গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস IPO: লোকসানে তালিকাভুক্ত, হতাশ বিনিয়োগকারীরা

গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস IPO: লোকসানে তালিকাভুক্ত, হতাশ বিনিয়োগকারীরা

গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস-এর IPO ২৯ সেপ্টেম্বর শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয় এবং বিনিয়োগকারীদের জন্য হতাশাজনক প্রমাণিত হয়। BSE-তে ৮.৩৮ শতাংশ এবং NSE-তে ৮ শতাংশ লোকসানে শেয়ারটি তালিকাভুক্ত হয়। কোম্পানির IPO ২.৬৮ গুণ সাবস্ক্রাইব হয়েছিল, যদিও অর্থবছর ২০২৫-এ আয় এবং মুনাফা বেড়েছিল।

Ganesh Consumer Products IPO Listing: FMCG কোম্পানি গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস লিমিটেডের ৪০৮.৮০ কোটি টাকার IPO ২৯ সেপ্টেম্বর শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয়। BSE-তে শেয়ারটি ৮.৩৮ শতাংশ এবং NSE-তে ৮ শতাংশ লোকসানে তালিকাভুক্ত হয়। IPO-এর জন্য প্রাইস ব্যান্ড ৩০৬-৩২২ টাকা প্রতি শেয়ার ছিল এবং এটি ২.৬৮ গুণ সাবস্ক্রাইব করা হয়েছিল। কোম্পানির অর্থবছর ২০২৫-এ আয় ১২ শতাংশ বেড়ে ৮৫৫.১৬ কোটি টাকা এবং নিট মুনাফা ৩১ শতাংশ বেড়ে ৩৫.৪৩ কোটি টাকা হয়েছে। IPO থেকে সংগৃহীত তহবিল ঋণ পরিশোধ এবং উৎপাদন ইউনিটের সম্প্রসারণের জন্য ব্যবহার করা হবে।

IPO তালিকাভুক্তি বিনিয়োগকারীদের হতাশ করেছে

গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস-এর IPO ২৯ সেপ্টেম্বর শেয়ার বাজারে তালিকাভুক্ত হয়, তবে বিনিয়োগকারীরা হতাশ হন। BSE-তে শেয়ারটি ২৯৫ টাকা এবং NSE-তে ২৯৬.০৫ টাকায় তালিকাভুক্ত হয়, যা প্রাইস ব্যান্ড থেকে অনেকটাই নিচে। কোম্পানি IPO চলাকালীন মোট ৪০৮.৮০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য রেখেছিল। এর জন্য নতুন এবং অফার ফর সেল উভয় ধরনের শেয়ারই জারি করা হয়েছিল।

তালিকাভুক্তির সময় শেয়ারের দরপতন বিনিয়োগকারীদের প্রত্যাশায় ধাক্কা দিয়েছে। বিনিয়োগকারীরা কোম্পানির শক্তিশালী আর্থিক অবস্থা সত্ত্বেও শেয়ারের প্রাথমিক কর্মক্ষমতাকে দুর্বল পেয়েছেন। বাজারে এই ঘটনা বিনিয়োগকারীদের জন্য সতর্কতার সংকেত হয়ে উঠেছে।

IPO সাবস্ক্রিপশন এবং অংশীদারিত্বের বিবরণ

IPO চলাকালীন মোট সাবস্ক্রিপশন ২.৬৮ গুণ ছিল। কোয়ালিফাইড ইনস্টিটিউশনাল বায়ার্স (QIB) এর জন্য সংরক্ষিত অংশ ৪ গুণ সাবস্ক্রাইব হয়। নন-ইনস্টিটিউশনাল ইনভেস্টরস (NII) এর জন্য সংরক্ষিত অংশ ৪.৪১ গুণ এবং রিটেল ইনভেস্টরস-এর জন্য ১.১৭ গুণ সাবস্ক্রাইব হয়। কর্মীদের জন্য সংরক্ষিত অংশ ২.১৪ গুণ সাবস্ক্রাইব হয়। এইভাবে, IPO-এর প্রতি বিনিয়োগকারীদের প্রাথমিক আগ্রহ দৃঢ় ছিল, তবে তালিকাভুক্তির সময় শেয়ারের দরপতনে তাদের প্রত্যাশা ম্লান হয়ে যায়।

এটি ইঙ্গিত করে যে বাজারে শেয়ারের শুরু সবসময় বিনিয়োগকারীদের অনুভূতির উপর নির্ভর করে। IPO-এর সাবস্ক্রিপশন ভালো ছিল, কিন্তু প্রাথমিক ট্রেডিং বিনিয়োগকারীদের ইতিবাচক অনুভূতিকে প্রভাবিত করেছে।

কোম্পানির পরিচিতি

গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস-এর সদর দফতর পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা-য় অবস্থিত। এটি পূর্ব ভারতে আটা, ময়দা, সুজি এবং ডালিয়ার একটি প্রধান ব্র্যান্ড হিসাবে পরিচিত। কোম্পানির পণ্যগুলির মধ্যে রয়েছে বেসন, ইনস্ট্যান্ট ফুড মিক্স, শিঙাড়ার আটা, বাজরার আটা, মশলা এবং ঐতিহ্যবাহী স্ন্যাকস। কোম্পানি FMCG সেক্টরে একটি বিশেষ পরিচিতি রাখে।

প্রোমোটারদের মধ্যে পুরুষোত্তম দাস মিমানি, মণীশ মিমানি, মধু মিমানি এবং শ্রীভারু এগ্রো প্রাইভেট লিমিটেড অন্তর্ভুক্ত। কোম্পানি IPO-এর আগে অ্যাঙ্কর বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ১২২.৩৪ কোটি টাকা সংগ্রহ করেছে। এই বিনিয়োগ কোম্পানির বৃদ্ধি এবং সম্প্রসারণের দিকে সহায়ক হবে।

IPO-এর উদ্দেশ্য এবং তহবিলের ব্যবহার

IPO-তে মোট ১৩০ কোটি টাকার ৪০ লক্ষ নতুন শেয়ার জারি করা হয়। এর পাশাপাশি ২৭৮.৮০ কোটি টাকার ৮৭ লক্ষ শেয়ারের অফার ফর সেল ছিল। IPO থেকে সংগৃহীত তহবিল প্রধানত ঋণ পরিশোধ, দার্জিলিংয়ে একটি নতুন উৎপাদন ইউনিট স্থাপন এবং সাধারণ কর্পোরেট উদ্দেশ্যগুলির জন্য ব্যবহার করা হবে।

এই বিনিয়োগ কৌশলটি কোম্পানির আর্থিক স্বাস্থ্য শক্তিশালী করতে এবং উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ানোর উদ্দেশ্যে করা হয়েছে। এর ফলে ভবিষ্যতে কোম্পানির বৃদ্ধির সম্ভাবনা বাড়বে এবং পণ্যের বাজারও বিস্তৃত হবে।

আর্থিক অবস্থা

অর্থবছর ২০২৫-এ গণেশ কনজিউমার প্রোডাক্টস-এর আয় ১২ শতাংশ বেড়ে ৮৫৫.১৬ কোটি টাকা হয়েছে। নিট মুনাফা ৩১ শতাংশ বেড়ে ৩৫.৪৩ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। এক বছর আগে এই মুনাফা ছিল ২৬.৯৯ কোটি টাকা। অর্থবছর ২০২৫-এ কোম্পানির ৫০ কোটি টাকার ঋণ ছিল।

এই বৃদ্ধি কোম্পানির স্থিতিশীল আর্থিক কর্মক্ষমতা এবং বাজারে শক্তিশালী অবস্থানকে তুলে ধরে। বিনিয়োগকারীদের জন্য এটি একটি ইঙ্গিত যে কোম্পানির ব্যবসায় দীর্ঘমেয়াদে বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।

Leave a comment