বিহারের কৈমুর জেলায় তীজের দিনে তিন সন্তান মায়ের সাথে পুকুরে স্নান করতে গিয়েছিল, তাদের মধ্যে দুজনের ডুবে মৃত্যু হয়েছে। তৃতীয় মেয়েটির অবস্থা গুরুতর। পরিবার ও গ্রামে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
কৈমুর: বিহারের কৈমুর জেলার রামগড় থানা এলাকায় গত মঙ্গলবার (২৬শে আগস্ট, ২০২৫) তীজের দিনে এক অত্যন্ত মর্মান্তিক এবং হৃদয়বিদারক দুর্ঘটনা ঘটেছে। রহারী গ্রামের পোখর (পুকুর)-এ মায়ের সাথে স্নান করতে যাওয়া তিনটি শিশু হঠাৎ গভীর জলে চলে যায় এবং ডুবতে শুরু করে। তাদের মধ্যে দুটি শিশুর ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়, এবং একটি মেয়ে গুরুতরভাবে আহত হয়। এই তিনটি শিশুই ভাই-বোন ছিল।
ঘটনাটি পুরো পরিবার এবং গ্রামকে গভীর শোকের মধ্যে ফেলেছে। দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই পুলিশ এবং গ্রামবাসীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। মৃতদেহ দুটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে, এবং গুরুতর আহত মেয়েটিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য অন্য হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।
দুর্ঘটনায় দুই শিশুর মৃত্যু ও একজন গুরুতর আহত
স্থানীয় হাসপাতালের ডাক্তাররা নিশ্চিত করেছেন যে গজেন্দ্র যাদবের কন্যা অংশিকা কুমারী (১৩ বছর) এবং পুত্র প্রিয়াংশু কুমারের (১১ বছর) মৃত্যু হয়েছে। তৃতীয় শিশু খুশি কুমারীর অবস্থা গুরুতর এবং তাকে বড় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে।
ডাক্তাররা জানিয়েছেন যে শিশুদের দ্রুত হাসপাতালে আনা হয়েছিল, তবে দুই শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। দুর্ঘটনার কারণে পুরো গ্রামে শোকের আবহাওয়া তৈরি হয়েছে এবং তীজের উৎসবের আনন্দের পরিবেশ বদলে গেছে।
দুর্ঘটনায় পরিবার ও গ্রামে শোক
ঘটনাটি শিশুদের পরিবারকে গভীর শোকের মধ্যে ফেলেছে। বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা তাদের হারানো সন্তানদের জন্য ক্রমাগত কাঁদছেন। গ্রামের লোকজনও এই দুর্ঘটনার পরে স্তম্ভিত এবং পুকুরের আশেপাশে নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান যে পুকুরে স্নান করা শিশুদের দৈনন্দিন কার্যকলাপ ছিল, কিন্তু এইবার গভীর জল এবং আকস্মিক পরিস্থিতিতে এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। এই ঘটনা পরিবার এবং সমাজ উভয়ের জন্য একটি সতর্কতা যে জল-স্থলে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে সচেতনতা জরুরি।
রামগড়ের বিধায়ক দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন
রামগড়ের বিধায়ক অশোক সিং জানিয়েছেন যে এই ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। তিনি বলেন যে ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই জেলাশাসকের সাথে কথা বলা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে সরকারি ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়েছে।
স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশও দুর্ঘটনার গভীর তদন্তে নেমেছে। পুলিশ জানিয়েছে যে পরিবারকে সম্ভাব্য সবরকম সহায়তা প্রদান করা হবে এবং পুকুরের আশেপাশে ভবিষ্যতে এমন দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
পুকুরে নিরাপত্তার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে
দুর্ঘটনাটি স্পষ্ট করে দিয়েছে যে পুকুর এবং জলাশয়ে শিশুদের সুরক্ষা এবং সতর্কতা কতটা জরুরি। অভিভাবকদের এবং গ্রামবাসীদের শিশুদের উপর নজর রাখার এবং নিরাপদ স্থানেই স্নান করার পরামর্শ দেওয়ার প্রয়োজন।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ভবিষ্যতে এ ধরনের দুর্ঘটনা রোধ করার জন্য পুকুরের আশেপাশে সুরক্ষা সংকেত, রেলিং এবং শিশুদের জন্য নজরদারির মতো সাবধানতা অবলম্বন করা জরুরি।