বিহার মহাজোটে চূড়ান্ত মুখ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রী মুখ: তেজস্বী যাদব ও মুকেশ সাহানি

বিহার মহাজোটে চূড়ান্ত মুখ্যমন্ত্রী-উপমুখ্যমন্ত্রী মুখ: তেজস্বী যাদব ও মুকেশ সাহানি
সর্বশেষ আপডেট: 3 ঘণ্টা আগে

বিহার মহাজোট মুখ্যমন্ত্রী তেজস্বী যাদব এবং উপমুখ্যমন্ত্রী মুকেশ সাহানির মুখ নির্ধারিত করেছে। সাহানির চাপ এবং কংগ্রেস হাইকমান্ডের হস্তক্ষেপে মল্লা-নিষাদ সম্প্রদায়ের সমীকরণ তৈরি করে জোট শক্তিশালী হয়েছে।

বিহারের রাজনীতি: বিহারের রাজনীতিতে বৃহস্পতিবারের দিনটি বেশ কিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনার জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবে। সকালে তেজস্বী যাদবকে মহাজোটের মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কথা ছিল, কিন্তু দুপুর নাগাদ ভিআইপি প্রধান মুকেশ সাহানি শিরোনামে এসে পুরো সমীকরণ পাল্টে দেন। পাটনার হোটেল মৌর্যে মহাজোটের বৈঠকে সাহানি উপমুখ্যমন্ত্রী পদের শর্ত দেন, যার ফলে জোটে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।

সকালের রাজনৈতিক উত্তেজনা

সূত্র অনুযায়ী, সকাল ১১:৩০টায় তেজস্বী যাদবকে মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করার কথা ছিল। কিন্তু সেই সময়েই মুকেশ সাহানি স্পষ্ট ভাষায় বলেন যে, যদি তেজস্বী মুখ্যমন্ত্রী হন, তাহলে তাঁকে ডেপুটি সিএম (উপমুখ্যমন্ত্রী) করা উচিত। সাহানির এই দাবি জোটের নেতাদের জন্য একটি চ্যালেঞ্জ তৈরি করে। সাহানি হোটেল মৌর্যের একটি স্যুইটে ছিলেন, যেখানে কংগ্রেস নেতা অশোক গেহলট এবং বাম দলগুলির নেতারাও উপস্থিত ছিলেন।

সাহানির যুক্তি ছিল যে, তিনি সীমিত সংখ্যক (১৫টি) আসনে এই আশায় সমঝোতা করেছেন যে তিনি উপমুখ্যমন্ত্রীর পদ পাবেন। তিনি বলেন, “যদি আমি এই পদ না পাই, তাহলে আমি আমার সমর্থকদের কাছে কীভাবে যাব?” এই শর্তটি জোটের মধ্যে তাৎক্ষণিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে।

কংগ্রেস হাইকমান্ডের হস্তক্ষেপ

মহাজোটের নেতারা দিল্লিতে কংগ্রেস হাইকমান্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। জবাবে বলা হয় যে, “সাহানিকে ডেপুটি সিএম পদপ্রার্থী হিসেবে ঘোষণা করে দিন, মল্লা সম্প্রদায়ের ভোট আমাদের জন্য জরুরি।” বাম দলগুলির নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য্যের কাছ থেকেও সম্মতি নেওয়া হয়। এভাবেই স্থির হয় যে, তেজস্বী যাদব মুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী এবং মুকেশ সাহানি উপমুখ্যমন্ত্রী পদপ্রার্থী হবেন।

মল্লা এবং নিষাদ সম্প্রদায়ের প্রভাব

রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বিহারে মল্লা এবং নিষাদ সম্প্রদায়ের জনসংখ্যা প্রায় নয় শতাংশ। এই সম্প্রদায় প্রায়শই নির্বাচনে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। মুকেশ সাহানি এই সম্প্রদায়ের একজন প্রধান নেতা হিসেবে বিবেচিত হন এবং এই কারণেই মহাজোটে তিনি এত গুরুত্ব পেয়েছেন।

পাটনার হোটেলের বৈঠকের প্রভাব

পাটনার হোটেল মৌর্যে অনুষ্ঠিত এই রুদ্ধদ্বার বৈঠকটি মহাজোটের কৌশল এবং ক্ষমতা সমীকরণকে পরিবর্তনকারী হিসাবে প্রমাণিত হয়েছে। এই বৈঠকের পর সাহানি শুধুমাত্র ভিআইপি পার্টির নেতা হিসেবে থাকেননি, বরং রাজ্যের রাজনীতিতে একটি নির্ণায়ক মুখ হয়ে উঠেছেন।

নির্বাচনী কৌশলে নতুন সমীকরণ

তেজস্বী যাদবের তরুণ নেতৃত্ব এবং মুকেশ সাহানির সামাজিক সমীকরণের মেলবন্ধন মহাজোটের নির্বাচনী কৌশলের নতুন মুখ হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন যে, এই জোট তরুণ এবং মল্লা-নিষাদ সম্প্রদায়ের ভোটারদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করছে।

Leave a comment