বিহার নির্বাচন: প্রথম দফায় ৫৭ আসনে জেডিইউ-এর চ্যালেঞ্জ ও কৌশল

বিহার নির্বাচন: প্রথম দফায় ৫৭ আসনে জেডিইউ-এর চ্যালেঞ্জ ও কৌশল

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় 57টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। জেডিইউ তাদের 23টি গুরুত্বপূর্ণ আসন ধরে রাখতে এবং 34টি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনে জয়লাভের চেষ্টা করছে। নতুন প্রার্থীরা এবং প্রচার অভিযান তীব্র গতিতে চলছে।

বিহার নির্বাচন: বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় মোট 57টি আসনে ভোটগ্রহণ হবে। এই আসনগুলিতে জেডিইউ (JD(U)) প্রার্থীরা নিজেদের দখল বজায় রাখার চেষ্টা করবেন। এর মধ্যে 23টি এমন আসন রয়েছে, যেখানে 2020 সালের নির্বাচনে জেডিইউ জয়লাভ করেছিল। জেডিইউ-এর লক্ষ্য হল এই গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলি পুনরায় জয় করা এবং তাদের অবস্থানকে শক্তিশালী করা। দলটিকে আলম নগর, বিহারীগঞ্জ এবং সোনবরসার মতো আসনগুলিতে বিশেষ নজর দিতে হবে।

জেডিইউ-এর চ্যালেঞ্জ এবং লক্ষ্য

জেডিইউ-এর জন্য চ্যালেঞ্জ শুধু এই 23টি আসনে জয়লাভ করা নয়, বরং বাকি 34টি আসনেও তাদের কড়া প্রতিদ্বন্দ্বিতার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। এই আসনগুলির মধ্যে অনেকগুলি এমন রয়েছে, যেখানে গতবার জেডিইউ দ্বিতীয় স্থানে ছিল। দল নতুন প্রার্থী বাছাইয়ের পাশাপাশি পুরনো নেতাদেরও আবার ময়দানে নামিয়েছে। এর উদ্দেশ্য হল ভোটারদের সন্তুষ্ট করা এবং আগের জয়কে পুনরাবৃত্তি করা।

গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলির কৌশল

জেডিইউ-এর জন্য আলম নগর আসনটিকে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। এই আসনে নরেন্দ্র নারায়ণ যাদব ধারাবাহিকভাবে জয়লাভ করে আসছেন এবং তাকে আবার প্রার্থী হিসেবে দাঁড় করানো হয়েছে। বিহারীগঞ্জেও বর্তমান বিধায়ককে পুনরায় প্রার্থী করা হয়েছে। সোনবরসা আসনে রত্নেশ সদা বহুবার সাফল্য পেয়েছেন এবং তিনি মন্ত্রীর মর্যাদাও পেয়েছেন।

এছাড়াও মহিষী, কুশেশ্বরস্থান, বাহাদুরপুর, সাকরা, কুচায়কোট, ভোরে, বৈশালী, কল্যাণপুর, ওয়ারিসনগর, সারায়রঞ্জন, বেলদৌর, বারবিঘা, আস্থাওয়াঁ, রাজগীর, হিলসা, নালন্দা এবং হরনৌত-এর মতো আসনগুলিতেও জেডিইউ-এর পুনরায় জয়লাভের লক্ষ্য রয়েছে।

প্রার্থীদের পরিবর্তন

কিছু আসনে জেডিইউ তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে। উদাহরণস্বরূপ, বেগুসরাইয়ের মতিহানি বিধানসভা কেন্দ্রে গতবার এলজেপি-র টিকিটে জেতা প্রার্থী এখন জেডিইউ-তে যোগ দিয়েছেন। জেডিইউ এবার মতিহানিকে পুনরায় জয়ের চ্যালেঞ্জে অন্তর্ভুক্ত করছে।

এছাড়াও মন্ত্রী বিজয় চৌধুরী, মদন সাহনী এবং সুনীল কুমারের আসনগুলিও চ্যালেঞ্জিং। বারৌলি এবং রঘুনাথপুরের মতো আসনগুলিতে প্রথমবারের মতো জেডিইউ-এর প্রার্থীরা নির্বাচনী ময়দানে নেমেছেন। নতুন প্রার্থীদের জন্য এই নির্বাচন তাদের রাজনৈতিক জীবনের এক বড় পরীক্ষা।

গতবার দ্বিতীয় স্থানে থাকা আসনগুলি

প্রথম দফায় মোট 29টি এমন আসন রয়েছে, যেখানে 2020 সালের নির্বাচনে জেডিইউ দ্বিতীয় স্থানে ছিল। এই আসনগুলির মধ্যে রয়েছে সিংহেশ্বর, মাধেপুরা, দ্বারভাঙ্গা গ্রামীণ, গায়ঘাট, মীনাপুর, কাঁটি, হাতুয়া, জিরাদেঈ, মহারাজগঞ্জ, একমা, পারসা, রাজাপাকার, মহনার, সমষ্টিপুর, মোরওয়া, বিভূতিপুর, হাসানপুর, চেরিয়া বারিয়ারপুর, আলোলি, খাগাড়িয়া, জামালপুর, সূর্যগড়া, শেখপুরা, ইসলামপুর, মোকামা, ফুলওয়ারাসরিফ, মসৌঢ়ি, সন্দেশ, ডুমরাওঁ এবং রাজপুর।

এই আসনগুলিতেও জেডিইউ তাদের প্রার্থী পরিবর্তন করেছে বা নতুন প্রার্থী দিয়েছে। কিছু নতুন প্রার্থী এমন আছেন, যারা অন্য দল থেকে এসেছেন এবং এবার জেডিইউ-এর টিকিটে ময়দানে নেমেছেন। এর ফলে এই আসনগুলিতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও কঠিন হয়ে উঠেছে।

ভোটারদের কৌশল 

জেডিইউ এই 57টি আসনে একটি শক্তিশালী সাংগঠনিক কৌশল তৈরি করেছে। দল বুথ স্তরে তাদের দলগুলিকে সক্রিয় করেছে এবং ভোটারদের কাছে তাদের পরিকল্পনা ও সাফল্যের তথ্য পৌঁছে দিচ্ছে। দলের উদ্দেশ্য শুধু জয়লাভ করা নয়, বরং ভোটারদের আস্থা ধরে রাখা।

এছাড়াও জেডিইউ-এর কৌশলে গুরুত্বপূর্ণ আসনগুলিতে প্রচার অভিযান জোরদার করা, স্থানীয় সমস্যাগুলি তুলে ধরা এবং তরুণ ভোটারদের যুক্ত করা অন্তর্ভুক্ত। দলের নেতারা ব্যক্তিগত স্তরে ভোটারদের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়িয়েছেন যাতে ভোটদানে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়।

প্রথম দফার প্রত্যাশা

প্রথম দফার 57টি আসনের নির্বাচনী ফলাফল বিহারের রাজনীতির গতিপথ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। জেডিইউ যদি এই আসনগুলিতে ভালো দখল বজায় রাখতে পারে, তবে সরকার গঠনের পথ সহজ হবে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলিও এই আসনগুলিতে তাদের অবস্থান শক্তিশালী করার চেষ্টা করছে।

এই দফায় অনেক নতুন চ্যালেঞ্জ রয়েছে। নতুন প্রার্থীদের পরিচিতি, পুরনো নেতাদের প্রভাব, জাতিগত সমীকরণ এবং স্থানীয় বিষয়গুলির প্রভাব এই নির্বাচনগুলিতে নির্ণায়ক হবে। জেডিইউ-কে এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে তাদের কৌশলকে সফল করতে হবে।

Leave a comment