দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুর: মৃতের সংখ্যা জানালো সরকার, আশ্রয়স্থলের অভাব নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি

দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুর: মৃতের সংখ্যা জানালো সরকার, আশ্রয়স্থলের অভাব নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি

দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে শুনানি। সরকার মৃতের সংখ্যা জানাল, কপিল সিব্বল আশ্রয়স্থলের অভাবের কথা বললেন, আদালত আধিকারিকদের দায়িত্ব নেওয়ার নির্দেশ দিল।

SC on Stray Dogs: দিল্লি-এনসিআর-এ পথকুকুরের ক্রমবর্ধমান সংখ্যা এবং এর সাথে জড়িত ঘটনাগুলি নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে বৃহস্পতিবার একটি গুরুত্বপূর্ণ শুনানি হয়েছে। বিষয়টি কুকুরদের আশ্রয়স্থল এবং রাস্তায় থাকা কুকুরের কারণে মানুষের নিরাপত্তা সম্পর্কিত ছিল। এই সময় কেন্দ্র সরকারের পক্ষ থেকে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা কড়া মন্তব্য করেন এবং এই সমস্যার দ্রুত সমাধানের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন।

সলিসিটর জেনারেল তাঁর বক্তব্য পেশ করেন

সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন যে কেউ পশুদের ঘৃণা করে না, তবে এটা মানতে হবে যে পথকুকুরের সমস্যা গুরুতর হয়ে উঠেছে। তিনি বলেন, এটা শুধু পশু অধিকারের বিষয় নয়, সাধারণ মানুষের জীবন ও নিরাপত্তার বিষয়ও বটে।

“মাটন-চিকেন খাওয়া লোকেরাও পশুপ্রেমী” এই মন্তব্য

শুনানির সময় তুষার মেহতা বলেন যে সমাজে একটি "মুখর সংখ্যালঘু" এবং একটি "নীরব সংখ্যাগরিষ্ঠ" রয়েছে। মুখর সংখ্যালঘু হল সেই সব লোক, যারা সোশ্যাল মিডিয়ায় নিজেদের পশুপ্রেমী বলে দাবি করে, কিন্তু তারাই আবার মাটন-চিকেন খাওয়ার ভিডিও পোস্ট করে। তিনি যুক্তি দেন যে এটি একটি দ্বিচারিতা এবং এর কারণে আসল সমস্যার ওপর মনোযোগ দেওয়া যায় না।

উদ্বেগজনক পরিসংখ্যান পেশ করা হল

সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে দেশে প্রতি বছর প্রায় ৩৭ লক্ষ মানুষ কুকুরের কামড়ের শিকার হন। এর মানে হল প্রতিদিন প্রায় ১০,০০০ মানুষ আক্রান্ত হচ্ছেন। রেবিজের কারণে প্রতি বছর প্রায় ৩০৫ জনের মৃত্যু হয়, যেখানে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)-এর পরিসংখ্যান এই সংখ্যাকে আরও বেশি বলে জানায়। এই পরিসংখ্যান প্রমাণ করে যে এটি শুধু পশু অধিকারের বিষয় নয়, এটি একটি গুরুতর জনস্বাস্থ্য সমস্যা।

সুপ্রিম কোর্টের ১১ আগস্টের আদেশ

উল্লেখযোগ্য যে ১১ আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে দিল্লি-এনসিআর থেকে আট সপ্তাহের মধ্যে সমস্ত পথকুকুরকে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল। আদালত বলেছিল যে এই কুকুরগুলিকে আশ্রয়স্থলে রাখতে হবে এবং পুনরায় রাস্তায় ছেড়ে দেওয়া যাবে না। পাশাপাশি, আধিকারিকদের পর্যাপ্ত আশ্রয়স্থল (shelter homes) তৈরি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

কপিল সিব্বল আশ্রয়স্থলের অভাবের কথা তোলেন

একটি এনজিও-র পক্ষ থেকে আইনজীবী কপিল সিব্বল আদালতকে জানান যে দিল্লি-এনসিআর-এ এত কুকুরের জন্য পর্যাপ্ত আশ্রয়স্থল নেই। তিনি বলেন যে বর্তমান আশ্রয়স্থলগুলিতে সব কুকুরকে রাখা সম্ভব নয়। তাই, তিনি সুপ্রিম কোর্টকে এই আদেশের ওপর সাময়িক স্থগিতাদেশ জারী করার আবেদন জানান, যাতে এই বিষয়ে আরও বিবেচনা করা যায়।

আদালতের কড়া মন্তব্য

বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সন্দীপ মেহতা এবং বিচারপতি এনভি আঞ্জারিয়ার বেঞ্চ স্থানীয় আধিকারিকদের কার্যপদ্ধতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। বিচারপতি নাথ বলেন যে স্থানীয় প্রশাসন তাদের দায়িত্ব পুরোপুরি পালন করছে না। আদালত এও বলেন যে যারা এই মামলায় হস্তক্ষেপ করতে আসছেন, তাদেরও নিজেদের দায়িত্ব বোঝা উচিত এবং সমাধানে অবদান রাখা উচিত।

Leave a comment