কর্মচারী ভবিষ্য নিধি (ইপিএফ) অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত একটি বড় খবর সামনে আসছে। আপনি যদি বেতনভোগী কর্মচারী হন এবং আপনার পিএফ অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে এই খবরটি আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে। কেন্দ্র সরকার পিএফ থেকে টাকা তোলার বর্তমান নিয়মে বড় পরিবর্তনের কথা বিবেচনা করছে। এতদিন পিএফের পুরো টাকা তোলার জন্য অবসর বা চাকরি ছাড়ার শর্ত ছিল, কিন্তু প্রস্তাবিত নিয়ম অনুযায়ী এখন কর্মীরা প্রতি ১০ বছরে তাদের জমার একটি অংশ তুলতে পারবেন।
১০ বছরে একবার জমানো টাকা তুলতে পারবেন
সূত্রের খবর, সরকার এই বিষয়টি বিবেচনা করছে যে কর্মীদের প্রতি ১০ বছরের ব্যবধানে তাদের পিএফ রাশির কিছু অংশ তোলার অনুমতি দেওয়া হবে। এই প্রকল্পের উদ্দেশ্য হল কর্মীদের জরুরি অবস্থা বা বড় প্রয়োজনের সময় তাদের ফান্ড ব্যবহার করার স্বাধীনতা দেওয়া। আলোচনা চলছে যে পুরো টাকার অনুমতি না দিয়ে, সরকার শুধুমাত্র ৬০ শতাংশ টাকা তোলার সীমা নির্ধারণ করতে পারে। অর্থাৎ, যদি কোনও সদস্য ৩০ বছর বয়সী হন, তবে তিনি প্রথমবার সেই বয়সে টাকা তুলতে পারবেন এবং পরের বার ৪০ বছর বয়সে।
বর্তমান নিয়ম কী বলছে?

বর্তমানে ইপিএফ থেকে পুরো টাকা তোলার জন্য অবসর (৫৮ বছর বয়স) বা চাকরি ছাড়ার পর ২ মাস পর্যন্ত বেকার থাকার পরিস্থিতিতে অনুমতি পাওয়া যায়। वहीं কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে আংশিক টাকা তোলার সুবিধা আগে থেকেই রয়েছে, যেমন বাড়ি কেনা, বিয়ে, গুরুতর অসুস্থতা বা উচ্চ শিক্ষার জন্য। কিন্তু পুরো টাকা ব্যবহার করা এখনও পর্যন্ত সম্ভব নয় যতক্ষণ না কর্মচারী কর্মজীবন থেকে অবসর নেন।
আবাসনের জন্য টাকা তোলার নিয়মেও পরিবর্তন
ইপিএফও সম্প্রতি কিছু নিয়মে ছাড় দিয়েছে। এখন যে কোনও সদস্য বাড়ি তৈরি বা জমি কেনার জন্য তার পিএফ ফান্ডের ৯০ শতাংশ পর্যন্ত তুলতে পারবেন। আগে এই সুবিধা শুধুমাত্র সেই সদস্যদের জন্য ছিল যারা একটানা ৫ বছর ধরে ফান্ডে অবদান রেখেছেন। তবে এখন এই সময় কমিয়ে ৩ বছর করা হয়েছে। এর মানে হল, কোনও কর্মচারী যদি ৩ বছর ধরে পিএফে অবদান রাখেন, তাহলে তিনি আবাসনের প্রয়োজনে বড় অঙ্কের টাকা তুলতে পারবেন।
জরুরি প্রয়োজনের জন্য টাকা তোলার সীমাও বাড়ানো হয়েছে
ইপিএফও সদস্যদের সুবিধার জন্য অগ্রিম দাবির সর্বোচ্চ সীমাও বাড়িয়েছে। আগে এই সীমা ছিল ১ লক্ষ টাকা, যা এখন বাড়িয়ে ৫ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। বিশেষ বিষয় হল, এই সীমা পর্যন্ত টাকার জন্য অবসরকালীন তহবিল থেকে আলাদা করে কোনও অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। অর্থাৎ, কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে সদস্য দ্রুত বেশি পরিমাণ টাকা পেতে পারবেন।
কীভাবে বদলাচ্ছে PF-এর সংজ্ঞা
ইপিএফ পরিকল্পনাকে এখন শুধু অবসরের পরের সুরক্ষা নয়, বরং মাঝে মাঝে জীবনের প্রয়োজন মেটানোর উপায় হিসেবেও বিবেচনা করা হচ্ছে। সরকারের এই প্রচেষ্টা এটাই দেখায় যে এখন ভবিষ্যৎ নিধি অ্যাকাউন্টকে আরও নমনীয় করা হচ্ছে, যাতে কর্মীরা তাদের অর্থের উপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ অনুভব করেন। এই পরিবর্তন সেই চিন্তাভাবনাকে প্রতিফলিত করে যেখানে কর্মীরা তাদের অর্জিত অর্থ শুধুমাত্র বার্ধক্যে নয়, প্রয়োজনে বর্তমানেও ব্যবহার করতে পারেন।
EPF-এর মূল কাঠামো

ইপিএফ পরিকল্পনায় কর্মচারী ও নিয়োগকর্তা উভয়েই বেতনের একটি নির্দিষ্ট শতাংশ জমা করেন। এই টাকার উপর সুদও পাওয়া যায় এবং এটি এক প্রকার অবসরের পরের আয়ের উৎস। তবে, সময়ে সময়ে এতে আংশিক টাকা তোলার সুবিধা যুক্ত হয়েছে, কিন্তু পুরো টাকা তোলা এখনও পর্যন্ত চাকরি ছাড়া বা অবসরের পরেই সম্ভব ছিল। সরকার এখন এই ব্যবস্থাকে আরও নমনীয় ও কর্মচারী-কেন্দ্রিক করার দিকে পদক্ষেপ নিচ্ছে।
কবে থেকে এই প্রস্তাবগুলি কার্যকর হতে পারে?
যদিও সরকার এখনও পর্যন্ত এই পরিবর্তনগুলি নিয়ে কোনও আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞপ্তি জারি করেনি, তবে মানি কন্ট্রোলের প্রতিবেদন অনুসারে নীতি নির্ধারণের স্তরে এটি নিয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা চলছে। যদি এই প্রস্তাব পাস হয়, তাহলে আগামী কয়েক মাসের মধ্যে ইপিএফ থেকে টাকা তোলার এই নতুন সুবিধা কার্যকর হতে পারে।
EPFO সম্পর্কিত সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলি কী কী?
- বাড়ি কেনার জন্য এখন ৯০ শতাংশ পর্যন্ত টাকা তোলার অনুমতি।
- এর জন্য অবদান রাখার সময়সীমা ৫ বছর থেকে কমিয়ে ৩ বছর করা হয়েছে।
- জরুরি অবস্থার জন্য অগ্রিমের সীমা বেড়ে ৫ লক্ষ টাকা হয়েছে।
- টাকা তোলার জন্য অতিরিক্ত অনুমোদনের প্রয়োজন নেই।
- PF থেকে টাকা তোলার নিয়মে পরিবর্তনের কারণ
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিবর্তন কর্মীদের পরিবর্তিত জীবনযাত্রা এবং আর্থিক চাহিদার সাথে সঙ্গতি রেখে করা হচ্ছে। এখন মানুষ আগের তুলনায় অনেক বেশি সচেতন এবং তাদের সঞ্চয় বিভিন্ন সময়ে ব্যবহার করার মানসিকতা রাখেন। এমন পরিস্থিতিতে পিএফ অ্যাকাউন্ট সম্পর্কিত বিধিনিষেধ কিছুটা শিথিল করার পদক্ষেপ সময়ের দাবি হয়ে দাঁড়িয়েছে।