শেয়ার বাজারের শুরু: এশীয় বাজার তেজি, মার্কিন বাজারের প্রভাব, বিনিয়োগকারীদের নজর

শেয়ার বাজারের শুরু: এশীয় বাজার তেজি, মার্কিন বাজারের প্রভাব, বিনিয়োগকারীদের নজর

সকাল ৮টায়, গিফট নিফটি ফিউচার্স ১০ পয়েন্ট কমে ২৫,৭৭৪-এ লেনদেন করছিল, যা নিফটি-৫০ এবং বিএসই সেনসেক্সের সামান্য উত্থান-পতন বা স্থিতিশীল শুরুর ইঙ্গিত দেয়।

ভারতীয় শেয়ার বাজার সম্ভবত সোমবার সামান্য চাপের সাথে শুরু করতে পারে। বিশ্ব বাজারের পরিস্থিতি ইতিবাচক থাকলেও, অভ্যন্তরীণ বাজারে গিফট নিফটিতে সামান্য পতনের কারণে বাজারের গতি সীমিত থাকতে পারে। সকাল ৮টায়, গিফট নিফটি ফিউচার্স ১০ পয়েন্ট কমে ২৫,৭৭৪-এ লেনদেন করতে দেখা গেছে, যা বাজারের সামান্য নেতিবাচক সূচনার ইঙ্গিত দিচ্ছে।

এশীয় বাজারে তেজি ভাব

সোমবার এশীয় বাজারে ভালো গতি দেখা গেছে। বিনিয়োগকারীরা জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া এবং চীনের সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক তথ্যের দিকে নজর রেখেছিল। জাপানের নিক্কেই সূচক ১.৬ শতাংশ বেড়েছে, যেখানে টপিক্স সূচক ১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। কোরিয়ার কোস্পি ০.৬৪ শতাংশ এবং অস্ট্রেলিয়ার এএসএক্স ২০০ সূচক ০.১৯ শতাংশ বেড়েছে। এই তথ্য থেকে স্পষ্ট হয়েছে যে এশিয়ার প্রধান অর্থনীতিগুলোতে উন্নতির লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।

চীনের জুন মাসের পিএমআই (PMI) ডেটা, যা নির্মাণ কার্যক্রমের মূল্যায়ন করে, বিনিয়োগকারীদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। যদি এই তথ্য প্রত্যাশার চেয়ে ভালো হয়, তবে ভারত সহ সকল উন্নয়নশীল বাজারে আস্থা আরও বাড়তে পারে।

মার্কিন বাজারের শক্তিশালী পারফরম্যান্স

শুক্রবার মার্কিন শেয়ার বাজারেও দুর্দান্ত তেজিভাব দেখা গেছে। এসঅ্যান্ডপি ৫০০ তার আগের রেকর্ড ভেঙে ৬,১৭৩.০৭ স্তরে বন্ধ হয়েছে। নাসডাক কম্পোজিটও ০.৫ শতাংশ বেড়ে নতুন উচ্চতায় বন্ধ হয়েছে। ডাউ জোন্স প্রায় ১ শতাংশ বেড়েছে। এই স্থিতিশীলতার কারণ ছিল আমেরিকার শক্তিশালী গ্রাহক চাহিদা, প্রযুক্তি খাতের শেয়ারের উত্থান এবং ইতিবাচক অর্থনৈতিক তথ্য।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জুন মাসে ব্যবসার কার্যক্রমে উল্লম্ফন দেখা গেছে, যা বিনিয়োগকারীদের আস্থা আরও বাড়িয়েছে। যদিও বাণিজ্য নীতি নিয়ে আমেরিকা ও চীনের মধ্যে উত্তেজনা এখনো বিদ্যমান, যা কিছুটা সতর্কতা বজায় রাখতে পারে।

বাজেটের আগের তথ্য বাজারের গতিপথ নির্ধারণ করবে

ভারতে বিনিয়োগকারীরা এই সপ্তাহে মে মাসের শিল্প উৎপাদন এবং উৎপাদন খাতের তথ্যের দিকে নজর রাখবেন। এই তথ্যগুলি দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং বৃদ্ধির প্রবণতা সম্পর্কে ধারণা দেবে। এছাড়াও, বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কার্যকলাপ এবং মার্কিন ডলারের বিপরীতে রুপির গতিবিধিও বাজারের গতিপথ নির্ধারণে ভূমিকা রাখবে।

এছাড়াও, আসন্ন বাজেট নিয়েও বাজারে আলোচনা চলছে। জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে পেশ হতে যাওয়া পূর্ণাঙ্গ বাজেট এর আগে বাজারের অনেক খাতে প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। সরকারের কাছ থেকে আশা করা হচ্ছে যে অবকাঠামো, প্রতিরক্ষা, আইটি এবং উৎপাদন খাতের জন্য কিছু প্রণোদনা পরিকল্পনা আনা হতে পারে।

আইপিও বাজারে তৎপরতা

আজ দুটি আইপিও-র বরাদ্দকরণের দিকে বিনিয়োগকারীদের নজর থাকবে। HDB ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস এবং সম্ভব স্টিল টিউবস-এর আইপিও-র বরাদ্দ চূড়ান্ত করা হয়েছে। যে বিনিয়োগকারীরা এই আইপিও-গুলিতে আবেদন করেছেন, তারা এখন বিএসই, এনএসই বা সংশ্লিষ্ট রেজিস্ট্রারের ওয়েবসাইটে গিয়ে তাদের স্ট্যাটাস পরীক্ষা করতে পারেন।

HDB ফাইনান্সিয়াল সার্ভিসেস-এর এই ইস্যুটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে, যেখানে সম্ভব স্টিল টিউবস মাঝারি মূলধনী বিনিয়োগকারীদের আকৃষ্ট করেছে। এই দুটি ইস্যুর তালিকা আগামী কয়েক দিনের মধ্যে হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা স্মল এবং মিড-ক্যাপ বিভাগে পুনরায় তৎপরতা সৃষ্টি করতে পারে।

এফআইআই এবং ডিআইআই-এর গতিবিধিও গুরুত্বপূর্ণ

শুক্রবার, বিদেশী প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের (এফআইআই) পক্ষ থেকে ভারতীয় বাজারে ভালো পরিমাণ কেনাকাটা দেখা গেছে। দেশীয় প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরাও (ডিআইআই) তাদের বিনিয়োগে স্থিতিশীলতা বজায় রেখেছে। যদি এই প্রবণতা সোমবারও অব্যাহত থাকে, তবে বাজারের সমর্থন পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যদিও, গিফট নিফটিতে সামান্য পতন এই ইঙ্গিত দিচ্ছে যে শুরুর দিকে বিনিয়োগকারীরা সতর্ক থাকতে পারেন।

কোন কোন খাতের উপর নজর থাকবে

সোমবার আইটি, অটো, ব্যাংকিং এবং মেটাল সেক্টরগুলি বিশেষভাবে আলোচনায় থাকতে পারে। মার্কিন বাজারে টেক শেয়ারের স্থিতিশীলতার প্রভাব ভারতের আইটি শেয়ারের উপর পড়তে পারে। এছাড়াও, অটো কোম্পানিগুলির জুন মাসের বিক্রির তথ্যও আজ থেকে আসতে শুরু করতে পারে, যা এই খাতে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করবে।

ধাতু শেয়ারগুলি চীনের শিল্প তথ্য থেকে দিকনির্দেশনা পাবে, যেখানে ব্যাংকিং শেয়ারগুলিতে বাজেট-পূর্ববর্তী সম্ভাব্য ঘোষণার প্রত্যাশায় ট্রেডিং কার্যকলাপ বজায় থাকতে পারে।

অপরিশোধিত তেল এবং রুপির দরও দিক নির্ধারণ করবে

আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দামে অস্থিরতা রয়েছে। অপরিশোধিত তেলের দাম যদি প্রতি ব্যারেল ৮৫ ডলারের উপরে থাকে, তবে তা ভারতের মতো আমদানি-নির্ভর দেশের জন্য উদ্বেগের কারণ হতে পারে। এছাড়াও, ডলারের বিপরীতে রুপির উত্থান-পতন এফআইআই-এর বিনিয়োগ কৌশলকে প্রভাবিত করতে পারে।

Leave a comment