উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, কর্ণাটক এবং ত্রিপুরায় ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) শীঘ্রই নতুন রাজ্য সভাপতিদের নাম ঘোষণা করতে পারে। দলীয় সূত্র অনুযায়ী, এই রাজ্যগুলিতে সাংগঠনিক পরিবর্তনের পরেই জাতীয় সভাপতির নির্বাচনের প্রক্রিয়াটিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে।
নয়াদিল্লি: ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি) সারা দেশে তাদের সংগঠনকে পুনরায় শক্তিশালী এবং সক্রিয় করার দিকে একটি বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে। বিশ্বস্ত সূত্র অনুযায়ী, দল শীঘ্রই উত্তর প্রদেশ, গুজরাট, কর্ণাটক এবং ত্রিপুরার মতো প্রধান রাজ্যগুলিতে নতুন রাজ্য সভাপতি নিয়োগ করতে চলেছে। এই পরিবর্তনটি দলের আসন্ন রণনীতি এবং সাংগঠনিক পুনর্গঠনের অধীনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
উত্তর প্রদেশে ভূপেন্দ্র সিং চৌধুরীর কার্যকাল শেষ
উত্তর প্রদেশ, যা দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য হিসাবে বিবেচিত হয়, সেখানে ভূপেন্দ্র সিং চৌধুরীর কার্যকাল শেষ হয়ে গেছে। ২০২২ সালে তাঁকে রাজ্য সভাপতি করা হয়েছিল, কিন্তু এখন তাঁর জায়গায় অন্য নতুন মুখ খোঁজা হচ্ছে। মনে করা হচ্ছে যে নতুন সভাপতি সাংগঠনিক মজবুতির পাশাপাশি ২০২৭ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতিকে আরও গতি দেবেন।
উত্তর প্রদেশের রাজনৈতিক জটিলতা এবং জাতিগত সমীকরণগুলিকে বিবেচনা করে, বিজেপি এমন একজন নেতাকে খুঁজছে, যিনি কেবল সংগঠনকে বিস্তার করতে পারবেন তাই নয়, রাজ্যের ভূমিস্তরের রাজনীতিতেও কার্যকরী ভূমিকা নিতে পারবেন।
গুজরাটেও পরিবর্তনের প্রস্তুতি
গুজরাট, যা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিজ রাজ্য, সেখানেও রাজ্য সভাপতির পরিবর্তনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দলীয় সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখানে আগামী এক বা দুই দিনের মধ্যে নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করা হতে পারে। গুজরাটে বিজেপির শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে এবং আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের আগে দল একজন তরুণ এবং প্রভাবশালী নেতাকে এই দায়িত্ব দিতে পারে।
কর্ণাটকে দেরি, তবে শীঘ্রই হবে ফয়সালা
দক্ষিণ ভারতে বিজেপির সবচেয়ে শক্তিশালী ঘাঁটি কর্ণাটক, কিন্তু সাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে সংগঠনকে পুনরায় সক্রিয় করার প্রয়োজন রয়েছে। এখানে এখনও পর্যন্ত সাংগঠনিক নির্বাচনে দেরির কারণে নতুন রাজ্য সভাপতি নিয়োগ করা যায়নি। যদিও, সূত্রের খবর, দলীয় নেতৃত্ব শীঘ্রই কর্ণাটকেও নতুন সভাপতির ঘোষণা করবে, যিনি দলের কৌশলগত দিকনির্দেশ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন।
ত্রিপুরাতেও পরিবর্তনের ইঙ্গিত
উত্তর-পূর্ব রাজ্য ত্রিপুরায় বর্তমানে রাজীব ভট্টাচার্য রাজ্য সভাপতি হিসেবে কর্মরত আছেন। তিনি ২০২২ সালে মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার স্থলাভিষিক্ত হন। তবে এখন ত্রিপুরাতেও নেতৃত্ব পরিবর্তনের ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, এখানেও শীঘ্রই একজন নতুন সভাপতির ঘোষণা হতে পারে, যিনি ২০২৮ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি মাথায় রেখে সংগঠনকে শক্তিশালী করবেন।
জাতীয় সভাপতির নির্বাচন এর সাথে জড়িত
বিজেপির সংবিধান স্পষ্টভাবে জানায় যে জাতীয় সভাপতির নির্বাচন তখনই হতে পারে যখন কমপক্ষে ৫০ শতাংশ রাজ্যে সাংগঠনিক নির্বাচনের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। এই কারণেই এই চারটি রাজ্যে নতুন সভাপতিদের নিয়োগকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। যখন এই নিয়োগের প্রক্রিয়া সম্পন্ন হবে, তখনই দল জাতীয় স্তরেও নেতৃত্ব নির্বাচনের দিকে পদক্ষেপ নেবে।
ভারতীয় জনতা পার্টির সাংগঠনিক নির্বাচন সম্পূর্ণরূপে দলীয় সংবিধান অনুযায়ী ধাপে ধাপে এবং স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সম্পন্ন হয়। প্রথমে মণ্ডল এবং জেলা স্তরে নির্বাচন হয়, এর পরে রাজ্য ইউনিট এবং তারপর জাতীয় সভাপতি নির্বাচন করা হয়। এই প্রক্রিয়া কেবল সংগঠনকে গণতান্ত্রিক রূপ দেয় না, বরং কর্মীদের অংশগ্রহণকেও নিশ্চিত করে।