জয়সলমের-যোধপুর হাইওয়েতে পাঁচ দিন পুরনো বাসে আগুন লেগে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। গুরুতর আহত ১৫ জনকে যোধপুরে রেফার করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেছেন এবং মুখ্যমন্ত্রী পরিস্থিতি পরিদর্শন করেছেন।
জয়সলমের: রাজস্থানের জয়সলমের-যোধপুর হাইওয়েতে মঙ্গলবার দুপুরে একটি ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। একটি নতুন বেসরকারি বাসে হঠাৎ আগুন লেগে যায়, যার ফলে ২০ জন যাত্রীর জীবন্ত দগ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়। পুলিশ ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, বাসে মোট ৫৭ জন যাত্রী ছিলেন। এই বাসটি জয়সলমের থেকে যোধপুর যাচ্ছিল। প্রাথমিক তদন্তে শর্ট সার্কিটকে আগুনের কারণ হিসেবে ধরা হচ্ছে। এই দুর্ঘটনা গোটা এলাকায় শোক ও উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বাসের অবস্থা
বাসটি মাত্র পাঁচ দিন আগে কেনা হয়েছিল এবং দুপুর ৩টেয় জয়সলমের থেকে রওনা হয়েছিল। হাইওয়েতে হঠাৎ বাসের পেছনের অংশ থেকে ধোঁয়া উঠতে শুরু করে। চালক সঙ্গে সঙ্গে বাসটি রাস্তার পাশে থামান, কিন্তু দেখতে দেখতে আগুন পুরো গাড়িটিকে গ্রাস করে ফেলে। স্থানীয় মানুষ এবং পথচারীরা উদ্ধারের চেষ্টা করেন, কিন্তু আগুনের তীব্রতার সামনে তাঁদের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
তৎক্ষণাৎ ত্রাণকার্য চলছে
আগুন লাগার খবর পেতেই ফায়ার ব্রিগেড এবং পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। স্থানীয় মানুষরাও আহতদের বাঁচাতে সাহায্য করেন। জেলা প্রশাসন অবিলম্বে ত্রাণকার্য শুরু করে। জেলা কালেক্টর প্রতাপ সিং কর্মকর্তাদের নির্দেশ দেন যাতে আহতদের অবিলম্বে চিকিৎসা সুবিধা দেওয়া হয়। পরিবার এবং যাত্রীদের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনের জন্য হেল্পলাইন নম্বরও জারি করা হয়।
আহতদের অবস্থা ও চিকিৎসা
এই দুর্ঘটনায় গুরুতর দগ্ধ অবস্থায় ১৫ জন যাত্রীকে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে চারজন মহিলা এবং দুটি শিশু রয়েছে। কিছু আহত ব্যক্তির ৭০ শতাংশ পর্যন্ত পুড়ে গেছে। প্রাথমিক চিকিৎসার পর উন্নত চিকিৎসার জন্য আহতদের যোধপুরে রেফার করা হয়। ন্যাশনাল হাইওয়ে ১২৫-এ গ্রিন করিডোর তৈরি করে আটটি অ্যাম্বুলেন্স এবং পুলিশি এসকোর্টের সাহায্যে আহতদের যোধপুর হাসপাতালে পৌঁছানো হয়।
মৃতদের শনাক্তকরণের জন্য ডিএনএ পরীক্ষা
জেলা কালেক্টর জানিয়েছেন যে বাসটি সম্পূর্ণ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। অনেক মৃতদেহ এমনভাবে পুড়ে গেছে যে তাদের শনাক্ত করা অসম্ভব। এই কারণে যোধপুর থেকে ডিএনএ এবং ফরেনসিক দল ডাকা হয়েছে। কালেক্টর বলেছেন যে মৃতদের পরিচয় ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে শনাক্ত করা হবে এবং এর পরেই দেহগুলি তাদের পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
মুখ্যমন্ত্রীর পরিদর্শন
দুর্ঘটনার গুরুত্ব বিবেচনা করে রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী ভজন লাল শর্মা মঙ্গলবার রাতে জয়সলমের পৌঁছান। তিনি পুড়ে যাওয়া বাসটি পরিদর্শন করেন এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির প্রতি সমবেদনা জানান। মুখ্যমন্ত্রী আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন এবং কর্মকর্তাদের ত্রাণকার্য আরও দ্রুত করার নির্দেশ দেন।
প্রধানমন্ত্রীর শোক প্রকাশ
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই দুর্ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন যে জয়সলমেরে সংঘটিত দুর্ঘটনায় প্রাণহানি এবং সম্পত্তির ক্ষতিতে তিনি অত্যন্ত ব্যথিত। প্রধানমন্ত্রী নিহতদের পরিবারের জন্য পিএমএনআরএফ থেকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের জন্য ৫০,০০০ টাকা আর্থিক অনুদান দেওয়ার ঘোষণা করেছেন।