চীন-উত্তর কোরিয়া বৈঠকের পর পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগ: ন্যাটো একে হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে

চীন-উত্তর কোরিয়া বৈঠকের পর পশ্চিমা বিশ্বে উদ্বেগ: ন্যাটো একে হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে

বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের বৈঠকে আমেরিকা ও ইউরোপে উদ্বেগ বেড়েছে। দুই নেতা কৌশলগত সহযোগিতা এবং সার্বভৌমত্ব (sovereignty) রক্ষার অঙ্গীকার করেছেন। ন্যাটো (NATO) এটিকে হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে।

World Update: বেইজিংয়ে চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনের সাক্ষাৎ বিশ্বজুড়ে কূটনৈতিক মহলে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। দুই নেতা পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সার্বভৌমত্ব (sovereignty) রক্ষার জন্য একসাথে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। আমেরিকা ও ইউরোপ এই জোটকে গুরুত্ব সহকারে নিয়েছে, যেখানে ন্যাটো (NATO) এটিকে পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য একটি নতুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে অভিহিত করেছে।

বেইজিংয়ে অনুষ্ঠিত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক

এই সাক্ষাৎ চীনের রাজধানী বেইজিংয়ের গ্রেট হল অফ দ্য পিপল (Great Hall of the People) এ অনুষ্ঠিত হয়। এতে উভয় দেশের শীর্ষ কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। বিশেষ উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, এই বৈঠকটি সেই সামরিক কুচকাওয়াজের একদিন পর অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে কিম জং উন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন এবং অন্যান্য বিদেশী নেতাদের সাথে অংশ নিয়েছিলেন। এটি এশিয়াতে একটি নতুন কৌশলগত সহযোগিতা (strategic cooperation) উঁকি দিচ্ছে এমন ইঙ্গিত ছিল।

চীন-উত্তর কোরিয়া সম্পর্কের নতুন দৃঢ়তা

চীনা সরকারি মিডিয়া সিসিটিভি (CCTV) অনুসারে, শি জিনপিং বলেছেন যে আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি যেমনই হোক না কেন, চীন ও উত্তর কোরিয়ার বন্ধুত্ব অটুট থাকবে। তিনি আরও বলেন যে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার দিক এবং গতি কখনও পরিবর্তিত হবে না। অন্যদিকে, উত্তর কোরিয়ার কেসিএনএ (KCNA) সংস্থা জানিয়েছে যে দুই নেতা উচ্চ-পর্যায়ের সংলাপ, সফর এবং কৌশলগত অংশীদারিত্ব (strategic partnership) জোরদার করার বিষয়ে সম্মত হয়েছেন।

আমেরিকা ও ইউরোপে উদ্বেগ

আমেরিকা ও ইউরোপ এই বৈঠককে হালকাভাবে নিচ্ছে না। ন্যাটো (NATO) মহাসচিব মার্ক রুট এই জোটকে পশ্চিমা নিরাপত্তা কাঠামোর জন্য হুমকি হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। বিশ্লেষকদের মতে, চীন, উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার মধ্যে ঘনিষ্ঠতা আরও বাড়লে তা পশ্চিমা দেশগুলোর ক্ষমতার ভারসাম্যে (balance of power) সরাসরি চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।

পুতিন ও জিনপিংয়ের সাথে কিম জং উনের ঘনিষ্ঠতা

সম্প্রতি কিম জং উন রাশিয়া সফর করেন এবং পুতিনের সাথে সাক্ষাৎ করেন। এরপর তিনি বেইজিংয়ে পৌঁছে শি জিনপিংয়ের সাথে বৈঠকে বসেন। কিম চীনের সামরিক কুচকাওয়াজেও অংশ নিয়েছিলেন, যা এই বার্তা দিয়েছিল যে পিয়ংইয়াং, বেইজিং এবং মস্কোর মধ্যে সম্পর্ক দ্রুত জোরদার হচ্ছে। বৈঠকের পর কিম তার বিশেষ ট্রেনে উত্তর কোরিয়ায় ফিরে যান।

পশ্চিমা দেশগুলোর জন্য কৌশলগত চ্যালেঞ্জ

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ক্রমবর্ধমান ঘনিষ্ঠতা আমেরিকা ও ইউরোপের জন্য সবচেয়ে কঠিন সময় নিয়ে আসতে পারে। ইউক্রেন যুদ্ধ, দক্ষিণ চীন সাগর বিরোধ এবং কোরীয় উপদ্বীপে উত্তেজনা ইতিমধ্যেই চরমে রয়েছে। এখন চীন-উত্তর কোরিয়া এবং রাশিয়ার জোট পশ্চিমা দেশগুলোর যুদ্ধবিরতি (ceasefire) প্রচেষ্টাকে দুর্বল করে দিতে পারে।

Leave a comment