গত দুই বছরের সোনার বাজার যেন ইতিহাস গড়েছে! একদিকে লাগাতার ঊর্ধ্বগতি, অন্যদিকে সাম্প্রতিক সময়ের দামের ঢাল দেখা দিচ্ছে বিনিয়োগকারীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। এবার বড় প্রশ্ন— সামনে আরও ধস, না সাময়িক মুনাফা তোলার খেলা? বাজারে ঘোরাফেরা করছে অস্থিরতা আর জল্পনা।
যুদ্ধ, মন্দা আর বৈশ্বিক অস্থিরতার ছায়ায় সোনার মূল্যবৃদ্ধির গল্প!
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের আগুন, আমেরিকার অর্থনৈতিক সংকট, মধ্যপ্রাচ্যের বারুদের গন্ধ— এই সবকিছুর পটভূমিতে সোনার বাজারে লেগেছে আগুন। নিরাপদ বিনিয়োগের আশায় বিনিয়োগকারীদের ঝোঁক বেড়েছে সোনার দিকে। কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর আগ্রাসী সোনা কেনা তো বাজারের উত্তাপ আরও বাড়িয়েছে।
আচমকা থামল সোনার দৌড়! বাজারে শ্বাসরুদ্ধকর অপেক্ষা, বিনিয়োগকারীরা কী করবেন এখন?
গত এপ্রিলে যখন সোনার দাম এক লাফে ছাড়িয়েছিল ১ লক্ষের সীমা, তখন বাজারে আনন্দের জোয়ার। কিন্তু ইজরায়েল-ইরান সংঘর্ষের অবসান আর মার্কিন বাজারে ইতিবাচক বার্তার জেরে সেই দাম এখন নেমে এসেছে ৯৬ হাজারে। বাজারজুড়ে শুরু হয়েছে লাভ তোলার পালা। বিনিয়োগকারীরা দ্বিধায়— এখানেই থামবেন, না আরও অপেক্ষা করবেন?
পতনের এই ঢেউ সাময়িক না স্থায়ী? বাজার বিশেষজ্ঞদের মতে সামনে নতুন রেকর্ডের ইঙ্গিত!
বিশ্বের বড় বড় কেন্দ্রীয় ব্যাংক এখনও কিনছে টনকে টন সোনা। ওয়ার্ল্ড গোল্ড কাউন্সিলের সাম্প্রতিক তথ্য বলছে, আগামী এক বছরে ৪৩ শতাংশের বেশি কেন্দ্রীয় ব্যাংক আরও সোনা কেনার পরিকল্পনায়। তাই এই পতনকে সাময়িক বলে মনে করছেন বাজারের প্রবীণ বিশেষজ্ঞরা। বরং তারা বলছেন— সামনের দিনগুলোয় আবারও রেকর্ড ছুঁতে পারে সোনার বাজার।
লগ্নিকারীদের জন্য ‘গোল্ডেন অ্যাডভাইস’: এখনই কিনবেন, না আরও ধৈর্য ধরবেন?
সোনার দামে সাম্প্রতিক পতন অনেকের কাছেই বড় বিনিয়োগের সুযোগ। কিন্তু বিশেষজ্ঞরা সাবধান করছেন— অতিরিক্ত লোভে না পড়াই শ্রেয়। পোর্টফোলিওর ৫-১০ শতাংশের বেশি সোনায় বিনিয়োগ না করার পরামর্শ। সঙ্গে থাকছে দীর্ঘমেয়াদি লাভের স্বপ্ন।
অনিশ্চয়তা যত বাড়বে, সোনার ঝলক ততই বাড়বে! বাজারের মন্দা-পিছুটানেও অটুট ‘গোল্ডেন গ্লোরি’
ভূ-রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ঝড়, যুদ্ধের দামামা— সবকিছুর মধ্যেও বিশ্ববাজারে সোনা রয়ে গিয়েছে আস্থার প্রতীক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন— সাময়িক দরপতন হলেও সোনার দীর্ঘমেয়াদি ভবিষ্যৎ ঝলমলে। বুঝেশুনে ধাপে ধাপে বিনিয়োগই এখন সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।