বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন নিয়মের জেরে ব্রায়ান বেনেটের কনকাশন, ৭ দিনের জন্য মাঠের বাইরে

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপে নতুন নিয়মের জেরে ব্রায়ান বেনেটের কনকাশন, ৭ দিনের জন্য মাঠের বাইরে

বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন মরসুম শুরু হয়েছে, এবং এর সাথে আইসিসি-র নতুন নিয়মগুলির প্রভাবও মাঠে দেখা যাচ্ছে। আসলে, দক্ষিণ আফ্রিকা এবং জিম্বাবোয়ের মধ্যে খেলা টেস্ট ম্যাচের সময় জিম্বাবোয়ের ওপেনার ব্যাটসম্যান ব্রায়ান বেনেটের মাথায় বল লাগে।

খেলাধুলার খবর: বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC)-এর নতুন সিজনের শুরুতেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি) বেশ কিছু নতুন নিয়ম लागू করেছে, যার মধ্যে একটি নিয়ম জিম্বাবোয়ের তরুণ ব্যাটসম্যান ব্রায়ান বেনেটের জন্য সমস্যা হয়ে দাঁড়াল। আসলে, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে খেলা টেস্ট ম্যাচে বেনেটের মাথায় বল লাগার পর তার কনকাশন (মাথায় হালকা আঘাত) হয়। টিম ম্যানেজমেন্ট সতর্কতা অবলম্বন করে তাকে ‘রিটায়ার্ড হার্ট’ ঘোষণা করে এবং তার পরিবর্তে প্রিন্স মাসভাউরেকে সাবস্টিটিউট হিসেবে মাঠে নামায়।

এই ঘটনাটি জিম্বাবোয়ের প্রথম ইনিংসের ষষ্ঠ ওভারে ঘটে, যখন দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলার কুইনা মফাকা-র শর্ট বলে ব্রায়ান বেনেট পুল শট মারার চেষ্টা করেন, কিন্তু বল সরাসরি তার হেলমেটে লাগে। বল লাগার সঙ্গে সঙ্গেই বেনেট হাঁটু গেড়ে বসে পড়েন, এরপর ফিজিও দ্রুত মাঠে এসে তার প্রাথমিক চিকিৎসা করেন।

কয়েক মিনিট পর বেনেট নিজেকে সুস্থ অনুভব করেন এবং আবার ব্যাটিং চালিয়ে যান। তিনি সপ্তম ওভারে তিনটি বল খেলেন, কিন্তু অষ্টম ওভার শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তিনি অস্বস্তি অনুভব করেন এবং তৎক্ষণাৎ মাঠ ছেড়ে দেন। পরে জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট বোর্ড বিবৃতি দিয়ে জানায় যে, মেডিকেল স্টাফের পরীক্ষায় কনকাশনের লক্ষণ পাওয়া গেছে, যার কারণে বেনেটকে প্যাভিলিয়নে ফিরতে হয়।

আইসিসি-র নতুন কনকাশন নিয়ম মাথা ব্যথার কারণ

আইসিসি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ 2025-27 চক্র থেকে কনকাশন প্রোটোকলে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এনেছে। নতুন নিয়ম অনুসারে, যদি কোনো খেলোয়াড়কে কনকাশনের কারণে মাঠ ছাড়তে হয় এবং তার পরিবর্তে রিপ্লেসমেন্ট খেলোয়াড় নামানো হয়, তাহলে সেই খেলোয়াড় কমপক্ষে ৭ দিন কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেট খেলতে পারবে না। এর মানে হল, ব্রায়ান বেনেট এখন আগামী ৭ দিন মাঠের বাইরে থাকবেন, তিনি ফিট অনুভব করলেও।

আগে পুরনো নিয়মে কনকাশন-আক্রান্ত খেলোয়াড় ফিটনেস টেস্ট পাস করার পরেই পরের ম্যাচেই ফিরতে পারতেন, কিন্তু এখন তা হবে না। এর উদ্দেশ্য হল খেলোয়াড়দের নিরাপত্তা এবং মাথার আঘাতকে গুরুত্ব সহকারে দেখা। যদিও, এর ফলস্বরূপ আপাতত জিম্বাবোয়ে-কে ভুগতে হচ্ছে, কারণ দলের ওপেনার ব্যাটসম্যান বেনেট ভালো ফর্মে ছিলেন এবং ২৮ বলে ১৯ রান করে দলকে ভালো সূচনা এনে দেওয়ার চেষ্টা করছিলেন।

ব্রায়ান বেনেটের বাইরে চলে যাওয়ায় জিম্বাবোয়ের ব্যাটিং দুর্বল হয়ে পড়ে, এবং প্রিন্স মাসভাউরের উপর চাপ বাড়ে। মাসভাউরেকে হঠাৎ মাঠে নামতে হয়, যিনি সম্ভবত মানসিকভাবে প্রস্তুত ছিলেন না, যার ফলে দলের ছন্দও প্রভাবিত হয়।

দলের উপর গভীর প্রভাব

জিম্বাবোয়ের জন্য এই নিয়ম কোনো শাস্তির চেয়ে কম ছিল না, কারণ টিম ম্যানেজমেন্টের ধারণা ছিল বেনেট দ্রুত সুস্থ হয়ে পরের টেস্টে খেলতে পারবে। কিন্তু ৭ দিনের নিষেধাজ্ঞা লাগার পর শুধু বর্তমান টেস্ট নয়, পরের ম্যাচেও তার উপস্থিতি নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন কনকাশন নিয়ম খেলোয়াড়দের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো হলেও, যখন হঠাৎ কোনো গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে দীর্ঘ সময়ের জন্য বাইরে থাকতে হয়, তখন দলের সংমিশ্রণ বিগড়ে যেতে পারে।

জিম্বাবোয়ে ক্রিকেট বোর্ডও এটিকে চ্যালেঞ্জিং বলে উল্লেখ করেছে এবং বলেছে যে তারা আইসিসি-র নির্দেশিকাগুলি সম্মান করে, তবে ভবিষ্যতে এমন নিয়মগুলির নমনীয়তা নিয়ে বিবেচনা করা উচিত, যাতে খেলোয়াড়ের ফিটনেসের ভিত্তিতে তার প্রত্যাবর্তন নিশ্চিত করা যায়।

Leave a comment