দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা: বড় চ্যালেঞ্জ

দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা: বড় চ্যালেঞ্জ

সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুরদের আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। MCD-এর কাছে পর্যাপ্ত জায়গা ও সম্পদ নেই, যেখানে খরচ ও কর্মচারীর অভাব একটি গুরুতর সমস্যা।

Delhi: সুপ্রিম কোর্টের সাম্প্রতিক নির্দেশের পরে দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুরদের সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করা MCD এবং অন্যান্য নগর নিগমগুলির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। নির্দেশের অধীনে সমস্ত পথকুকুরকে ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে হবে, কিন্তু এর জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক আশ্রয়, তহবিল এবং কর্মচারীর ব্যবস্থা করা সবচেয়ে বড় কঠিন কাজ।

সীমিত আশ্রয় এবং সম্পদের সমস্যা

MCD-এর পশু চিকিৎসা পরিষেবা বিভাগের কাছে বর্তমানে কেবল ৬৪৮ জন কর্মচারী ও আধিকারিকের পদ অনুমোদিত রয়েছে। কুকুরদের ধরার জন্য ২৪টি ভ্যান রয়েছে এবং ২০টি নির্বীজকরণ কেন্দ্র বিদ্যমান, যেখানে এক সময়ে শুধু ৪,০০০ কুকুরকে রাখা যেতে পারে। এই কেন্দ্রগুলি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির সাহায্যে চলে এবং প্রতি মাসে প্রায় ১৫,০০০ পথকুকুরের নির্বীজকরণ করা হয়।

নয়ডাতে এখনও পর্যন্ত শুধু একটি আশ্রয়কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে তিনটি তৈরির প্রস্তাব আছে, কিন্তু জমি চিহ্নিত করা হয়নি। দিল্লিতে প্রায় ১০ লক্ষ পথকুকুর রয়েছে, নয়ডা এবং গ্রেটার নয়ডাতে প্রায় ৩৫ হাজার এবং গুরুগ্রামে নয় হাজারের বেশি পথকুকুরের অনুমান করা হয়েছে। ফরিদাবাদে তো একটিও আশ্রয়কেন্দ্র নেই।

জায়গা এবং নির্মাণের চ্যালেঞ্জ

দিল্লিতে দ্রুত বাড়তে থাকা আবাসিক এলাকাগুলির মধ্যে বসতি থেকে দূরে আশ্রয়কেন্দ্র তৈরির জন্য খালি জমি খুঁজে বের করা বড় চ্যালেঞ্জ। শহর এলাকায় উপলব্ধ জায়গা খুবই সীমিত। এর সাথে সাথে কর্মচারীর অভাবে ভুগতে থাকা বিভাগকে নতুন কর্মচারী নিয়োগও করতে হবে যাতে আশ্রয়কেন্দ্রের পরিচালনা সুষ্ঠুভাবে হতে পারে।

ভারী খরচের বোঝা

দিল্লিতে MCD-এর আর্থিক অবস্থা আগে থেকেই দুর্বল। আশ্রয়হীন গরুর রক্ষণাবেক্ষণে প্রতিদিন প্রায় ৪০ টাকা খরচ হয়। যদি একইভাবে কুকুরের জন্য খরচের হিসাব করা হয়, তাহলে আট লক্ষ কুকুরকে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখতে প্রতিদিন প্রায় ৩.২০ কোটি টাকা খরচ হবে। এমন পরিস্থিতিতে প্রতি মাসে প্রায় ৯০ কোটি টাকার অতিরিক্ত বোঝা MCD-এর উপর পড়বে। নয়ডা, গুরুগ্রাম, গাজিয়াবাদ এবং ফরিদাবাদেও কোটি কোটি টাকার খরচ আলাদা করে হবে।

৯ বছর ধরে কোনো সমীক্ষা হয়নি

দিল্লিতে পথকুকুরের সঠিক সংখ্যা জানার জন্য গত ৯ বছরে কোনো সমীক্ষা হয়নি। ২০১৬ সালে দক্ষিণ নিগমের চারটি অঞ্চলে হওয়া সমীক্ষায় ১.৮৯ লক্ষ কুকুর পাওয়া গিয়েছিল। এরপর থেকে কোনো ডেটা আপডেট করা হয়নি।
ফরিদাবাদ, পালওয়াল এবং গুরুগ্রামেও একই পরিস্থিতি, যেখানে অনুমানের ভিত্তিতেই সংখ্যা নির্ধারণ করা হচ্ছে।

আগে এবং এখনকার নিয়মের মধ্যে পার্থক্য

আগে যা ছিল

  • পথকুকুরকে তুলে নির্বীজকরণের ১০ দিনের মধ্যে সেই এলাকাতেই ছেড়ে দিতে হতো।
  • একটি ওয়ার্ডে সর্বাধিক ৭০% নির্বীজকরণের অনুমতি ছিল।
  • কেবলমাত্র বিপজ্জনক বা রেবিস যুক্ত কুকুরকে অভিযোগের পরে তোলা হতো।

এখন যা হবে

  • সমস্ত পথকুকুরকে ধরে আশ্রয়কেন্দ্রে রাখা হবে।
  • নির্বীজকরণের পরে তাদের সেই এলাকায় ছেড়ে দেওয়ার প্রয়োজন হবে না।
  • যেকোনো এলাকায় কুকুর দেখলে অভিযোগ পাওয়ার ৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা নিতে হবে।

Leave a comment