বৃহস্পতিবার রাতে রক্তাক্ত রাজনৈতিক ঘটনার সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়। তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁকে প্রথমে গুলি, পরে ধারালো অস্ত্রে কুপিয়ে খুন করার ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়ায় এলাকায়। ঘটনাস্থল ছিল কার্যত বিস্ফোরক।
বাইকেই ফিরছিলেন বাড়ি, মাঝপথেই থামল প্রাণভ্রমণ
সন্ধ্যায় একাধিক রাজনৈতিক কর্মসূচি শেষ করে চালতাবেড়িয়ায় নিজের বাড়িতে ফিরছিলেন রাজ্জাক খাঁ। আচমকা উত্তর কাশীপুর থানার অন্তর্গত এলাকায় পথ আটকায় একদল দুষ্কৃতী। প্রথমে একের পর এক গুলি, তারপর রক্তাক্ত রাজ্জাককে ধারালো অস্ত্রে কোপানো হয় নির্মমভাবে।
গুলি ও কোপের পর মৃত্যু নিশ্চিত, হাসপাতালে নিয়ে গেলে মৃত ঘোষণা
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, রাজ্জাক খাঁকে এমনভাবে হামলা করা হয় যেন মৃত্যু নিশ্চিত হয়। রক্তে ভেসে যাওয়া দেহ নিয়ে যাওয়া হয় জিরানগাছা হাসপাতালে। চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঘটনাস্থলে রাতেই পুলিশ কমিশনার, তল্লাশি শুরু ডগ স্কোয়াডে
রাতেই কলকাতা পুলিশের কমিশনার মনোজ ভার্মা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। তাঁর সঙ্গে ছিলেন উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এলাকা ঘিরে ফেলে চলে চিরুনি তল্লাশি। কলকাতা পুলিশের ডগ স্কোয়াডও নামানো হয় তদন্তে।
ভাঙড় থানায় বৈঠক, কমিশনার জানালেন, ‘তদন্ত চলছে’
ঘটনার সময়কাল রাত সাড়ে ন’টা থেকে দশটার মধ্যে বলে জানান কমিশনার ভার্মা। সাংবাদিকদের সামনে তিনি বলেন, “তদন্ত চলছে। এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট আসার পর বিস্তারিত বোঝা যাবে।”
রাজনৈতিক যোগ? তৃণমূল বিধায়কের অভিযোগের তির আইএসএফ-এর দিকে
দলীয় কর্মীর মৃত্যুতে রাতেই ছুটে যান ভাঙড়ের বিধায়ক ও তৃণমূলের পর্যবেক্ষক শওকত মোল্লা। মৃত নেতা তাঁর ঘনিষ্ঠ বলে এলাকায় পরিচিত। শওকতের সাফ অভিযোগ, এই হামলার পিছনে রয়েছে আইএসএফ। যদিও আইএসএফ নেতৃত্ব সেই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
ময়নাতদন্তের জন্য RG Kar-এ দেহ পাঠানো, গ্রামে চাপা উত্তেজনা
রাজ্জাকের দেহ রাতেই পাঠানো হয় আরজি কর হাসপাতালে ময়নাতদন্তের জন্য। গোটা এলাকায় থমথমে পরিবেশ। যে কোনও সময় বড় ধরনের বিশৃঙ্খলা হওয়ার আশঙ্কায় মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশবাহিনী।
তদন্তের গতি বাড়াতে তৎপর পুলিশ, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার ইঙ্গিত
ঘটনার প্রকৃতি দেখে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিচ্ছে না পুলিশ। কলকাতা পুলিশ ও ভাঙড় থানা যৌথভাবে তদন্ত করছে। এলাকায় সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে।ভাঙড়ের বুকে ফের রক্তাক্ত রাজনীতি। তৃণমূল নেতা রাজ্জাক খাঁকে গুলি করে ও কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় উত্তেজনার পারদ চড়ছে। পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখেছেন। অভিযোগের আঙুল উঠেছে আইএসএফ-এর দিকে, যদিও তারা তা অস্বীকার করেছে। গোটা ঘটনায় আবারও ভাঙড় হয়ে উঠেছে বাংলার রাজনৈতিক হিংসার প্রধান মঞ্চ।