চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ: শুল্ক আরোপের হুমকি ও প্রতিক্রিয়া

চীন-আমেরিকা বাণিজ্য যুদ্ধ: শুল্ক আরোপের হুমকি ও প্রতিক্রিয়া

১লা আগস্ট থেকে আমেরিকা কর্তৃক চীনা পণ্যের উপর ভারী শুল্ক আরোপের হুমকির পর চীন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চীন বলেছে যে এর প্রভাব কেবল আমেরিকার উপর নয়, বরং সারা বিশ্বের উপর পড়বে।

শুল্ক: আমেরিকার শুল্ক সিদ্ধান্তের বিষয়ে চীন তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চীন সতর্ক করেছে যে যদি তাকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে বের করে দেওয়া হয়, তাহলে আমেরিকার সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলিকেও এর ফল ভোগ করতে হবে। ১লা আগস্ট থেকে শুল্ক কার্যকর হওয়ার আশঙ্কায় বিশ্ব বাজারে উদ্বেগ বেড়েছে।

আমেরিকা-চীন বাণিজ্য সংঘর্ষ আবার উত্তপ্ত

আমেরিকা ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য যুদ্ধের আশঙ্কা আবারও গভীর হয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক চীনা পণ্যের উপর নতুন শুল্ক আরোপের হুমকির পর চীন কঠোর প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। চীন বলেছে যে যদি ১লা আগস্ট থেকে তার পণ্যের উপর ভারী ট্যাক্স আরোপ করা হয়, তাহলে তারা কঠোর জবাব দেবে এবং এর সঙ্গে জড়িত বিশ্বজুড়ে কোম্পানি ও দেশগুলির উপরও প্রভাব পড়বে।

চীনের সতর্কতা: পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়া হবে

চীন মঙ্গলবার এক সরকারি বিবৃতিতে বলেছে যে যদি তাকে ইচ্ছাকৃতভাবে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে বের করে দেওয়া হয়, তাহলে এর প্রভাব কেবল আমেরিকার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না। চীন আমেরিকা থেকে বাণিজ্য করা অন্যান্য দেশকেও সতর্ক করেছে যে তারাও এর ফল ভোগ করার জন্য প্রস্তুত থাকুক।

চীনা সরকারি সংবাদপত্র পিপলস ডেইলি-তে মার্কিন প্রেসিডেন্টের এই বক্তব্যকে "হুমকি দেওয়ার মনোভাব" হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে এবং বলা হয়েছে যে চীনকে যদি বৈশ্বিক বাণিজ্য শৃঙ্খল থেকে আলাদা করার চেষ্টা করা হয়, তবে তার কঠোর প্রতিক্রিয়া জানানো হবে।

জুনে তৈরি হওয়া সমঝোতার উপর আবার বিপদ

উল্লেখ্য, জুন ২০২৫-এ আমেরিকা ও চীনের মধ্যে একটি সীমিত বাণিজ্যিক সমঝোতা হয়েছিল, যার ফলে বাণিজ্য যুদ্ধের পরিস্থিতি কিছু সময়ের জন্য এড়ানো গিয়েছিল। কিন্তু এখন আমেরিকা ইঙ্গিত দিয়েছে যে যদি ১২ই আগস্ট পর্যন্ত কোনো ठोस বাণিজ্য চুক্তি না হয়, তাহলে চীন থেকে আসা পণ্যের উপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক (Extra Import Tax) আরোপ করা যেতে পারে।

ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি নিয়ে চীনে অসন্তুষ্টি

চীনের অসন্তুষ্টির আরেকটি কারণ হল আমেরিকা ও ভিয়েতনামের মধ্যে সম্প্রতি হওয়া বাণিজ্য চুক্তি। এই চুক্তিতে চীন থেকে ট্রানজিট হয়ে আসা পণ্যের উপর ৪০ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের কথা বলা হয়েছে। চীন মনে করে যে তাকে বৈশ্বিক সরবরাহ শৃঙ্খল থেকে বের করার ষড়যন্ত্র চলছে এবং তারা এটিকে কোনোভাবেই বরদাস্ত করবে না।

শুল্কের পরিসংখ্যান: চীন-আমেরিকা উভয়ের উপর প্রভাব

ইনস্টিটিউট ফর ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিকস-এর মতে, বর্তমানে চীনা পণ্যগুলির উপর আমেরিকা গড়ে ৫১.১% শুল্ক আদায় করছে। অন্যদিকে, চীনও মার্কিন পণ্যের উপর গড়ে ৩২.৬% ট্যাক্স আরোপ করেছে। যদি শুল্কের এই লড়াই আরও গভীর হয়, তাহলে উভয় দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য এবং বিশ্ব অর্থনীতিতে গুরুতর প্রভাব পড়তে পারে।

Leave a comment