স্বামীর তরোয়াল হামলায় স্ত্রীর মৃত্যু: রাজস্থানে শোকের ছায়া

স্বামীর তরোয়াল হামলায় স্ত্রীর মৃত্যু: রাজস্থানে শোকের ছায়া

হারসানি গ্রামে এক স্বামী তরোয়াল দিয়ে স্ত্রীর হত্যা করেছে। রাতে ঘটনাটি ঘটিয়ে সে যোধপুরের দিকে পালাচ্ছিল, কিন্তু পুলিশ শিবের কাছ থেকে তাকে ধরে ফেলে। হত্যার কারণ এখনো জানা যায়নি।

অপরাধ সংবাদ: রাজস্থানের বারমের জেলার হারসানি গ্রামে বৃহস্পতিবার রাতে একটি হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটে, যা পুরো এলাকাকে নাড়িয়ে দিয়েছে। এক স্বামী তার স্ত্রীকে তরোয়াল দিয়ে গলা কেটে নৃশংসভাবে হত্যা করে এবং তারপর ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের তৎপরতায় সে বেশি দূর পালাতে পারেনি এবং শিবের কাছে যোধপুরগামী বাস থেকে তাকে নামিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।

মধ্যরাতে ঘুমন্ত অবস্থায় হামলা

তথ্য অনুযায়ী, ৩৭ বছর বয়সী মইম খান, যিনি পেশায় একজন বিল্ডিং কারিগর, বৃহস্পতিবার রাতে তার স্ত্রী রহমু (বয়স ৩৪ বছর)-এর সাথে নিজের ঘরের মধ্যে ছিলেন। রাত প্রায় ৩টার দিকে যখন পুরো পরিবার গভীর ঘুমে মগ্ন ছিল, তখনই মইম একটি তরোয়াল দিয়ে তার স্ত্রীর ঘাড়ে মারাত্মক আঘাত করে। এই হামলা এত ভয়ানক ছিল যে রহমু ঘটনাস্থলেই মারা যান।

তিন সন্তান উঠোনে ঘুমোচ্ছিল

ঘটনার সময় মইমের বাবা-মা বাড়ির বাইরে খাটিয়ায় ঘুমোচ্ছিলেন এবং তিন সন্তান উঠোনে। ঘরের ভেতর ঘটা এই ভয়ংকর ঘটনার আঁচ কেউ পায়নি। সকাল ৭টার দিকে পরিবারের সদস্যরা ঘুম থেকে উঠে ঘরের দিকে গেলে দেখে রহমুর শরীর রক্তে ভেসে যাচ্ছে। এই দৃশ্য দেখে তারা চিৎকার করে ওঠে।

গ্রামে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে

পরিবারের সদস্যদের উচ্চস্বরে চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ঘাবড়ে যায় এবং দ্রুত বাড়ির দিকে ছুটে আসে। তারা যখন ঘরের মধ্যে রহমুকে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পায়, তখন সবার होश উড়ে যায়। কেউ বিশ্বাস করতে পারছিল না যে গ্রামে এত বড় ঘটনা ঘটেছে। কিছুক্ষণের মধ্যেই এই খবর পুরো গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে এবং সর্বত্র শোকের ছায়া নেমে আসে। সবাই ভীত ছিল এবং বুঝতে পারছিল না যে একজন স্বামী কীভাবে তার স্ত্রীর সাথে এত নিষ্ঠুরতা করতে পারে।

হত্যার কারণ এখনো রহস্য

বর্তমানে, মইম খান কেন তার স্ত্রী রহমুকে হত্যা করেছে, তা স্পষ্ট নয়। পুলিশ তাকে ক্রমাগত জিজ্ঞাসাবাদ করছে, কিন্তু সে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট কারণ জানায়নি। পুলিশ রহমুর বাপের বাড়ির লোককেও খবর দিয়ে ঘটনাস্থলে ডেকে পাঠিয়েছে, যাতে তাদের সাথে কথা বলে ঘটনার গভীরতা সম্পর্কে তদন্ত করা যায় এবং হত্যার আসল কারণ জানা যায়।

পুলিশ মইমকে ধরেছে

ঘটনার খবর পাওয়া মাত্রই গিরাব থানা পুলিশ এবং রামসর সিও মানারাম গর্গ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছান। রহমুর মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়। তদন্তের সময় পুলিশ জানতে পারে যে অভিযুক্ত মইম খান ঘটনার পর পালিয়ে গেছে এবং যোধপুরের দিকে যাওয়ার চেষ্টা করছে। পুলিশ দ্রুত জাল পাতে এবং শিবের কাছে একটি বাস থামিয়ে মইমকে আটক করে।

গৃহবিবাদ কি কারণ ছিল?

স্থানীয়দের মতে, মইম এবং রহমুর মধ্যে আগেও অনেকবার ঝগড়া হয়েছে। তাদের সম্পর্কের মধ্যে উত্তেজনা ছিল, কিন্তু কেউ ভাবেনি যে পরিস্থিতি এতদূর গড়াবে যে মইম তার স্ত্রীর জীবন কেড়ে নেবে। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তেও ধারণা করা হচ্ছে যে এই হত্যার কারণ গৃহবিবাদ, তবে সম্পূর্ণ তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না।

তিন সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকারে

এই বেদনাদায়ক ঘটনা শুধুমাত্র একজন মহিলার জীবন নেয়নি, বরং তিনজন নিষ্পাপ শিশুকে এতিম করেছে। গ্রামের মানুষের মধ্যে গভীর উদ্বেগ রয়েছে যে এখন সেই শিশুদের কী হবে, যাদের মাথা থেকে মায়ের ছায়া সরে গেছে এবং বাবা জেলে গিয়েছেন।

Leave a comment