বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর জন্য CPI আসন ভাগাভাগির আগেই তাদের প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছে। এই পদক্ষেপ মহাজোটে টানাপোড়েন বাড়িয়েছে। দলটি ছয়টির বেশি আসনে প্রার্থী চাইছে এবং শীঘ্রই দ্বিতীয় তালিকা প্রকাশ করবে।
Bihar Election 2025: বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-কে ঘিরে প্রস্তুতি তুঙ্গে, কিন্তু INDIA জোট (মহাজোট)-এর মধ্যে আসন ভাগাভাগি নিয়ে টানাপোড়েন তীব্র হয়েছে। ভারতীয় কমিউনিস্ট পার্টি (CPI) আসন ভাগাভাগি নিয়ে ঐকমত্য হওয়ার আগেই তাদের প্রার্থীদের প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছে। দলের এই পদক্ষেপে জোটের মধ্যে মতানৈক্যের সৃষ্টি হয়েছে। রাজনৈতিক মহলে এটিকে "চাপের রাজনীতি" হিসেবে দেখা হচ্ছে।
CPI প্রথম তালিকা প্রকাশ করল
পাটনা থেকে প্রকাশিত সরকারি চিঠিতে CPI বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২৫-এর জন্য তাদের ছয়জন প্রার্থীর প্রথম তালিকা প্রকাশ করেছে। এই তালিকায় তেঘড়া থেকে রামরতন সিং, বাখরি (সু.) থেকে সূর্যকান্ত পাসওয়ান, বাছওয়াড়া থেকে অবধেশ কুমার রায়, বাঁকা থেকে সঞ্জয় কুমার, হরলাখি থেকে রাকেশ কুমার পান্ডে এবং ঝंझারপুর থেকে রাম নারায়ণ যাদবের নাম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। দল জানিয়েছে যে, এই সকল প্রার্থীকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচনী প্রতীক (symbol) প্রদান করা হবে এবং তাদের INDIA জোটের প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে।
দ্বিতীয় তালিকাও শীঘ্রই প্রকাশ হবে
CPI তাদের চিঠিতে এও স্পষ্ট করেছে যে, দলটি শীঘ্রই দ্বিতীয় তালিকাও প্রকাশ করবে। এই তালিকায় গোহ, করগহর, বেলদৌড়, বিহারশরিফ, রাজা পাকার (সু.), কেসরিয়া, চনপটিয়া এবং বিক্রম আসনে প্রার্থীরা ঘোষিত হবেন। তবে, দল এও যোগ করেছে যে, এই আসনগুলির জন্য নাম তখনই চূড়ান্ত করা হবে যখন INDIA জোটের মধ্যে ঐকমত্য তৈরি হবে।
৬টির বেশি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কৌশল
প্রথম তালিকা থেকে এটি স্পষ্ট ইঙ্গিত যে, এবার CPI নিজেদের জন্য ছয়টির বেশি আসন চাইছে। গতবার দলটি বিহার বিধানসভা নির্বাচনে ছয়টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল এবং দুটিতে জয়লাভ করেছিল। কিন্তু এখন আটটি অতিরিক্ত বিধানসভা কেন্দ্রের নাম উল্লেখ করে দলটি তাদের অভিপ্রায় প্রকাশ করেছে যে, তারা এবার আরও বেশি অংশীদারিত্বের দাবি করবে। এটি CPI-এর একটি কৌশলগত পদক্ষেপ বলেও মনে করা হচ্ছে যাতে জোটে তারা আরও বেশি আসন পেতে পারে।
মহাজোটে টানাপোড়েন বাড়তে পারে
INDIA জোটে CPI-এর এই পদক্ষেপ অন্য দলগুলির জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। আরজেডি (RJD) এবং কংগ্রেসের মতো দলগুলি এখনও আসন ভাগাভাগি নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে CPI কর্তৃক তাদের প্রার্থীদের ঘোষণা জোটে উত্তেজনা বাড়াতে পারে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপ CPI-এর "চাপের রাজনীতি"-র অংশ, যাতে আলোচনায় তাদের একটি শক্তিশালী অবস্থান তৈরি হয়।
২০২০ সালের নির্বাচনে CPI এবং বাম দলগুলির পারফরম্যান্স
বিহার বিধানসভা নির্বাচন ২০২০-তে বামপন্থী দলগুলির পারফরম্যান্স শক্তিশালী ছিল। CPI(ML) ১৯টি আসনের মধ্যে ১২টিতে জয়লাভ করেছিল, যা বামপন্থী দলগুলির মধ্যে সেরা পারফরম্যান্স ছিল। CPI সেই নির্বাচনে ছয়টি আসনে প্রার্থী দিয়েছিল এবং দুটিতে জয়ী হয়েছিল। এই ভিত্তির উপর নির্ভর করে এখন দল মনে করে যে, তারা মহাজোটে একটি বড় ভূমিকা পালনের অধিকারী।
হরলাখি থেকে ঐতিহ্য বজায় থাকবে
CPI এবারও পুরনো এবং নির্ভরযোগ্য মুখের উপর আস্থা রেখেছে। হরলাখি আসন থেকে দল প্রাক্তন বিধায়ক এবং রাজ্য সম্পাদক রাম নরেশ পান্ডের পুত্র রাকেশ কুমার পান্ডেকে প্রার্থী করেছে। এই পদক্ষেপ দলের "রাজনৈতিক ঐতিহ্য" এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ইঙ্গিত দেয়। অন্যদিকে, ঝঞ্ঝারপুর আসন থেকে পুরনো নেতা রাম নারায়ণ যাদবকে আবার সুযোগ দেওয়া হয়েছে, যাকে স্থানীয় স্তরে একজন শক্তিশালী প্রার্থী হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
আসন ভাগাভাগি নিয়ে এখন নজর RJD এবং কংগ্রেসের দিকে
এখন সবার নজর RJD এবং কংগ্রেসের প্রতিক্রিয়ার উপর। উভয় দলের সামনে চ্যালেঞ্জ হল যে তারা CPI-এর এই সিদ্ধান্তকে কীভাবে সামলায়। যদি জোটে ঐকমত্য না হয়, তাহলে আসন ভাগাভাগি এবং প্রার্থী নির্বাচনের প্রক্রিয়া আরও জটিল হতে পারে। এর ফলে বিরোধী জোটের ঐক্যের উপরও প্রভাব পড়তে পারে।