়াই

শাসক ও বিরোধী উভয়েই এখন স্পষ্টভাবে বুঝিয়ে দিচ্ছে, দুর্গাপুজো শুধু উৎসব নয়, বরং জনসংযোগের সেরা প্ল্যাটফর্ম। সাংস্কৃতিক আবেগ, বাঙালি অস্মিতা আর মণ্ডপে ভিড়—সবকিছুই এবার নির্বাচনী সমীকরণকে প্রভাবিত করতে চলেছে।

ভোটের আগে দুর্গাপুজোকে সামনে রেখে রাজ্য রাজনীতিতে তৎপর শাসক ও বিরোধী। পাড়ায় পাড়ায় পুজো মণ্ডপে হাজিরা, মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানো, সাংস্কৃতিক আবেগকে কাজে লাগানো—সবকিছুতেই এখন শীর্ষ অগ্রাধিকার। বাঙালি অস্মিতা ঘিরে জনসংযোগের নতুন লড়াই শুরু করেছে তৃণমূল ও বিজেপি উভয়েই।

Leave a comment