নেপালে Gen-Z আন্দোলনের পর নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধি সভার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। ভোটগ্রহণ হবে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ। অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী সুশীলা কার্কী সময়মতো ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠানের আশ্বাস দিয়েছেন।
কাঠমান্ডু। নেপালে সম্প্রতি Gen-Z আন্দোলনের পর পরিস্থিতি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। এই আন্দোলনের পর রাজনৈতিক সংকট গভীর হয়েছিল এবং তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলিকে তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল। এখন নেপালে নতুন রাজনৈতিক তৎপরতা শুরু হয়েছে এবং দেশের জনগণের জন্য বড় খবর হল যে নেপালের নির্বাচন কমিশন প্রতিনিধি সভার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করেছে। ভোটগ্রহণ হবে ২০২৬ সালের ৫ মার্চ। নির্বাচনের পর আবারও জনগণের দ্বারা নির্বাচিত সরকার দেশের কার্যভার গ্রহণ করবে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ভূমিকা
নেপালে Gen-Z আন্দোলনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠিত হয়েছিল। এই সরকারের নেতৃত্ব দিয়েছেন সুশীলা কার্কী। ৭৩ বছর বয়সী সুশীলা কার্কী ১২ সেপ্টেম্বর অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। তিনি তাঁর কার্যকালে স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন যে তাঁর সরকার সময়মতো সাধারণ নির্বাচন (general election) অনুষ্ঠান করবে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উদ্দেশ্য হল শান্তিপূর্ণ নির্বাচন নিশ্চিত করা এবং দেশে স্থিতিশীলতা (stability) আনা।
নির্বাচন কমিশনের ঘোষণা
নেপালের নির্বাচন কমিশন একটি বিবৃতি জারি করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার সময়সূচী (schedule) প্রকাশ করেছে। কমিশন জানিয়েছে যে, নিবন্ধন, ভোটগ্রহণ এবং গণনা সহ সমস্ত প্রক্রিয়া নির্ধারিত সময় অনুযায়ী হবে। রাজনৈতিক দলগুলিকে ১৬ থেকে ২৬ নভেম্বরের মধ্যে নির্বাচনের জন্য নিবন্ধন করতে হবে। যদি কোনো নতুন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশ নিতে চায়, তবে তাকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে নিবন্ধন করা বাধ্যতামূলক হবে।
নির্বাচন কমিশন এও স্পষ্ট করেছে যে, সমস্ত দল তাদের প্রার্থী তালিকা ২০২৬ সালের ২ ও ৩ জানুয়ারীর মধ্যে জমা দেবে। নির্বাচনী প্রচার (campaign) ১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ পর্যন্ত চলবে। এই সময়ে রাজনৈতিক দলগুলি জনগণকে তাদের ইশতেহার এবং উন্নয়ন পরিকল্পনা (development plans) সম্পর্কে অবহিত করবে।
ভোটগ্রহণের প্রক্রিয়া
নেপালে ভোটগ্রহণ ২০২৬ সালের ৫ মার্চ সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা পাঁচটা পর্যন্ত চলবে। সমস্ত ব্যালট বাক্স (ballot boxes) একই দিনে জমা করা হবে এবং ভোট গণনা (vote counting)ও একই দিনে সম্পন্ন করা হবে। নির্বাচন কমিশন জনগণের কাছে আবেদন করেছে যে, তারা শান্তিপূর্ণভাবে ভোটদান করুন এবং গণতন্ত্র (democracy) এর প্রতি তাদের দায়িত্ব পালন করুন।
কেপি শর্মা অলির পদত্যাগ
Gen-Z আন্দোলনের সময় দেশে রাজনৈতিক সংকট গভীর হয়েছিল। আন্দোলনটি তরুণ প্রজন্মের ক্ষোভ প্রকাশ করেছিল, যারা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ করেছিল। এর ফলস্বরূপ অলিকে পদত্যাগ করতে হয়েছিল এবং ক্ষমতা অন্তর্বর্তী সরকারের হাতে চলে গিয়েছিল। অলিয় পদত্যাগ করার পরই সুশীলা কার্কী অন্তর্বর্তী প্রধানমন্ত্রী হন এবং তিনি নিশ্চিত করেন যে সাধারণ নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হবে।
নির্বাচনের গুরুত্বপূর্ণ দিক
নেপালের নির্বাচন কমিশন এও জানিয়েছে যে, এই নির্বাচনে সমস্ত রাজনৈতিক দলকে ১৫ দিনের জন্য প্রচার অভিযান চালানোর অনুমতি দেওয়া হবে। নির্বাচনী প্রচারের সময় সমস্ত দল তাদের পরিকল্পনা এবং নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি (promises) এর মাধ্যমে জনগণকে ভোটদানের জন্য প্রস্তুত করবে। এই নির্বাচন নেপালের গণতন্ত্র এবং জনরায় (mandate) এর শক্তিশালীকরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।