সীমাঞ্চলের মাখনা এখন কেবল ভারতেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং বিদেশেও নিজের দৃঢ় পরিচিতি গড়ে তুলেছে। এরই মধ্যে, মাখনা উৎপাদনকারী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে নতুন আশা জেগেছে, কারণ দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ কাটিহার আসছেন।
কাটিহার: বিহারের কাটিহার জেলার মাটি তার সুস্বাদু এবং পুষ্টিগুণে ভরপুর মাখনার জন্য কেবল ভারতেই নয়, বরং বিশ্বজুড়ে বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। সীমাঞ্চল অঞ্চলের মাখনা এখন আন্তর্জাতিক বাজারেও নিজের শক্তিশালী পরিচিতি অর্জন করেছে। এমন পরিস্থিতিতে, দেশের অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের কাটিহার সফর মাখনা শিল্পকে নতুন দিশা দেখাবে বলে আশা করা হচ্ছে।
তিনি চন্দ্রা চক স্থিত শিল্পপতি পীয়ূষ ডোকানিয়ার মাখনা কেন্দ্র পরিদর্শন করবেন এবং স্থানীয় কৃষক, ব্যবসায়ী ও উৎপাদকদের সাথে সরাসরি আলোচনা করে শিল্পকে শক্তিশালী করার উপায় নিয়ে আলোচনা করবেন।
কাটিহারের মাখনা শিল্প: পরিচিতি, বিস্তার ও সম্ভাবনা
কাটিহার এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চল মাখনা উৎপাদনের জন্য সারা দেশে পরিচিত। এখানকার মাখনার গুণমান ও স্বাদ এটিকে দেশীয় বাজার ছাড়িয়ে আন্তর্জাতিক রপ্তানিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান এনে দিয়েছে। আমেরিকা, ইউরোপ, উপসাগরীয় দেশ সহ বিভিন্ন বিদেশী বাজারে বিহারের মাখনা পৌঁছেছে। এর সুফল কেবল কৃষকদের আয় বৃদ্ধি হিসাবেই দেখা যায়নি, বরং সীমাঞ্চল অঞ্চলের অর্থনীতিও নতুন বল পেয়েছে।
স্থানীয় কৃষকদের মতে, মাখনা চাষ তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করেছে। তবে এখনও অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যেমন উৎপাদিত পণ্য বিদেশে পাঠানোর জটিল প্রক্রিয়া, উচ্চ পরিবহন ব্যয় এবং স্টোরেজের অভাব। এমন পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণের সফর এই সমস্যাগুলির সমাধানের দিকে একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ বলে মনে করা হচ্ছে।
শিল্পপতি পীয়ূষ ডোকানিয়া জানিয়েছেন
মাখনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত শিল্পপতি পীয়ূষ ডোকানিয়া জানিয়েছেন যে সীমাঞ্চল অঞ্চলে কন্টেইনার ডিপোর অত্যন্ত প্রয়োজন। বর্তমানে উৎপাদিত পণ্য প্রথমে দিল্লিতে পাঠানো হয় এবং সেখান থেকে বিদেশে রপ্তানি করা হয়। এই প্রক্রিয়ায় অতিরিক্ত পরিবহন খরচ এবং সময় নষ্ট হয়, যার ফলে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়ই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
যদি কাটিহার বা তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে কন্টেইনার ডিপোর সুবিধা প্রদান করা হয়, তবে কেবল খরচই কমবে না, রপ্তানি প্রক্রিয়াও সহজ হবে। এছাড়াও, মাখনার জন্য কম খরচে স্টোরেজ সুবিধা প্রদান করা হলে তা শিল্পটির জন্য গেম-চেঞ্জার প্রমাণিত হতে পারে। বিপুল পরিমাণ মাখনা নিরাপদে সংরক্ষণ করে বিদেশী বাজারের চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ নিশ্চিত করা যাবে। এতে কৃষকদের আয় বৃদ্ধি পাবে এবং রপ্তানিকারকরাও লাভবান হবেন।
কাটিহার এবং তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে মাখনা শিল্পের সাথে হাজার হাজার কৃষক, শ্রমিক এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জীবিকা জড়িত। চাষ থেকে শুরু করে প্রক্রিয়াকরণ, প্যাকেজিং, বিপণন এবং রপ্তানি পর্যন্ত, প্রতিটি পর্যায়ে স্থানীয় লোকেরা কর্মসংস্থান পায়। এমন পরিস্থিতিতে শিল্পকে উৎসাহিত করলে কেবল কৃষকদের আয় বাড়বে না, বরং পুরো অঞ্চলের অর্থনৈতিক কার্যকলাপে গতি আসবে।