আম আদমি পার্টি হরিয়ানার ল্যান্ড পুলিং নীতি নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছে। আপের বক্তব্য, ই-ভূমি পোর্টালের মাধ্যমে কৃষক এবং তাঁদের জমি শোষণ করা হচ্ছে, এবং এই নীতি দালাল ও বিল্ডার লবিদের জন্য অবাধ লুঠপাটের রাস্তা খুলে দিয়েছে।
Haryana: আম আদমি পার্টি হরিয়ানায় চালু ল্যান্ড পুলিং নীতি নিয়ে বিজেপি সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে এই নীতি কৃষকদের জমি ও জীবিকার ক্ষতি করছে। আপ বলেছে যে ই-ভূমি পোর্টালের মাধ্যমে যে প্রকল্প চলছে, তা দালাল এবং বিল্ডার লবিদের জন্য লাভজনক প্রমাণিত হচ্ছে। পার্টির নেতারা এই প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন এবং কৃষকদের অধিকার সুরক্ষিত করার দাবি জানিয়েছেন।
ই-ভূমি পোর্টালে প্রশ্ন, কৃষকরা কি ক্ষতিপূরণ পাবেন?
আপ অভিযোগ করেছে যে ই-ভূমি পোর্টালের মাধ্যমে যে কাগজে-কলমে উন্নয়নের পরিকল্পনা চলছে, তা কৃষকদের জন্য নয়, বরং দালাল ও বিল্ডারদের জন্য লাভজনক। পার্টি বলেছে যে সরকার ১০ একরের কম জমির মালিক ৯০ শতাংশ কৃষককে এই প্রকল্পের বাইরে রেখেছে। এর কারণে ছোট ও মাঝারি কৃষকরা তাঁদের জমি হারানোর পাশাপাশি উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ পেতেও অক্ষম হচ্ছেন।
আপের বক্তব্য, কৃষকদের শুধুমাত্র সার্কেল রেটে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হচ্ছে, যেখানে বাজারের দর তার থেকে তিন থেকে চার গুণ বেশি। তাঁরা আরও অভিযোগ করেছেন যে ক্ষতিপূরণের নামে সরকার মিথ্যা বলছে এবং জমির প্রকৃত মালিকদের ঠকানোর কাজ করছে।
কৃষকদের কণ্ঠরোধের উপর প্রশ্ন
আপ মুখ্যমন্ত্রী নায়ব সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছে যে তিনি পুরো রাজ্যকে কর্পোরেট প্রোজেক্টে পরিবর্তন করতে তাড়াহুড়ো করছেন। পার্টি বলেছে যে মুখ্যমন্ত্রীর না আছে গ্রাম বাঁচানোর চিন্তা, না আছে কৃষকদের ডাক শোনার ফুরসত। কৃষকদের নীরবতা বাধ্যতার কারণে, যেখানে বিজেপির এই লুঠপাট এবং জমির দখল বেশি দিন টিকবে না।
আপ কংগ্রেসের নিষ্ক্রিয়তা নিয়েও সমালোচনা করেছে। পার্টি বলেছে যে রাজ্যে বিরোধী দলের নাম পর্যন্ত দেখা যায় না এবং বিরোধী দলনেতা এক বছর ধরে নির্ধারিত হয়নি। এর কারণে বিজেপি অবাধে কৃষকদের জমিতে তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার সুযোগ পেয়ে গেছে, যেখানে কংগ্রেস চোখ বুজে তামাশা দেখছে।
নেতাদের জমি আগে থেকেই সুরক্ষিত
আপ দাবি করেছে যে যে এলাকাগুলিতে ই-ভূমি পোর্টালের মাধ্যমে ল্যান্ড পুলিং নীতি প্রয়োগ করা হচ্ছে, সেখানে আগে থেকেই অনেক বিজেপি মন্ত্রী ও বড় নেতারা প্রচুর পরিমাণে জমি কিনে রেখেছেন। পার্টি প্রশ্ন তুলেছে যে এটা কি শুধুই কাকতালীয়, নাকি ক্ষমতার অপব্যবহার?
আপের বক্তব্য, যখন কৃষকরা বাধ্য হয়ে তাঁদের জমি বিক্রি করতে বাধ্য হবেন, তখন সবার আগে সেই নেতারা লাভবান হবেন যাঁরা নীতি লাগু হওয়ার আগেই জমি কিনে নিয়েছিলেন। এটা শুধু নীতি নয়, বরং ক্ষমতা ও সম্পত্তি ব্যবহারের একটি মডেল, যেখানে কৃষকদের পরিশ্রম এবং তাঁদের জমি নিয়ে কারবার করা হচ্ছে।
কৃষকদের সিদ্ধান্তের উপর বিজেপিকে জবাব দিতে হবে
আপ কৃষকদের কাছে আবেদন করেছে যে তাঁরা স্থির করুন তাঁরা ক্ষমতা ও দালালদের সঙ্গে আছেন, নাকি তাঁদের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো শক্তিগুলোর সঙ্গে। পার্টির জাতীয় মিডিয়া प्रभारी অনুরাগ ढांडा বলেছেন যে এটা শুধু রাজনৈতিক বিষয় নয়, বরং প্রতিটি কৃষক ও শ্রমিকের জীবন ও অস্তিত্বের প্রশ্ন।
আপ বিজেপি সরকারের কাছে জানতে চেয়েছে যে ২০১৪ সাল থেকে এখনও পর্যন্ত কত জমি কৃষকদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে, কত জমি কোন কোন কর্পোরেটকে বিক্রি করা হয়েছে, এবং কতজন বিজেপি নেতা এই পরিকল্পনা কার্যকর হওয়ার আগেই ওই এলাকাগুলোতে জমি কিনেছেন? পার্টি স্পষ্ট করেছে যে এই জমি শুধুমাত্র একটি টুকরো নয়, এটা হরিয়ানার কৃষকদের আত্মা। আর এই আত্মাকে কোনও সরকার, কোনও মুখ্যমন্ত্রী বা কোনও ক্ষমতার কাঠামো দালালদের হাতে তুলে দিতে পারে না।