ভোটের আগে বিজেপি-ভীতিতে সিপিএম! নিচুতলায় ভাঙন রুখতে নতুন কৌশল

ভোটের আগে বিজেপি-ভীতিতে সিপিএম! নিচুতলায় ভাঙন রুখতে নতুন কৌশল

রাজনৈতিক বিশ্লেষণ: পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিতে ভোটের আগে সিপিএম এখন কার্যত রক্ষামূলক মুডে। নিচুতলার বহু কর্মী-সমর্থক বিজেপিমুখী হয়ে পড়ছেন—এমন আশঙ্কায় নড়েচড়ে বসেছে আলিমুদ্দিন স্ট্রিট। তাই ‘পাঠচক্র’ কর্মসূচির মাধ্যমে দলীয় কর্মীদের বোঝানো হচ্ছে, বিজেপির ধর্মভিত্তিক রাজনীতির ফাঁদে না পড়তে। ভোটের আগে বিজেপির ক্রমবর্ধমান প্রভাব ঠেকাতে এবং নিচুতলায় সংগঠন টিকিয়ে রাখতে এই উদ্যোগকে নজিরবিহীন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।

নিচুতলায় ভাঙনের আশঙ্কায় উদ্বেগে আলিমুদ্দিন

ভোটের আগে নিচুতলার কর্মীরা বিজেপির দিকে ঝুঁকছেন—এমন তথ্য উঠে এসেছে বিভিন্ন জেলা কমিটির রিপোর্টে। বহু জায়গায় দেখা যাচ্ছে, বাম ভোটাররা সরাসরি বিজেপিকে ভোট দিচ্ছেন, এমনকি কেউ কেউ গেরুয়া শিবিরে নামও লিখিয়েছেন। এই পরিস্থিতে সিপিএম নেতৃত্ব বুঝে গিয়েছে, কেবল ভোট নয়, এখন পার্টির অস্তিত্বও চ্যালেঞ্জের মুখে।

পাঠচক্রে সচেতনতার পাঠ

এই আশঙ্কা থেকেই দলীয় স্তরে শুরু হয়েছে ‘পাঠচক্র’ কর্মসূচি। যেখানে স্থানীয় স্তরের নেতারা কর্মীদের বোঝাচ্ছেন, বিজেপি ধর্মীয় বিভাজনের রাজনীতি করছে এবং তা প্রতিরোধ করাই এখন প্রধান লক্ষ্য। বামপন্থী আদর্শ থেকে বিচ্যুত না হতে এই পাঠচক্রে জোর দেওয়া হচ্ছে। কর্মীদের মনে করিয়ে দেওয়া হচ্ছে, হিন্দুত্ব নয়—মানবিকতার রাজনীতি হল আসল সংগ্রাম।

বিজেপির পালটা বার্তা: বামদের আহ্বান

অন্যদিকে বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী প্রকাশ্যে আহ্বান জানিয়েছেন বাম ভোটারদের—‘তৃণমূলকে হারাতে বিজেপিকে ভোট দিন’। তাঁদের মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে “বামেদের ভোটই তৃণমূলকে জিতিয়ে দিচ্ছে।” ফলে বিজেপি চাইছে বাম ঘর ভেঙে নিজেদের ঘরে আনতে।

নির্বাচনের আগে বাম রাজনীতির অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই

২০১৯ সালের লোকসভা ভোট থেকেই দেখা যাচ্ছে বামের ভোট ক্রমে সরছে বিজেপির দিকে। পরপর নির্বাচনে ফলাফলেও তার প্রমাণ মিলেছে। তাই ২০২৬ সালের বিধানসভা ভোটের আগে সিপিএমের প্রধান লক্ষ্য এখন কেবল বিজেপি-বিরোধিতা নয়, বরং নিজেদের ঘর রক্ষা। আলিমুদ্দিন থেকে জেলা পর্যন্ত এই কর্মসূচি ছড়িয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ভোটের আগে দলীয় ভাঙন নিয়ে উদ্বিগ্ন সিপিএম। নিচুতলার কর্মীরা বিজেপিমুখী হতে পারেন—এই আশঙ্কায় নয়া কর্মসূচি নিয়েছে আলিমুদ্দিন। পাঠচক্রের মাধ্যমে কর্মীদের সতর্ক করছে দল, যাতে গেরুয়া প্রচারে কেউ বিভ্রান্ত না হন।

Leave a comment