দিল্লীর ১০টি স্কুল এবং একটি কলেজে তিন দিনের মধ্যে ইমেলের মাধ্যমে বোমা হামলার হুমকি এসেছে। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি তদন্ত জোরদার করেছে, এখনো পর্যন্ত কোনো স্থান থেকে কোনো সন্দেহজনক বস্তু উদ্ধার করা যায়নি।
বোমা হুমকি: দিল্লীর স্কুলগুলিতে বোমা মারার হুমকি অভিভাবক, ছাত্র এবং প্রশাসনকে উদ্বেগে ফেলেছে। গত তিন দিনে রাজধানীর ১০টি স্কুল এবং একটি কলেজে ইমেলের মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণের সতর্কতা জানানো হয়েছে। যদিও, এখনো পর্যন্ত কোনো স্থান থেকে কোনো সন্দেহজনক বস্তু উদ্ধার করা যায়নি। নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এই পুরো বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে নিয়ে তদন্তে নেমেছে।
বুধবার পাঁচটি স্কুলে হুমকি-পূর্ণ ইমেল
বুধবার সকালে দিল্লীর পাঁচটি নামকরা স্কুলে ইমেলের মাধ্যমে বোমা বিস্ফোরণের হুমকি দেওয়া হয়েছে। যে স্কুলগুলিতে এই মেল এসেছে তার মধ্যে দ্বারকার সেন্ট থমাস স্কুল, বসন্ত কুঞ্জের বসন্ত ভ্যালি স্কুল, হাউজ খাসের মাদার্স ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, পশ্চিম বিহারের রিচমন্ড গ্লোবাল স্কুল এবং লোদী এস্টেটের সরদার প্যাটেল বিদ্যালয় অন্তর্ভুক্ত। ইমেল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশকে খবর দেয় এবং ছাত্রদের নিরাপদে বের করে আনা হয়।
নিরাপত্তা সংস্থাগুলির দ্রুত পদক্ষেপ
ইমেল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই দিল্লী পুলিশ, বোমা নিষ্ক্রিয়করণ দল এবং দমকল বিভাগের দলগুলি সংশ্লিষ্ট স্কুলগুলিতে পৌঁছয়। নিরাপত্তার স্বার্থে পুরো এলাকা খালি করে গভীর তল্লাশি অভিযান চালানো হয়। ডগ স্কোয়াডের সাহায্যে প্রতিটি কোণা পরীক্ষা করা হয়। যদিও, এখনো পর্যন্ত কোনো স্কুল প্রাঙ্গণ থেকে কোনো বিস্ফোরক বা সন্দেহজনক বস্তু পাওয়া যায়নি।
তিন দিনে ১০টি স্কুল ও একটি কলেজ নিশানায়
দিল্লীতে বোমা হুমকির সূত্রপাত সোমবার থেকে। ১৫ই জুলাই, চাণক্যপুরীর নেভি চিলড্রেন স্কুল এবং দ্বারকার সিআরপিএফ স্কুলে হুমকি-পূর্ণ ইমেল আসে। এরপর মঙ্গলবার সেন্ট স্টিফেন কলেজ এবং আবারও দ্বারকার সেন্ট থমাস স্কুলে হুমকি আসে। এবার বুধবার পাঁচটি নতুন স্কুলকে নিশানা করা হয়েছে।
পুলিশ কোনো সূত্র পায়নি, গুজব বলে মনে করছে
এখনও পর্যন্ত তদন্তে পুলিশের কোনো সুস্পষ্ট সূত্র মেলেনি। কোনো স্কুল বা কলেজে বোমা বা বিস্ফোরক জাতীয় কিছু পাওয়া যায়নি। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ এটিকে 'হॉक्स' (গুজব) বলে মনে করছে, কিন্তু কোনো সম্ভাবনাকে উপেক্ষা না করে প্রতিটি ঘটনার গভীর তদন্ত চলছে। পুলিশ প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের মাধ্যমে মেল প্রেরকের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে।
অভিভাবকদের মধ্যে ভয় এবং প্রশাসনের চ্যালেঞ্জ
বারবার হুমকি আসার কারণে অভিভাবকদের মধ্যে ভয় ও উদ্বেগের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। অনেক অভিভাবক তাদের সন্তানদের কিছু সময়ের জন্য স্কুলে পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে, স্কুল প্রশাসনও নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে সতর্ক হয়েছে। প্রতিটি ইমেলের পরে স্কুল খালি করা, শিশুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্কুল বন্ধ রাখা প্রশাসনিক স্তরে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইমেলের ভাষা এবং প্যাটার্নের তদন্ত করছে সংস্থাগুলি
দিল্লী পুলিশের স্পেশাল সেল, সাইবার ক্রাইম টিম এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলি এখন এই মামলার বিস্তারিত তদন্তে নেমেছে। মেল পাঠানোর ভাষা, সময় এবং আইপি অ্যাড্রেস ট্র্যাক করা হচ্ছে, যাতে মেলের আসল উৎস খুঁজে বের করা যায়। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এটি কোনো সাইবার ক্রাইম গ্যাং বা মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির কাজ হতে পারে, যারা সমাজে ভয় ও আতঙ্ক ছড়াতে চায়।
স্কুলগুলিতে নিরাপত্তা বাড়ানোর নির্দেশ
দিল্লী সরকার এবং শিক্ষা বিভাগ সমস্ত স্কুলগুলিকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছে। প্রত্যেক স্কুলকে সিসিটিভি ক্যামেরার পরিস্থিতি পর্যালোচনা, জরুরি প্রতিক্রিয়া মহড়া এবং পুলিশের সঙ্গে সমন্বয় বজায় রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। কিছু স্কুলে স্থায়ী নিরাপত্তা রক্ষী এবং মেটাল ডিটেক্টর-এর মতো সরঞ্জামও লাগানো হচ্ছে।