বর্ষাকালে শিশুদের বমি-ডায়রিয়া: লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া প্রতিকার

বর্ষাকালে শিশুদের বমি-ডায়রিয়া: লক্ষণ, প্রতিরোধ এবং ঘরোয়া প্রতিকার

বর্ষাকালে শিশুদের মধ্যে বমি-ডায়রিয়ার সমস্যা খুবই সাধারণ, কারণ আর্দ্রতা এবং ময়লার কারণে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। বিশুদ্ধ জল, টাটকা খাবার এবং পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখা জরুরি। ডিহাইড্রেশন থেকে বাঁচাতে ঘন ঘন জল, ডাবের জল বা ওআরএস পান করান এবং গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন।

বৃষ্টির মরশুমে যত্ন: বর্ষাকালে শিশুদের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব পড়তে পারে, বিশেষ করে বমি-ডায়রিয়ার মতো পেটের সমস্যাগুলির ঝুঁকি বেড়ে যায়। পরিবেশে আর্দ্রতা এবং ময়লা বাড়ার কারণে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। নোংরা জল পান করা, দূষিত খাবার খাওয়া বা পরিচ্ছন্নতার নিয়ম না মানা শিশুদের মধ্যে এই সমস্যার প্রধান কারণ। সময়মতো সতর্কতা অবলম্বন এবং বিশুদ্ধ জল, টাটকা খাবার, হাত ধোয়ার অভ্যাস ও হাইড্রেশন-এর দিকে খেয়াল রাখলে বমি-ডায়রিয়া প্রতিরোধ করা সম্ভব, তবে গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি।

শিশুদের মধ্যে বমি-ডায়রিয়ার লক্ষণ

বর্ষাকালে পরিবেশে আর্দ্রতা ও ময়লা বাড়ে। এর ফলে ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই মরশুমে জল ও খাবার সহজেই সংক্রমিত হতে পারে। নোংরা জল পান করা, রাস্তার ধারের দূষিত খাবার খাওয়া, হাত না ধোয়া বা পরিচ্ছন্নতার নিয়ম না মানা শিশুদের মধ্যে বমি ও ডায়রিয়ার সমস্যার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ছোট শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে, তাই তারা এই সংক্রমণগুলিতে দ্রুত আক্রান্ত হয়।

বমি-ডায়রিয়ার সময় শিশুদের কেবল পেটের সমস্যাই নয়, অন্যান্য অনেক লক্ষণও দেখা দেয়। এর মধ্যে রয়েছে অনবরত বমি হওয়া, জ্বর, পেটে ব্যথা, মাথাব্যথা, মাথা ঘোরা, ক্লান্তি এবং ক্ষুধা কমে যাওয়া। এর সাথে শরীর থেকে জল ও প্রয়োজনীয় খনিজ পদার্থের ঘাটতি হয়, যাকে ডিহাইড্রেশন বলে। ডিহাইড্রেশনের কারণে শিশুরা নিস্তেজ হয়ে পড়ে, ঠোঁট শুকিয়ে যায় এবং প্রস্রাব কম হয়। গুরুতর অবস্থায় এটি দুর্বলতা, খিটখিটে ভাব এবং শরীরের স্বাভাবিক কার্যকারিতাতেও প্রভাব ফেলতে পারে।

বৃষ্টিতে শিশুদের বমি-ডায়রিয়া থেকে বাঁচানোর উপায়

বর্ষাকালে শিশুদের বমি-ডায়রিয়া থেকে বাঁচানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি হলো পরিচ্ছন্নতার দিকে খেয়াল রাখা। তাদের সবসময় পরিষ্কার ও ফোটানো জল পান করান। বাইরের কাঁচা বা দূষিত খাবার খাওয়ানো থেকে বিরত রাখুন। বাড়িতে টাটকা ও হালকা খাবার দিন, যা সহজে হজম হয়। খাওয়ার আগে এবং টয়লেটের পরে শিশুদের হাত ধোয়ার অভ্যাস করান।

বৃষ্টির মরশুমে খোলা জায়গায় বিক্রি হওয়া ফুচকা, কাটা ফল বা তৈলাক্ত খাবার এড়িয়ে চলা উচিত। যদি শিশু বমি-ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয় তবে তাকে ঘন ঘন জল, ডাবের জল বা ওআরএস-এর দ্রবণ পান করান যাতে শরীরে জলের ঘাটতি না হয়। গুরুতর লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত।

অন্যান্য সতর্কতা

শিশুদের সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও শুকনো কাপড় পরান। ভিজে গেলে সঙ্গে সঙ্গে কাপড় বদলে দিন। মশা থেকে বাঁচানোর জন্য মশারী বা রিপেলেন্ট ব্যবহার করুন। স্বাস্থ্যকর খাবার দিন, যার মধ্যে সবুজ শাকসবজি ও ফল অন্তর্ভুক্ত থাকে। কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখলে দেরি করবেন না এবং অবিলম্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ানো

বর্ষাকালে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। তাই শিশুদের পুষ্টিকর খাবার দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। দই, ফল, সবুজ শাকসবজি ও প্রোটিন সমৃদ্ধ খাবার তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিতভাবে শিশুদের পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামও দিন। এতে তাদের শরীরের প্রাকৃতিক সুরক্ষা ব্যবস্থা শক্তিশালী থাকে।

জল ও পরিচ্ছন্নতার বিশেষ যত্ন

বৃষ্টির মরশুমে জলের বিশুদ্ধতার দিকে খেয়াল রাখা খুব জরুরি। শিশুদের সবসময় ফোটানো বা বোতলজাত জল পান করান। রাস্তার ধারের বা নোংরা জল সেবন করতে দেবেন না। বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করা, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন বাসনপত্র ও খাবার ব্যবহার করা শিশুদের অনেক রোগ থেকে বাঁচাতে পারে।

Leave a comment