বৃহস্পতিবার সায়েন্স সিটিতে বিজেপির নবনিযুক্ত রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্যের অভিষেক ও অভিনন্দন সভায় দলের সব শীর্ষস্থানীয় নেতা উপস্থিত থাকলেও চোখে পড়ল না প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের মুখ। সূত্র বলছে, দলীয় কেন্দ্রীয় নেতৃত্বই নাকি রাজ্যকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছিলেন—দিলীপকে আমন্ত্রণ নয়। যার ফলে রাজনীতির অন্দরমহলে তীব্র কৌতূহল ও জল্পনার জন্ম নিয়েছে।
বিজেপি থেকে দূরত্ব দিন দিন স্পষ্ট—তৃণমূলে কি ঢুকছেন দিলীপ?
গত কয়েক মাসে বিজেপির সর্বভারতীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য স্তরের শীর্ষ নেতৃত্ব থেকে ক্রমেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছেন দিলীপ ঘোষ। বহু কর্মসূচিতে অনুপস্থিত থাকার পাশাপাশি দলীয় সিদ্ধান্তে তিনি আর গুরুত্ব পাচ্ছেন না বলেই মনে করছেন অনেকে। এই প্রেক্ষিতে দলবদলের জল্পনা ছড়িয়েছে রাজনৈতিক মহলে—তবে কি এবার তৃণমূলেই পা রাখতে চলেছেন দিলীপ?
নিউটাউনের সকালে প্রাতঃভ্রমণ আর সাংবাদিকদের মুখোমুখি—দিলীপের ভবিষ্যৎ কী?
শুক্রবার সকালবেলা নিউটাউনের ইকোপার্কে নিয়মমাফিক হাঁটতে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন দিলীপ ঘোষ। দল ছাড়ার সম্ভাবনা নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপ বলেন, "আমার ভবিষ্যৎ পার্টি ঠিক করবে, আমি নিজে কিছু চাইনি।" তাঁর এই ধোঁয়াশাপূর্ণ বক্তব্য ঘিরে ফের একবার উঠেছে রাজনৈতিক চমকের সম্ভাবনা।
ডাক না পেলে যাই না—তৃণমূল প্রসঙ্গে কৌশলী দিলীপ ঘোষ
তৃণমূলে যোগদানের জল্পনার উত্তরে সরাসরি কিছু না বলেই কার্যত সম্ভাবনার দরজা খোলা রাখলেন দিলীপ ঘোষ। বললেন, আমি নিজে কিছু চাই না, পার্টি যা দিয়েছে তাতেই চলেছি। ভগবানের খাতায় যা লেখা আছে, সেটাই হবে। আর এ কথাতেই রাজনীতির ময়দানে বাড়ছে উত্তেজনার পারদ।
দিলীপ ঘোষ মার্কেটে আছে!’—কল্পনার ডেডলাইন দিলেন ২১ জুলাই পর্যন্ত
নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে কৌতুক করে বললেন, “কল্পনা করতে তো পয়সা লাগে না! অনেকে করছে। ২১ তারিখ পর্যন্ত কল্পনার ডেট দেওয়া হয়েছে।” কৌশলী হাসিতে দিলীপ ঘোষ যেন ইঙ্গিত দিয়ে গেলেন—এই বাজারে তিনি এখনও ‘হট প্রোপার্টি’!
জগন্নাথ মন্দিরে তৃণমূলের আতিথ্যে দিলীপ, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ
দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধনে প্রথম সারির তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে একমঞ্চে দেখা যায় দিলীপ ঘোষকে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলাপচারিতা করেন তিনি। এতেই জল্পনা তুঙ্গে—তবে কি তৃণমূলের সঙ্গে সম্পর্ক নরম হয়েছে?
বন্ধুত্ব আর শত্রুতা একদিনে বদলায় না—রাজনীতির ঊর্ধ্বে ব্যক্তিগত সম্পর্ক: দিলীপ
কুণাল ঘোষ, অরূপ রায়ের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার বিষয়ে প্রশ্ন উঠতেই দিলীপ স্পষ্ট জানান, “কাল শত্রু, আজ বন্ধু—আমি এসব বিশ্বাস করি না। সম্পর্কের একটা মানে থাকে। আমি সেই মূল্য দিই।” বিরোধীদের উদ্দেশে যেন এক কড়া বার্তা ছুঁড়ে দিলেন দিলীপ।
সরকারি প্রকল্পে গেলাম, করদাতার টাকায় তৈরি মন্দির—স্বাভাবিকীকরণ করলেন দিলীপ ঘোষ
শেষে জগন্নাথ মন্দিরে উপস্থিতি নিয়ে কটাক্ষের জবাবে দিলীপ বললেন, “আমি কোনও দলের প্রতিনিধি হিসেবে যাইনি। আমি একজন সম্মানীয় নাগরিক। এই মন্দির আমার করদাতার টাকায় তৈরি, এটা কারও ব্যক্তিগত সম্পত্তি নয়।” এক ঢিলে বহু পাখি মারার মতো এই বক্তব্যেও ধরা পড়ল তাঁর কৌশলী রাজনীতির ছাপ।